(বাঁ দিকে) মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। —ফাইল চিত্র
গত বছর আইপিএলের ছোট নিলামে (মিনি অকশন) কেকেআর গুজরাত টাইটান্সকে টেক্কা দিয়ে রেকর্ড ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় মিচেল স্টার্ককে কিনে নিয়েছিল। অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন, টাকা কি সস্তা হয়ে গেল? আবার কেউ বলেছিলেন, আইপিএল যে ভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, তাতে এটাই তো স্বাভাবিক। উচিত না অনুচিত, সেই তর্ক চলতে থাকবে। কিন্তু যেটা ঘটতে চলেছে, স্টার্কদের পকেটে এ বার থেকে আর এত সহজে ঢুকবে না ২০-২৫ কোটি টাকা। কারণ, আইপিএল নিলামের নিয়মে বদল আনছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
নিলামে নতুন যে নিয়ম আসতে চলেছে, তাতে বিশেষ কোনও ক্রিকেটারের জন্য লাগামছাড়া টাকা খরচ হচ্ছে, এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া হয়তো সম্ভব নয়। আইপিএলের বড় নিলামে (মেগা অকশন) কোনও ক্রিকেটারের জন্য যে দর উঠবে, পরের দু’বছর ছোট নিলামে সেই ক্রিকেটার তার থেকে বেশি টাকা পাবেন না। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বিসিসিআই এই বছরের বড় নিলাম থেকেই এই নতুন নিয়ম চালু করবে।
প্যাট কামিন্সের উদাহরণ দিলে বিষয়টি বোঝা যাবে। ২০২১ সালের বড় নিলামে কামিন্সকে ৭ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় নিয়েছিল কেকেআর। গত বছর ছোট নিলামে কামিন্সের দর উঠেছিল ২০ কোটি ৫০ লক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বজয়ী অধিনায়ককে কিনেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। অর্থাৎ প্রায় তিন গুণ বেশি টাকায় কামিন্সকে নেওয়া হয়েছিল। এ বার থেকে এই নিয়মে বদল আসছে। বড় নিলামে কোনও ক্রিকেটারের যে দর উঠবে, পরের ছোট নিলামে তার থেকে বেশি টাকা তিনি পাবেন না। অর্থাৎ, এই নিয়ম গত বছর থাকলে কামিন্স ৭ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বেশি পেতেন না। তা হলে কি নিলামে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির মধ্যে টাকার লড়াই আর দেখতে পাওয়া যাবে না? বোর্ডের একটি সূত্র আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন, ‘‘নিলামে দর বেশি উঠতেই পারে। ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির মধ্যে টাকার লড়াই চলতেই পারে। কিন্তু ক্রিকেটারের পকেটে একটা নির্দিষ্ট টাকার বেশি যাবে না। দর কষাকষিতে যে বাড়তি টাকাটা উঠবে, সেটা কী ভাবে কোথায় যাবে,তা নিয়ে আলোচনা চলছে।’’
নতুন নিয়মে ক্রিকেটারদের পকেটে হয়তো টান পড়বে, কিন্তু নিলামে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি বেশি টাকা খরচ করতে পারবে। এত দিন ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি সর্বোচ্চ (স্যালারি ক্যাপ) ১০০ কোটি টাকা খরচ করতে পারত। সব ঠিক থাকলে এই অঙ্কটা বাড়িয়ে ১২০ কোটি টাকা করা হবে।
এই দু’টি নিয়ম মোটামুটি চূড়ান্ত হয়ে গেলেও ‘রিটেনশন’ নিয়মের ক্ষেত্রে বোর্ড এখনও কিছু ঠিক করে উঠতে পারেনি। রিটেনশন, অর্থাৎ বড় নিলামের আগে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি কত জন ক্রিকেটারকে ধরে রাখতে পারবে, সেটা চূড়ান্ত হবে হয়তো এই মাসের শেষে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলছে, আগের মতোই চার জন ক্রিকেটারকে রেখে দেওয়ার নিয়ম থাকুক। বেশির ভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি চাইছে, এই সংখ্যাটা বাড়িয়ে ছয় বা সাত করা হোক। কেউ কেউ আট জনকে রেখে দেওয়ার পক্ষে। আবার এমন ফ্র্যাঞ্চাইজ়িও আছে, যারা চাইছে, গোটা রিটেনশন পদ্ধতিটাই তুলে দেওয়া হোক। তারা চাইছে, বড় নিলামে সব দল শূন্য থেকে শুরু করুক।
জানা গেল, বোর্ড এই ব্যাপারে দয়িত্ব দিয়েছে সিইও হেমাঙ্গ আমিনকে। তিনি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। কিন্তু রজার বিন্নী, জয় শাহেরা এই ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মের ক্ষেত্রেও ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি দ্বিমত। কোনও কোনও দল চাইছে এই নিয়ম তুলে দেওয়া হোক। কেউ এই নিয়ম রেখে দেওয়ার পক্ষে। তবে এই নিয়ম থাকবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা থাকবে সম্প্রচারকারী সংস্থার। জানা যাচ্ছে, তারা এই নিয়ম রাখার পক্ষে। ফলে বোর্ডও এই নিয়ম এখনই তুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে না।
এই মাসের শেষে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি মালিকদের সঙ্গে বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা। তার পরেই জয় শাহেরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy