Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Rishabh Pant Out Controversy

পন্থ কি আউট ছিলেন? আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুললেও সাবধানি রোহিত, কী বলছে নিয়ম

মুম্বইয়ে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে কি ঋষভ পন্থ সত্যিই আউট হয়েছিলেন? আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

cricket

(বাঁ দিকে) ঋষভ পন্থের আউট হওয়ার সেই মুহূর্ত যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রোহিত শর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৯
Share: Save:

একাই খেলছিলেন ঋষভ পন্থ। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ের যে উইকেটে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা দাঁড়াতে পারেননি, সেখানে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছিলেন ভারতের বাঁহাতি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। দেখে মনে হচ্ছিল, দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়বেন তিনি। ৬৪ রানের মাথায় বিতর্কিত আউট হন পন্থ। বল তাঁর ব্যাটে লেগেছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নেন যে পন্থ আউট। সেই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি পন্থ। তিনি কি সত্যিই আউট ছিলেন? সেই বিতর্কে মুখ খুলেছেন ভারত অধিনায়ক রোহিতও।

কী ঘটেছিল?

ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের ২২তম ওভারে অজাজ পটেলের একটি বল ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেন পন্থ। বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে অনেকটা ঘোরে। পন্থের ব্যাট এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর প্যাডে ব্যাট আটকে যায়। ঠিক সেই সময়ই বল ব্যাটের কাছ ঘেঁষে প্যাডে লেগে হাওয়ায় ওঠে। টম ব্লান্ডেল ক্যাচ ধরেন। নিউ জ়িল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা আউটের আবেদন করেন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ আউট দেননি। তখন নিউ জ়িল্যান্ড রিভিউ নেয়।

রিভিউ কী দেখায়?

রিভিউতে দেখা যায়, বল যখন ব্যাটের পাশ দিয়ে গিয়েছে ঠিক তখনই পন্থের ব্যাট প্যাডে লেগেছে। আল্ট্রাএজে দাগ দেখা যায়। সাধারণত শব্দের উপর নির্ভর করে এই দাগ হয়। সেটা থেকেই তৃতীয় আম্পায়ার বুঝতে পারেন বল ব্যাটে লেগেছে কি না।

তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত

তৃতীয় আম্পায়ার পল রাইফেল বেশ কয়েক বার রিভিউ দেখেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “ব্যাট যখন প্যাডে লেগেছে তখনই বলও ব্যাটের পাশে।” কিন্তু বল ও ব্যাটের মাঝে কোনও ফাঁক খালি চোখে বোঝা যাচ্ছিল না। সেই কারণে আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নেন যে বল ব্যাট ছুঁয়ে গিয়েছে। মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে আউটের সিদ্ধান্ত দেন তিনি।

পন্থের বিরক্তি

নিউ জ়িল্যান্ড যখন আউটের আবেদন করেছিল তখন পন্থকে দেখে মনে হচ্ছিল যে বল ব্যাটে লাগেনি। হাসিমুখে অপর প্রান্তে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। রিভিউ দেখানোর সময় জায়ান্ট স্ক্রিনের দিকে আঙুল দেখিয়ে তিনি আম্পায়ারকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে ব্যাট তাঁর প্যাডে লেগেছে। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার যখন তাঁকে আউট দেন তখন সেই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি তিনি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল পন্থ বিরক্ত। সাজঘরে ফেরার পরেও বিরক্তি যায়নি তাঁর। কোচ গৌতম গম্ভীর ও অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতেও দেখা যায় তাঁকে।

রোহিতের পর্যবেক্ষণ

রোহিতও বিশ্বাস করতে পারেননি যে পন্থ আউট। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি তিনি। রোহিত বলেন, “আমি জানি না এই বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে কি না। তবে আমাদের এটাই শেখানো হয়েছে যে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলের জন্য উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলে সেই সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। পন্থের উইকেট আমাদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। ও ভাল খেলছিল। দেখে মনে হচ্ছিল জিতিয়ে দেবে। এই ধরনের ম্যাচে একটা সিদ্ধান্ত সব বদলে দেয়।”

একই সুর গাওস্কর, ডি’ভিলিয়ার্সের

আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুনীল গাওস্কর ও এবি ডিভিলিয়ার্স। যখন পন্থ আউট হন তখন ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন গাওস্কর। তিনি বলেন, “আমি জানি ওরা এখন আর হটস্পট (এই প্রযুক্তিতে স্পষ্ট ধরা পড়ে যে বল ব্যাটে লেগেছে কি না) ব্যবহার করে না। তা হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হত।” ডিভিলিয়ার্স বলেন, “পন্থের ব্যাটে কি বল লেগেছিল? সমস্যাটা হল ঠিক যে সময়ে বল ব্যাটের পাশ দিয়ে গিয়েছে সেই সময়ই ওর ব্যাট প্যাডে লেগেছিল। কিন্তু কী ভাবে এটা স্পষ্ট হল যে বল ব্যাটেই লেগেছে। এই ধরনের ম্যাচে এটা একটা বিশাল বড় মুহূর্ত। হটস্পট কোথায়?”

কী বলছে ক্রিকেটের নিয়ম?

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলে সেই সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। তা বদল করা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিষয়টা ৫০-৫০। সে ক্ষেত্রেও মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। সেই কারণেই রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও ‘আম্পায়ার্স কল’ রয়েছে। তৃতীয় আম্পায়ার যদি মনে করেন মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদল করার মতো উপযুক্ত প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে তখন তিনি সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন।

অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে খালি চোখে ধরা না পড়লেও তৃতীয় আম্পায়ার রাইফেল ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ছিলেন যে, বল পন্থের ব্যাটে লেগেছিল। তাই সিদ্ধান্ত বদলেছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE