বুমরার সঙ্গে উচ্ছ্বাস বিরাটদের। ছবি পিটিআই
প্রথম দিনে ১৬ উইকেট। দ্বিতীয় দিনে ১৪ উইকেট। দু’দিন মিলিয়ে পতন হল ৩০ উইকেটের। বেঙ্গালুরুতে দিনরাতের টেস্টে উইকেট পড়া অব্যাহত। তবে প্রথম দিনের তুলনায় পিচ রবিবার অনেকটাই ভাল আচরণ করেছে। সেই সুবিধা ভাল ভাবে কাজে লাগালেন ভারতের ব্যাটাররা। দেখে মনে হল, দুর্বল শ্রীলঙ্কাকে পেয়ে ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নিল ভারতীয় দল। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ভারতের জিততে চাই আর ৯ উইকেট। শ্রীলঙ্কার দরকার ৪১৯ রান, যা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।
বেঙ্গালুরুর এই পিচ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু এই পিচ যে ব্যাট করার অযোগ্য, এটা অন্তত দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে বলা যাবে না। ম্যাচ তিন দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যেতেই পারে। কিন্তু তার জন্য কিউরেটরদের সম্পূর্ণ ভাবে দোষ দেওয়ার উপায় নেই। এই পিচে যে ব্যাট করা যায় সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন ঋষভ পন্থ এবং শ্রেয়স আয়ার। প্রথম জন দ্বিতীয় ইনিংসে আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলে অর্ধশতরান করেছেন। দ্বিতীয় জন দু’ইনিংসেই অর্ধশতরান করলেন। টেস্টের ছয় নম্বরে নিজেকে কার্যত পাকা করে ফেললেন মুম্বইকর।
৮৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে খেলা শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। রবিবার ছুটির দিনে বেঙ্গালুরু গ্যালারিতে হাজির হাজার বিশেক সমর্থক আগে থেকেই বাজি ধরতে শুরু করেছিলেন, কতক্ষণে শেষ হবে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না তাঁদের। দ্বিতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস মাত্র ৫.৫ ওভার গড়াল। তারা কোনও মতে একশোর গন্ডি পেরল নিরোশন ডিকওয়েলার সৌজন্যে। ১০৯ রানেই ইনিংস শেষ। ভারত এগিয়ে থাকল ১৪৩ রানে। যশপ্রীত বুমরা দেশের মাটিতে প্রথম বার পাঁচ উইকেট নিলেন। সব মিলিয়ে আট বার হল।
রোহিত শর্মা এবং ময়ঙ্ক অগ্রবাল চাপমুক্ত অবস্থায় ব্যাট করতে নেমেছিলেন। খেলছিলেনও সে ভাবেই। কিন্তু ময়ঙ্কের ব্যাট থেকে এ বারও বড় ইনিংস এল না। লাসিথ এমবুলডেনিয়ার বল এতটা ঘুরবে তিনি ভাবতে পারেননি। ক্যাচ গেল প্রথম স্লিপে ধনঞ্জয়ের হাতে। রোহিত অর্ধশতরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু চার রান দূরে থামতে হল তাঁকেও। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ গেল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের কাছে।
এর পরেই এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ব্যাট করতে নামলেন কোহলী। শুধু বেঙ্গালুরু কেন, গোটা দেশই চাইছিল তিনি ৭১তম আন্তর্জাতিক শতরান পান। চার মেরে শুরুটাও ভাল করেছিলেন কোহলী। কিন্তু যে ভুলটা প্রথম ইনিংসে করেছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে সেটাই করে বসলেন। স্পিনারের বিরুদ্ধে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে তাঁকে মানা করেছিলেন সুনীল গাওস্কর। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে জয়বিক্রমের বল সেই ব্যাকফুটেই খেলতে গেলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। বাউন্স এবং বলের লাইন বুঝতে পারেননি। বল সোজা পায়ে লাগল। কোহলী নিজেও আউট নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন। তাই ডিআরএসের আবেদনও করলেন না।
প্রথম ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও ঋষভ পন্থকে শুরু থেকে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটতে দেখা গেল। পিচে যে কোনও জুজু নেই, এটাই সম্ভবত দেখানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। সাতটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে ৩১ বলে ৫০ করেও ফেললেন। তার পরেই ফিরে গেলেন। এর পরেই শ্রেয়সের জাদু শুরু। প্রথম ইনিংসে আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেললেও দ্বিতীয় ইনিংসে অনেক বেশি সংযত তিনি। এমন পিচ, যেখানে বাকি ব্যাটাররা সমস্যায় পড়ছেন, সেখানে অনায়াস ভঙ্গিতে ব্যাট করে গেলেন শ্রেয়স। অর্ধশতরানও করে ফেললেন প্রথম ইনিংসের মতোই।
কিন্তু ৬৫ রানে ফিরতে হল তাঁকে। কিন্তু শ্রেয়স ফিরতেও ইনিংস ডিক্লেয়ার করলেন না রোহিত। মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় দিনের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে চান তাঁরা। কিন্তু নবম উইকেট পড়তে ব্যাটারদের সাজঘরে ফেরার নির্দেশ দিলেন। ততক্ষণে ৪৪৬ রানের লিড হয়ে গিয়েছে ভারতের।
যশপ্রীত বুমরার তৃতীয় বলেই ফিরলেন লাহিরু থিরিমান্নে। দিনের শেষে ১ উইকেটে ২৮ রান শ্রীলঙ্কার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy