নাম না করে রোহিত শর্মাকেই কি তিরটা ছুড়লেন হার্দিক পাণ্ড্য? শনিবার টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পরে মুম্বই ইন্ডিয়ানস অধিনায়কের কথা শুনে সেটা মনে হতেই পারে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হতাশ হার্দিক বলেন, ‘‘আমরা ফিল্ডিং করার সম পেশাদারিত্ব দেখাতে পারিনি। যে জন্য ২০-২৫ রান দিতে হয়েছে। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যা অনেক।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘সবে দুটো ম্যাচ হয়েছে ঠিকই কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আশা করি সেটা দ্রুত দেখাতে পারবে আমাদের ব্যাটসম্যানেরা।’’
বর্তমান অধিনায়ক যখন ব্যাটিং-ফিল্ডিংকে দুষছেন হারের জন্য তখন প্রাক্তন অধিনায়ক দলের পুরনো গৌরব ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। ম্যাচের আগে রোহিত বলেছেন, মুম্বই ইন্ডিয়ানসের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনাই এই মুহূর্তে তাঁর লক্ষ্য। আর এই ব্যাপারে তাঁর মনোভাবেও কোনও পরিবর্তন হয়নি।
মুম্বই ইন্ডিয়ানস টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোহিত বললেন, ‘‘গত বার আমাদের খেলা ভাল হয়নি। মনে হয়, আমরা সেরা ক্রিকেটটাও খেলতে পারিনি। তাই গত আইপিএলের পরে সামনের দিকে তাকিয়ে আমাদের অনেক নতুন পরিকল্পনা নিতে হয়েছে। সেই সময় জানতাম, আমাদের সামনে একটা বিশ্বকাপ আছে। তাই আমার মনটা সেখানেই দিতে হবে আইপিএলের পরে। বিশেষ করে সেটা আমার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বলেও। তাই বিশ্বকাপের কথাও ভাবতে হয়েছে।’’
নেতৃত্বে না থাকার পরে মুম্বই দল নিয়ে তাঁর ভাবনাতেও পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছে রোহিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি মুম্বইয়ে খেলা শুরুর সময়ের পরের থেকে আজকের দিনে এসে বুঝতে পারছি, অনেক কিছুই পাল্টে গিয়েছে। তখন মিডল অর্ডারে ব্যাট করতাম। এখন ওপেন করি। তখন অধিনায়ক ছিলাম। এখন আমি নেতৃত্ব দিচ্ছি না। আমরা যখন ট্রফি জিততাম তখনকার দলের মাত্র কয়েক জনই রয়ে গিয়েছে। তাদের অনেকে এখন দলের সঙ্গে আছে কোচ হিসেবে। তাই আমাদের অনেকের কাজের ধরন পাল্টে গিয়েছে। কিন্তু তা হলেও আমাদের কারও মানসিকতা বদলায়নি।’’
রোহিত যোগ করেছেন, ‘‘আগে যেমনটা ভাবতাম, এখনও কিন্তু আমি দলের ভাল জন্য সেটাই ভাবি। লক্ষ্য সেই এক। মাঠে নামো, খেলায় জেতো এবং ট্রফি তুলে নাও। মুম্বই ইন্ডিয়ানসকে তো সবাই এই কারণেই চেনে। এত বছর ধরে আমরা জিতে চলেছি, পেয়েছি ট্রফিও। এমনকি অবিশ্বাস্য সব পরিস্থিতিতে আমরা জিতেছি। আসলে মুম্বই দলটাকে সবাই তো এই কারণেই চিনেছে, ভালবেসেছে।’’
বিশ্বকাপে ভারতের দুর্দান্ত সাফল্য নিয়েও নানা কথা বলেছেন রোহিত। ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ সালের বিশ্বকাপ থেকেই আমাদের ভাল কিছু করার লক্ষ্যে যাত্রার ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ায় অবশ্য আমরা সেমিফাইনালে হেরে যাই। তবে ক্রিকেটারদের কাছে এটা পরিষ্কার করে দেওয়া গিয়েছিল যে সামনের দিকে পদক্ষেপ করতে হলে কী কী করা দরকার। মোদ্দা কথা, সেই সময় সবার সামনে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।’’
রোহিতের আরও কথা, ‘‘ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দেওয়া হতে থাকে সেই সময় থেকেই। দলের জন্যই সেটা দরকার ছিল এবং আমরা খুবই জোর দিয়েছিলাম এই বিষয়টির উপর। বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, প্রত্যেককে ভয়হীন ভাবে খেলতে হবে। খারাপ দিন আসবে। সিরিজ়ও হারতে পারি। কিন্তু আতঙ্কিত হলে চলবে না। আমরা আতঙ্কিত হইওনি। আমাদের মনোভাব একই থেকেছে।’’ রোহিতের সংযোজন, ‘‘একটা দল গঠন করতে গেলে প্রথম চিন্তা যেটা মাথায় আসে, তা হল আমাদের চাহিদাটা কী চিহ্নিত করা। সঙ্গে কোথায় আমরা অতীতে পিছিয়ে পড়েছি দেখে নেওয়া।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)