Advertisement
E-Paper
BB_2025_Lead Zero Banner

‘প্রাসঙ্গিক থাকতে এখন অনেকেই তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনকেও বিক্রি করে ফেলছেন’, উপলব্ধি ইশার

“কোথায় খেতে যাচ্ছি, কোন বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছি, তা নিয়ে দুটো গসিপ নিজেই ছড়িয়ে দিলাম! এগুলো আমি কোনও দিন পারিনি। আর ঈশ্বরের আশীর্বাদে ভবিষ্যতেও যেন না করতে হয়”, বললেন ইশা সাহা।

A candid chat with Bengali actress Ishaa Saha about her upcoming works and career plans

অভিনেত্রী ইশা সাহা। ছবি: সংগৃহীত।

অভিনন্দন দত্ত

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০১
Share
Save

গত দু’বছরে তাঁর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা কম। চলতি বছরে ইন্ডাস্ট্রির চাকা ঘুরতেই ব্যস্ততা বেড়েছে ইশা সাহার। পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও চর্চা অব্যাহত। তবে ইন্ডাস্ট্রির ‘ট্রেন্ড’-এ গা ভাসাতে নারাজ। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে নিজের অবস্থানকে কী ভাবে দেখছেন তিনি? আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে আড্ডায় অভিনেত্রী।

প্রশ্ন: চারপাশে আপনাকে নিয়ে চর্চা বিস্তর, কেমন আছেন?

ইশা: খুব ভাল আছি। গত বছর তো বাংলা ইন্ডাস্ট্রি খুবই খারাপ সময়ের সাক্ষী থেকেছে। এখন আবার আগের মতো ইন্ডাস্ট্রিতে টুক-টুক করে কাজ শুরু হয়েছে। তাই ভাল লাগছে।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার ব্যস্ততা নিয়েও কথা হচ্ছে। পর পর কাজ হাতে

ইশা: (হেসে) ব্যস্ত কি না, জানি না। আমি যখন কিছুই করছিলাম না, তখন কিন্তু আমাকে নিয়ে কেউ কথা বলছিলেন না। কিছুটা ইচ্ছে করেও কাজ থেকে বিরতি নিয়েছিলাম। কাজ করলে যদি কথা হয়, তা হলে শিল্পীর খারাপ সময়েও তো তাঁকে নিয়ে কথা বলা উচিত।

প্রশ্ন: ভাল-মন্দ মিশিয়েই তো শিল্পীর কেরিয়ার অগ্রসর হয়।

ইশা: অবশ্যই। খারাপ বা ভাল চলতেই থাকে, যদি না কারও নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা থাকে। আমার মতো স্বাধীন অভিনেতার কেরিয়ারে খারাপ সময় আসতেই পারে। আমার বক্তব্য, যখন কোনও শিল্পী খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন, তখন কি কেউ তাঁর সংসারের খবর রাখেন?

প্রশ্ন: গত দু’বছরে আপনার ছবির সংখ্যা কম কেন?

ইশা: ২০২১-২২ সালে আমি অনেকগুলো ছবিতে অভিনয় করেছিলাম যেগুলো পরের বছর মুক্তি পেয়েছে। আবার ২০২৩ সালের ছবিগুলোর মধ্যে গত বছর অনেকগুলোই মুক্তি পায়নি। গত দেড় বছরে ইন্ডাস্ট্রিতে ছবিও তো কমেছে। দারুণ সব ছবির প্রস্তাব এসেছে আর আমি ছেড়ে দিয়েছি সে রকমও নয়। সব মিলিয়ে আমিও একটু বিরতি নিতে চেয়েছিলাম।

প্রশ্ন: ‘চেক ইন চেক আউট’ ছবিটা নির্বাচন করলেন কেন?

ইশা: প্রথমত, ছবির ইউনিটের সিংহভাগ সদস্যই ছিল ছাত্র। গোড়ার দিকে একটু দ্বন্দ্বে ছিলাম, নতুনরা কি ঠিক মতো ছবিটা তৈরি করতে পারবে? কারণ ছাত্রদের ভাবনার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির কাজের ধরনের মধ্যে পার্থক্য থাকে। তবে সত্রাজিৎদার (ছবির পরিচালক সত্রাজিৎ সেন) কথায় আমি আরও মনের জোর পাই। তা ছাড়া আজ যারা নতুন, আগামী দিনে তাদের মধ্যে থেকেই তো ভাল পরিচালক উঠে আসতে পারে। দ্বিতীয়ত, গল্পের মধ্যে একটা নতুনত্ব রয়েছে। তা ছাড়া নতুনদের সঙ্গে কাজ করে শেখারও একটা সুযোগ থাকে।

A candid chat with Bengali actress Ishaa Saha about her upcoming works and career plans

‘চেক ইন চেক আউট’ ছবির একটি দৃশ্যে ইশা সাহা এবং আরিয়ান ভৌমিক। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: গত বছরে আপনার ‘একটু সরে বসুন’ বা চলতি বছরে ‘অপরিচিত’ ছবির প্রতিক্রিয়ায় আপনি কি খুশি?

ইশা: অন্য রকম অনেক ছবিই তো হচ্ছে। কিন্তু কোনও অভিনেতাই কি খুশি হতে পারছেন? ছবির সাফল্য সকলেই চান। কিন্তু দিনের শেষে তো অভিনেতাদের হাতে কিছু নেই। দর্শক যদি ছবি না দেখেন, তা হলে আমরা তো নিরুপায়। আর দর্শকের ছবি পছন্দ না হলে, সেটাও মেনে নিতে হবে।

প্রশ্ন: অভিনেতাদের তার মানে কঠিন সময়ের সাক্ষী থাকতে হচ্ছে?

ইশা: অভিনেতার কাজ অভিনয় করা। তাঁকে তো সেই অভ্যাস ছাড়লে চলবে না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বলিউড নয়, যে দু’বছরে একটা ছবি করেই টিকে থাকা যাবে। তাই কাজ করতেই হবে। অন্য দিকে, বছরে একজন অভিনেতার পাঁচটা ছবি মুক্তি পাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে সেটাও কতটা সম্ভব জানি না। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি, ‘অপরিচিত’ চারপাশের বহু খারাপ ছবির তুলনায় ভাল।

প্রশ্ন: হাতে কাজ কম থাকলে একজন অভিনেত্রী হিসাবে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ইশা: আমি বিষয়টাকে একটু অন্য ভাবে দেখতে চাই। কারণ প্রাসঙ্গিক রাখতেই হলে, সেখানে একটা জেদ চেপে যায়। সেটা ঠিক নয়। কোথায় খেতে যাচ্ছি, তা নিয়ে চারটে কথা! কোন বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে যাচ্ছি, তা নিয়ে দুটো গসিপ নিজেই ছড়িয়ে দিলাম অথবা আমার বাড়িতে লক্ষ্ণীপুজো বা ভাইফোঁটা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে... (একটু থেমে) এগুলো আমি কোনও দিন পারিনি। আর ঈশ্বরের আশীর্বাদে ভবিষ্যতেও যেন আমাকে কোনও দিন এগুলো না করতে হয়।

প্রশ্ন: কিন্তু এখন তো প্রচারের আলো না পেলে...

ইশা: আমার কাজ অভিনয় করা। আর আমি শুধু সেটাই করতে চাই। কারণ এখন মনে হচ্ছে, প্রাসঙ্গিক থাকতে গিয়ে মানুষ যা ইচ্ছে তাই করছেন! অনেকেই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে বিক্রি করে ফেলছেন! যেটা আরও দশ জনের জানার কোনও প্রয়োজন নেই, কিন্তু মানুষ সেটারই সুযোগ নিচ্ছে। আমার এটা না করলেও হয়তো চলবে। কোনও দিনই ব্যক্তিগত জীবনে কাউকে প্রবেশ করতে দিইনি। আগামী দিনেও যাতে সেটা না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকব।

প্রশ্ন: তা হলে ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ তে বিশ্বাস করেন না?

ইশা: আমার মনে হয়, কোনও মানুষকে সকলের মাঝে খুব সহজেই যদি পাওয়া যায়, তা হলে তার ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ কমে যায়। সহজলভ্য হলে মূল্য কমে যায় বলেই মনে হয় আমার।

প্রশ্ন: নিজের অভিনয়কে আরও উন্নত করতে কী কী করেন?

ইশা: আলাদা করে কোনও ওয়ার্কশপ করিনি। তবে ছবি বা ওয়েব সিরিজ় দেখার চেষ্টা করি। অভিনয় সংক্রান্ত ভাল বই বা লেখা পড়ি।

প্রশ্ন: আর বলিউড নিয়ে কী ভাবনা?

ইশা: আমার ভাবনা নেই। এখন অডিশন চলতেই থাকে। তার জন্য এখন মুম্বইয়ে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আগে অডিশনের ভিডিয়ো রেকর্ড করার জন্য কারও সাহায্যের প্রয়োজন হত। এখন সেটাও নিজে করতে শিখে গিয়েছি।

প্রশ্ন: কিন্তু শুনেছি আপনি নাকি মুম্বইয়ের কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিকে আপনার উপস্থিতি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

ইশা: আমি শুনিনি! মুকেশ আমার ভাল বন্ধু। অনেকগুলো কাজ নিয়েও কথা হয়েছে। কিন্তু কোনও কারণে সেগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু যোগাযোগ করার অর্থ মানেই নতুন কাজ করছি, সে রকম কিছু নয়।

প্রশ্ন: সাম্প্রতিক ছবির মাধ্যমে কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছেন?

ইশা: আমরা প্রায় একই সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলাম। অনেক দিন পর ও খুবই অন্য ধরনের চরিত্র পেয়েছে। ভাল লাগছে। ‘বহুরূপী’ দেখে ওকে জানিয়েছিলাম। ‘কিলবিল সোসাইটি’ও দেখার ইচ্ছে আছে। আসলে প্রথমে ভাল চিত্রনাট্য পেলে তবেই প্রশংসা মেলে। এ রকমও হয়েছে, কেউ খুব ভাল কাজ করছেন, কিন্তু তাঁকে নিয়ে কেউ কোনও কথাই বলেননি।

প্রশ্ন: আপনিও কি ওঁর মতো চিত্রনাট্যের অপেক্ষায় রয়েছেন?

ইশা: ভাল চিত্রনাট্য পেলে রাজি না হওয়ার তো কোনও কারণ নেই।

প্রশ্ন: মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয়ের ইচ্ছে নেই?

ইশা: কয়েক বছর আগে এই ধরনের ছবি সমান্তরাল ঘরানার ছবির তুলনায় একটু পিছিয়ে পড়েছিল। তাই বাণিজ্যিক ছবি তৈরিও হচ্ছিল না। এখন আবার নতুন করে বাণিজ্যিক ছবিকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে। যদি প্রস্তাব আসে, তা হলে নিজেকে সেই মতো তৈরি করে নেব (হাসি)।

A candid chat with Bengali actress Ishaa Saha about her upcoming works and career plans

ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনার ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কের গুঞ্জন নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই ধরনের চর্চা মনের উপর প্রভাব ফেলে?

ইশা: একটু হলেও প্রভাব ফেলে। প্রভাব না ফেললে তো অনুভূতিগুলোই আর কাজ করবে না। কিন্তু সেটা ৫ শতাংশ হলেও ঝেড়ে ফেলা যায়। পাশাপাশি এটাও মনে হয়, যাঁরা আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছেন, তাঁরা কি আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ? কারণ আমি জানি, কী হচ্ছে। সেখানেই ইতি। নিজের কাছে সৎ থাকলেই হল। আমি তো বাকি পৃথিবীকে ব্যাখ্যা দিতে যাব না।

প্রশ্ন: পরিবারের সদস্যেরা বিষয়টিকে কী ভাবে দেখেন?

ইশা: পরিবারের সঙ্গে এই বিষয়ে আমার কোনও কথা হয় না। বিশেষ করে, আমাকে নিয়ে কোনও খবর ওঁরা জানলে, সেটা আমি পর্যন্ত পৌঁছোতেই দেন না। কারণ তাঁরা বাইরের কথাকে গুরুত্ব দেন না। আর জানেন, যদি কিছু বলার থাকে, তা হলে সেটা আমি নিজেই তাঁদের জানাব। সে দিক থেকে আমি ভাগ্যবান।

প্রশ্ন: আপনার মানহানি করা হলে আইনি পথে হাঁটবেন বলেও সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন।

ইশা: হ্যাঁ, করেছি। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়া যদি কেউ মানহানি করেন, তা হলে আমি আইনি পদক্ষেপ করতে পারি।

প্রশ্ন: ‘তেজপাতা’র শুটিং করছেন। আগামী দিনে আর কী কী কাজ রয়েছে?

ইশা: বড় পর্দায় একেনবাবুর নতুন ছবি মুক্তি পাবে। শুনেছি ‘অসুখবিসুখ’ ছবিটাও মুক্তি পাবে। সে রকমই চেষ্টা করা হচ্ছে। পুজোর সময় ‘ইন্দু’র নতুন সিজ়ন আসতে পারে। সোনাদার নতুন অভিযান ‘সপ্তডিঙার গুপ্তধন’-এর শুটিং হয়তো বছরের শেষে শুরু হবে। আপাতত এই (হাসি)।

Ishaa saha Celebrity Interview Tollywood

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।