কয়েক মাস আগেও ভারতের হয়ে তিন ফরম্যাটে নিয়মিত ছিলেন তিনি। অনেক সময় সাদা বলের ক্রিকেটে মহম্মদ শামির আগে তাঁকে প্রথম একাদশে নেওয়া হত। সেই মহম্মদ সিরাজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা পাননি। তাঁকে ধরে রাখেনি তাঁর আইপিএল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুও। ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ায় ধাক্কা খেয়েছিলেন সিরাজ। সেই ধাক্কা সামলে আইপিএলে ফিরেছেন তিনি। পর পর দু’ম্যাচে সেরার পুরস্কার পেয়েছেন সিরাজ।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন সিরাজ। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে তিনি বলেন, “চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে বাদ পড়া হজম হয়নি। ধাক্কা খেলেও আমি হতাশ হইনি। নিজের ফিটনেস নিয়ে খেটেছি। যে ভুল করছিলাম, তা শোধরানোর চেষ্টা করেছি। এখন বোলিং আমি উপভোগ করছি।”
দল থেকে বাদ পড়ে প্রাথমিক ভাবে নিজের উপরেই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল সিরাজের। ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। আইপিএলকেই জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করছেন এই ডানহাতি পেসার। তিনি বলেন, “পেশাদার ক্রিকেটার হিসাবে আপনি যখন অনেক দিন ধরে জাতীয় দলে খেলার পর বাদ পড়েন তখন আপনার মনে একটা সন্দেহ তৈরি হয়। নিজের দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ হয়। আমারও হয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠেছি। নিজেকে বুঝিয়েছি, ভাল খেললে আবার ফেরা সম্ভব। এখন সেটাই হচ্ছে। দু’দিকেই বল সুইং করানোর থেকে ভাল অনুভূতি আর হয় না।”
আরও পড়ুন:
হায়দরাবাদের ট্রেভিস হেড ও অভিষেক শর্মাকে আউট করে বড় ধাক্কা দিয়েছেন সিরাজ। আবার স্পেলের শেষ ওভারেও জোড়া উইকেট নিয়েছেন তিনি। ভাল বোলিংয়ের কৃতিত্ব আইপিএলের এক নিয়মের বদলকে দিয়েছেন গুজরাত টাইটান্সের পেসার। সিরাজ বলেন, “বলে থুতু লাগানো যাচ্ছে। তাই বলের সুইং ভাল হচ্ছে। ফলে এলবিডব্লিউ বা বোল্ড করতে সুবিধা হচ্ছে।” কোভিডের পর থেকে বলে থুতু লাগানো নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে রিভার্স সুইংয়ে সমস্যা হত। এ বারের আইপিএলের আগে সেই নিয়ম বদলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। বোলারেরা বলে থুতু লাগাতে পারছেন। তাতে পেসারদের সুবিধা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন সিরাজ।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
গুজরাতের হয়ে খেললেও সিরাজ হায়দরাবাদের ছেলে। অর্থাৎ, ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। এই পিচকে হাতের তালুর মতো চেনেন সিরাজ। সেই সুবিধাও নিয়েছেন তিনি। সিরাজ বলেন, “উইকেট একটু মন্থর ছিল। সেটা কাজে লাগিয়েছি। ঠিক লেংথে বল করার চেষ্টা করেছি। ঘরের মাঠে খেলার অনুভূতিই আলাদা। আমার পরিবার মাঠে ছিল। তাদের সামনে ম্যাচের সেরা হতে পেরেছি।”
এর আগের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন সিরাজ। যে দল তাঁকে ধরে রাখেনি তাঁদের জবাব দিয়েছিলেন তিনি। এ বার ঘরের মাঠে সেই কাজটাই করেছেন। বোঝা যাচ্ছে, এ বারের আইপিএলকে জবাবের মঞ্চ হিসেব ব্যবহার করছেন সিরাজ।