সচিন তেন্ডুলকর। —ফাইল ছবি
২৪ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে অবসর নেন সচিন তেন্ডুলকর। নিজের শহর মুম্বইয়ে খেলেন শেষ টেস্ট ইনিংস। সেই টেস্ট কেন হয়েছিল মুম্বইয়ে? সে কথা নিজেই জানিয়েছেন সচিন।
তাঁর শেষ টেস্টটি মুম্বইয়ে আয়োজন করার অনুরোধ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে করেন সচিনই। গোটা ক্রিকেট জীবনে আর কখনও বোর্ডকে এমন অনুরোধ করেননি তিনি। সিরিজ শুরুর আগে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন সচিন। তাঁর অনুরোধ এক কথায় মেনে নেন কর্তারাও। গোটা ক্রিকেট জীবন পরিবারের সদস্যদের মাঠ থেকে দূরে রাখা সচিন চেয়েছিলেন, তাঁর টেস্ট দেখতে আসুক বাড়ির সকলে।
নিজের শহরের প্রতি আবেগ নয়। আসলে মায়ের সামনে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন সচিন। ২০০৩ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেই টেস্ট ম্যাচের দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশ। তাকিয়েছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথম কারণ ছিল অবশ্যই সচিনের শেষ টেস্ট। দ্বিতীয় কারণ, বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০তম টেস্ট ছিল সচিনের।
সেই ম্যাচ এখনও উজ্জ্বল সচিনের স্মৃতিতে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘সিরিজের আগেই বিসিসিআই-কে জানিয়ে ছিলাম ওই দু’টোই আমার শেষ টেস্ট। সঙ্গে জানাই আমার একটি মাত্র অনুরোধ রয়েছে। শেষ টেস্টটি মুম্বইয়ে খেলতে চাই। তা হলে আমার মা মাঠে আসতে পারবেন। আমার খেলা দেখতে পারবেন। বোর্ড আমার অনুরোধ খুশি মনে মেনে নেয় এবং শেষ টেস্টটি মুম্বইয়ে আয়োজন করে। ২৪ বছরে ওই এক বারই মা আমার খেলা দেখতে মাঠে আসেন।’’ সচিন আরও বলেছেন, ‘‘অবিশ্বাস্য ছিল বিষয়টা। ব্যাট করছিলাম। তখন মাকে মাঠের বড় পর্দায় দেখানো হয়। মা-র অবশ্য সে দিকে খেয়াল ছিল না। গোটা স্টেডিয়াম মা-র প্রতিক্রিয়া দেখছিল। আমিও খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। তার মধ্যেই ম্যাচে মনসংযোগ করতে হয়েছিল। ওভারটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শেষ ছ’টা বল বাকি ছিল। কিন্তু, মাঠের বড় পর্দার দৃশ্যটাও আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’’
কেবল তাঁর মা নন, একমাত্র দাদা অজিত তেন্ডুলকর ছাড়া পরিবারের কেউই ২৪ বছরে মাঠে এসে সচিনের খেলা দেখেননি। কেন কখনও মাঠে আসেননি সচিনের বাবা বা আরও এক দাদা এবং দিদি? তারও উত্তর দিয়েছেন সচিন। বলেছেন, ‘‘স্কুল জীবন থেকেই ক্রিকেট শুরু করি। আমার খেলা বাড়ির কেউ দেখুক, সেটা একদমই পছন্দ করতাম না। আমার দাদাও (অজিত) গাছের পিছনে লুকিয়ে থেকে সারা দিন আমার খেয়াল রাখত। দাদা আমার জীবনের সব খেলাই দেখেছে। আমার খেলা দেখে ও নোট নিত। পরে আমরা সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতাম। দাদাই পরিবারের অন্যদের বলে দিয়েছিল, কেউ যেন আমার খেলা দেখতে মাঠে না যায়। বলেছিল, ওকে ভাল খেলতে হবে। রান করতে হবে। পরিবারে কাউকে দেখে ওর মনসংযোগ নষ্ট হলে খেলায় প্রভাব পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy