মেয়ে আয়েশাকে নিয়ে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন খোয়াজা। ছবি: টুইটার।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর শনিবার সফরকারীদের পক্ষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন উসমান খোয়াজা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে তিনি একা আসেননি। বড় মেয়েকে কোলে করে নিয়ে এসেছিলেন অস্ট্রেলীয় ওপেনার।
এর আগে দু’বার ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজ়ের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা হয়নি খোয়াজার। মনে করা হত ইংল্যান্ডের মাটিতে তাঁর সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। অথচ প্রথম বার ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ খেলতে নেমেই করেছেন শতরান। শনিবার তিনি অপরাজিত ছিলেন ১২৬ রান করে। ব্যাট হাতে সমালোচকদের জবাব দেওয়ার পর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে। সাধারণত এমন ঘটনা দেখা যায় না। স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়েছে বাড়তি আগ্রহ।
৩৬ বছরের অস্ট্রেলীয় ওপেনারের জন্ম পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬১টি টেস্ট এবং ৪০টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন এখনও পর্যন্ত। জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর। খোয়াজাকে মূলত লাল বলের ক্রিকেটের জন্য ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া। তবু পর পর দু’বার ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজ়ের দলে জায়গা না পাওয়া তাঁর কাছে ছিল বড় ধাক্কা। বার্মিংহামে শতরান পূর্ণ করার পর তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশের মধ্যেই ধরা পড়েছে নিজেকে প্রমাণ করতে পারার জেদ। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকে সঙ্গে একরত্তি মেয়ে কেন? খোয়াজা জানিয়েছেন, ‘‘খেলা শেষ হওয়ার পর মেয়ে কিছুতেই সঙ্গ ছাড়তে চাইছিল না। বাধ্য হয়েই মেয়েকে নিয়ে আসতে হল।’’ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সঙ্গে মেয়ে থাকায় বেশিক্ষণ সময় দিতে পারবেন না। দ্রুত প্রশ্ন-উত্তর পর্ব শেষ করে চলে যাবেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মাঝেই আয়েশা বাবাকে প্রশ্ন করে, তার ছোট বোন আয়লা কোথায় আছে। কথা থামিয়ে মেয়েকে খোয়াজা বলেন, ‘‘আয়লা তো খুব ছোট। তাই ও এখানে নেই। আয়লা মায়ের কাছে আছে। আমরা তাড়াতাড়ি আয়লার কাছে যাব। ঠিক ২ মিনিট পরেই চলে যাব।’’ এর পর খোয়াজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমাকে কথা বলতে দিন। জানি না এখানে কতক্ষণ থাকতে পারব। তাড়াতাড়ি কথা বলে নেওয়া যাক।’’
মেয়েকে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা কতটা কঠিন, তা বুঝেছেন খোয়াজা নিজেও। টেবিলে রাখা সাংবাদিকদের ফোন নিয়ে খেলার চেষ্টা করে আয়েশা। মেয়েকে তখনকার মতো শান্ত করার জন্য তাঁকে বলতে হয়, পরে খেলার জন্য নিজের ফোনটি দেবেন। আয়েশা প্রচুর লোক, ক্যামেরা, আলো দেখে বিরক্তি প্রকাশ করলেও খোয়াজা মেয়েকে সামলেছেন হাসি মুখে, শান্ত ভাবে।
পেশাদার ক্রিকেটার খোয়াজা স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে সময় কাটাতেই পছন্দ করেন তিনি। চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেলেও ভারতীয় উপমহাদেশের পারিবারিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেন খোয়াজা। ক্রিকেট এবং পরিবারই তাঁর কাছে সব। ক্রিকেটজীবনের অন্যতম খুশির দিনেও মেয়ের আবদার ফেরাননি। তাকে নিয়েই এসেছিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy