উদ্বেগ: অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোহালি-স্মিথের দ্বৈরথ নিয়েও সংশয় বাড়ছে।
করোনাভাইরাসের আক্রমণের ধাক্কায় সীমান্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক এবং অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ছাড়া আর কারও এখন সে দেশে যাওয়ার উপায় নেই। যার জেরে প্রশ্নের মুখে অক্টোবরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর। এমনকি, আইপিএল নিয়েও সংশয় বেড়েই চলেছে। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এই বছরের সব চেয়ে বড় দুটি প্রতিযোগিতা হল, আইপিএল এবং তার পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের মনেই প্রশ্ন রয়েছে এই বছরের আইপিএল হওয়া নিয়ে। রবিবার, অস্ট্রেলিয়ার একটি টিভি চ্যানেলে স্মিথ বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এ বার হয়তো আর আইপিএল হবে না। মনে হয়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আইপিএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কয়েকটা সভা হবে।’’
জানা গিয়েছে, ভারতীয় বোর্ডকর্তারা চাইছেন, অন্তত ২১ দিনের লকডাউন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। তার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু ঘটনা হল, বিভিন্ন দেশে যে ভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাতে আইপিএলের আকাশে মেঘ ক্রমশ কালো হচ্ছে। বিদেশি ক্রিকেটারেরা আদৌ আসতে পারবেন কি না, তা নিয়েই সব চেয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত কত দিন বন্ধ থাকে, তার উপরে নির্ভর করে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্য। অস্ট্রেলীয় সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, বিদেশিদের অস্ট্রেলিয়ায় আসার ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তা ছ’মাস কী তার বেশিও থাকতে পারে। সেটা হলে পিছিয়ে দিতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পিছিয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের টেস্ট সিরিজিও।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু ১৮ অক্টোবর। ভারত তার আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে একটি ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতা খেলবে। বিশ্বকাপ শেষে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বহু প্রতীক্ষিত টেস্ট সিরিজ। অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত যদি ছ’মাস বন্ধ থাকে, তা হলে অক্টোবরের আগে কোনও বিদেশি ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে ঢুকতে পারবেন না। ফলে সব কিছুই এখন অনিশ্চয়তার মোড়কে ঢাকা। সে ক্ষেত্রে অল্প ক’দিনের মধ্যে কী করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব আয়োজন সুষ্ঠু ভাবে করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জড়িত এক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছু বলা কঠিন। আপাতত ধরে নেওয়া হচ্ছে ছ’মাস নিষেধাজ্ঞা থাকবে। পরিস্থিতি ভাল হলে ছ’মাসের সময়টা কমেও যেতে পারে।’’ কিন্তু সেটা যদি না হয়, তা হলে কী হবে? ‘‘সে ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হবে,’’ স্বীকার করে নিয়েছেন বোর্ড কর্তা। আর এক জন বলেছেন, ‘‘ছ’মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলে সব কিছু ঠিকঠাক করাটা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়াবে। অন্তত ভারতের ত্রিদেশীয় সিরিজ নিয়ে তো বিশাল সমস্যা দেখা দেবে। টিকিট কাটা, ভিসা তৈরি করা, সব কিছু বাকি থাকবে।’’ শুধু ত্রিদেশীয় সিরিজই নয়, তার আগে সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের ভারত সফরে আসার কথা। বোর্ড কর্তার মন্তব্য, ‘‘ওই সময় ইংল্যান্ডের অবস্থা কী থাকবে, তা আমরা কেউ জানি না।’’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে যাওয়া মানে অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্ট সিরিজও পিছিয়ে দিতে হবে। সে রকম হলে আইসিসির ‘ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামস’ নিয়ে প্রচণ্ড জটিলতা দেখা দেবে। ‘‘আমাদের এখন অসহায়ের মতো দেখা ছাড়া কোনও উপায় নেই,’’ বলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তাটি।
অসহায়ের মতো দিন কাটছে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারেরও। ঘরবন্দি থাকা অবস্থায় রবিবার তিনি টুইট করেছেন, ‘‘ঘরে বসে কী করব, মাথায় ঢুকছে না। কারও কোনও পরামর্শ আছে?’’ এর একটু পরে একটা বাচ্চাদের ধাঁধার বইয়ের ছবি দিয়ে ওয়ার্নারের টুইট, ‘‘ইয়েসসস। একটা ঘণ্টা কেটে যাবে। কিন্তু ছ’ মাস! আর কেউ কিছু বলবেন!’’ এ দিনই আবার অধিনায়ক হিসেবে স্টিভ স্মিথের উপরে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, তার মেয়াদ ফুরিয়ে গেল। অর্থাৎ, আজ, সোমবার থেকে ইচ্ছে করলে স্মিথকে দেশের অধিনায়কের দায়িত্ব দিতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy