ছবি : সংগৃহীত।
আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসাবে আমলকির বাড়তি কদর আছে। তার একটা বড় কারণ আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি-এর পরিমাণ। লেবু, পেয়ারা, আপেল, টম্যাটোর মতো যে সমস্ত ফল ভিটামিন সি-র উপস্থিতির কথা ভেবে নিয়মিত খেতে বলা হয়, তাদের থেকে অনেক বেশি ভিটামিন সি থাকে আমলকিতে। স্বাভাবিক ভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি-সহ আরও নানা কারণে আয়ুর্বেদে গুরুত্ব বেড়েছে আমলকির। আয়ুর্বেদে ভাল থাকার ওষুধ হিসাবে রোজ সকালে খালি পেটে আমলকির জল খেতেও বলা হয়। কিন্তু আমলকির জল কি ততটাই উপকারী, যতটা ভাবা হয়?
আমলকির জল কী?
আমলকির জল কিন্তু আমলকির রস নয়। আমলকির জল বানানো হয় আমলকিকে জলে ফুটিয়ে। ১ টি মাঝারি মাপের কাঁচা আমলকি কেটে ১-২ কাপ জলে ফুটিয়ে তার পরে আরও ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত সিম আঁচে রেখে জলের রং সোনালি অথবা হালকা বাদামি হলে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা করে মজুত করা হয়। ওই জল রোজ সকালে খালি পেটে আধ কাপ করে খেতে বলা হয় আয়ুর্বেদে। অনেকে তাতে লেবুর রস এবং মধুও মেশাতে বলেন।
আয়ুর্বেদ কী বলছে?
আয়ুর্বেদে আমলকির গুণে চুলের স্বাস্থ্য ভাল থাকে বলা হয়। তা ছাড়া আয়ুর্বেদ চিকিৎসক দীপক সোনি বলছেন, ‘‘আমলকির জল পাচক অগ্নিকেও জাগিয়ে তোলে।’’ অর্থাৎ শরীরের যে তাপ আমাদের হজমে সহায়তা করে তাতে হজমশক্তির উপকার হয়। এমনকি, রেচন ক্রিয়া বা শরীরকে বর্জ্যমুক্ত করার ক্ষেত্রেও উপকারে আসে। এ ছাড়া আমলকি অস্থিসন্ধির ব্যথা, রক্তে শর্করার মাত্রা, কোলেস্টেরল, এমনকি, ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক বলে মনে করা হয় আয়ুর্বেদে।
আধুনিক বিজ্ঞান কী বলছে?
আমলকির গুণের কথা অস্বীকার করছে না বিজ্ঞানও। চিকিৎসক বরুণ গুপ্তা বলছেন, ‘‘আমলকি কোলেস্টেরল, গাঁটের ব্যথা, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উপযোগী হতে পারে। এমনকি, আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কমাতে পারে। প্যাংক্রিয়াটাইটিসের ঝুঁকিও কমাতে পারে।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, ‘‘নিয়মিত আমলকি খেলে তা নিজের চিকিৎসককে এক বার জানিয়ে খাওয়াই ভাল। আমলকির জল খাওয়ার বদলে কাঁচা আমলকিও খেতে পারেন।’’
পুষ্টিবিদ যা বলছেন
আমলকির নানা উপকারের কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ কনিকা মলহোত্রও। ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন, কোন উপাদান কী উপকারে লাগে।
ভিটামিন সি: কনিকা জানাচ্ছেন, আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধির পাশাপাশি ‘ফ্রি র্যাডিকালস’ থেকে হওয়া ক্ষতি রোধ করে। ফ্রি র্যাডিকালস হল শরীরে থাকা কিছু বিষাক্ত কণা, যার পরিমাণে শরীরে বেড়ে গেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ে। আর শরীরের অধিকাংশ সমস্যার মূলে থাকে ওই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস।
হজমে সহায়ক: আয়ুর্বেদে হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকির গুণের কথা বলা হয়েছে। অগ্ন্যাশয়কে ভাল রাখার কথা বলা হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানে। পুষ্টিবিদও বলছেন, সকালে খালি পেটে আমলকির জল খেলে পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় না। হজমেও সাহায্য করে।
শর্করা নিয়ন্ত্রণ: আমাদের উল্টোপাল্টা খাওয়াদাওয়ার একটা বড় কারণ রক্তে শর্করার আচমকা উত্থান। খালি পেটে আমলকির জল খেলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ত্বকের স্বাস্থ্য: আমলকি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়ক। ফলে বয়সের সঙ্গে কোলাজেন উৎপাদন কমে যাওয়ায় ত্বকে বলিরেখা পড়ার যে সমস্যা দেখা যায়, তার সমাধান করতে পারে আমলকি। এ ছাড়া নিয়মিত আমলকির জল খেলে ত্বকের রংও দেখায় উজ্জ্বল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy