করোনা-প্রভাবে অনেকটাই বদলে যাবে ক্রিকেট, মনে করছেন চান্দু বোর্দে। —ফাইল চিত্র।
করোনা মোকাবিলায় অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট! শাহিদ আফ্রিদির প্রস্তাব নিয়ে ক্রিকেটমহলে শুরু হয়েছে চর্চা। সুনীল গাওস্কর, কপিল দেবরা কার্যত উড়িয়েই দিয়েছেন এই সম্ভাবনা। একই সুরে গলা মেলালেন ভারতীয় ক্রিকেটের প্রবীণ সদস্য চান্দু বোর্দে।
৮৫ বছর বয়সি বুধবার পুণে থেকে মোবাইলে আনন্দবাজার ডিজিটালকে স্পষ্ট বললেন, “ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট এখন? কী ভাবে হবে তা? এখন তো খেলা উচিতও নয়। আর ভারত-পাক ক্রিকেট তো এমনিতেও হচ্ছে না। তার উপর এই করোনার সময়ে? ইয়ে তো বহুতই না-মুমকিন হ্যায়। ভারত-পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার কথা বাদই দিন। এমনিতেই ক্রিকেট কখন শুরু হবে, কখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেটাই তো কারও জানা নেই! প্রতি দিনই তো করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।”
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় বিশ্বকাপের ব্যাট নিলামে তুলছেন সাকিব
যখনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক না কেন, ক্রিকেট যে আর আগের মতো থাকবে না, তা নিয়ে সংশয় নেই বোর্দের। সোজাসুজি বললেন, “দেখুন, বোলাররা থুতু লাগায় বলে। তা আর কেউ করবে না। কারণ, এটা বিপজ্জনক। এখন তো মনে হয়, পালিশের জন্য শুধু ঘামই লাগানো যাবে বলে। কিন্তু সেটার অনুমতিও কি দেওয়া হবে? এই মুহূর্তে জানা নেই। তবে একটা অনুভূতি হচ্ছে যে করোনার ফলে ক্রিকেটে অনেক বিধিনিষেধ আসবে। যা নিশ্চয়ই ভালর জন্য, সুস্থ থাকার জন্য আসবে। ক্রিকেটারদের জীবন নিরাপদে রাখতেই এটা হবে। তবে যাই হোক না কেন, ক্রিকেট বদলে যাবে।”
বল পালিশের এই প্রথা কি থাকবে করোনা-উত্তর সময়ে, সংশয় থাকছে। —ফাইল চিত্র।
চান্দু বোর্দে যখন খেলতেন, তখন দিনের শেষে আড্ডায় বসতেন দুই শিবিরের ক্রিকেটাররা। সেই খোলামেলা আবহ নেই অনেক দিনই। কিন্তু, করোনার ফলে তো নিজের ড্রেসিংরুমেই ক্রিকেটারদের মধ্যে বাড়তে পারে দূরত্ব। এমনকি, ক্লোজ-ইন ফিল্ডিংয়ের রীতি-নীতিও পড়তে পারে সমস্যায়। বোর্দের মতে, “হ্যাঁ, এখন তো দূরত্ব রাখার কথাই বলা হচ্ছে। তা রাখতেও হবে। এক মিটার দূরে থাকতেই হবে। এটাতে তো নিরাপদে থাকাও যাবে। ক্রিকেটে আরও নিয়মকানুন আসবে মনে হচ্ছে। নিশ্চয়ই আইসিসি, বিসিসিআই-এর তরফ থেকে গাইডলাইন দেওয়া হবে সবাইকে। যে, এটা-এটা করা যাবে আর এগুলো করা যাবে না। এগুলো নিয়ে চর্চার দরকার আছে। মাথায় রাখতে হবে, এর ফায়দা কিন্তু ক্রিকেটাররা ছাড়াও বাকিরাও পাবে।”
আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে। বছরের শেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। বোর্দে অবশ্য ক্রিকেট নয়, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, “দেখুন, ক্রিকেটের চেয়ে অনেক বড় জীবন। এখন সবাইকে নিয়ম মেনে চলতেই হবে। আসলে, জনসংখ্যা অনেক বেশি এখানে। তবু আমেরিকা, ইটালি, ফ্রান্স, স্পেন, জার্মানি, ইংল্যান্ডের মতো এগিয়ে থাকা দেশের তুলনায় এখানে করোনা অনেক কম। খুব ভাল ভাবে এখানে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে কী করতে হবে, তা লোককে বলা হয়েছে। লকডাউনে তা মেনেও চলছেন মানুষ। তবে গরিবদের খুব লোকসান হচ্ছে। ওদের জন্য যে কী করা উচিত, সেটাই বুঝে ওঠা যাচ্ছে না।”
আরও পড়ুন: লারাকে বল করতে ভয় পেতেন, স্বীকারোক্তি আফ্রিদির
কিন্তু করোনাভাইরাস কি দীর্ঘস্থায়ী কোনও দাগ রেখে যাবে ক্রিকেটে? বডিলাইন সিরিজের মতো বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্রিকেট বন্ধ থাকার মতো এর প্রভাবও কি দীর্ঘস্থায়ী হবে? বোর্দের উত্তর, “এখন তো ক্রিকেট বন্ধ। যখন শুরু হবে, তখন এর প্রভাব বোঝা যাবে। এত দিন অনুশীলন বন্ধ ক্রিকেটারদের। হুট করে মাঠে নেমে কিন্তু খেলা যাবে না ক্রিকেট। তার জন্য প্র্যাকটিস শুরু করতে হবে। তবে ম্যাচ খেলা সম্ভব। না হলে মুশকিল। ক্রিকেটারদের মাথায় করোনা তাই থাকবে তো বটেই, বাস্তবেও করোনার প্রভাব থাকবে এই কারণেই। হয়তো মন চাইবে মারতে, কিন্তু ছন্দে না থাকার ফলে শরীর দেবে না। ফলে, টাইমিং হবে না ব্যাটসম্যানের।”
বোঝা গেল, করোনা-সঙ্কটের পর নতুন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষায় থাকছে ক্রিকেটারদের জন্য!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy