দাবা অলিম্পিয়াড নিয়ে চেন্নাইয়ে তুঙ্গে উৎসাহ। ছবি: টুইটার।
ভারতে প্রথম বার হচ্ছে দাবা অলিম্পিয়াড। এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে চেন্নাইয়ে। এই উন্মাদনাকে কাজে লাগিয়ে দাবার জনপ্রিয়তা বাড়াতে চাইছে তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে একাধিক সরকারি এবং বেসরকারি বহুজাতিক সংস্থা। আগামী দিনে আইপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক দাবা লিগ শুরুর ভাবনাও রয়েছে বহুজাতিক সংস্থাগুলির।
ভারতীয় দাবা কর্তারা তো বটেই, আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের কর্তারাও মনে করছেন, দাবা অলিম্পিয়াড ভারতীয় দাবার ভবিষ্যৎ বদলে দেবে। দাবা অলিম্পিয়াড ঘিরে সাদা-কালো রঙে সেজে উঠেছে চেন্নাই। তুঙ্গে উন্মাদনা। দাবা নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ দেখে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক দাবা লিগের সলতে পাকাতে শুরু করেছেন কর্পোরেট সংস্থার কর্তারা। তাঁদের আশা, পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা গেলে সারা বিশ্বের সেরা দাবাড়ুদের অংশগ্রহণ সমস্যা হবে না। দাবা নিয়ে প্রবল উৎসাবের মুনাফা ঘরে তুলতে চাইছেন বহুজাতিক সংস্থাগুলির কর্তারা।
অলিম্পিয়াড সফল করতে ৯২ কোটি টাকা খরচ করছে তামিলনাড়ু সরকার। সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি। দাবা অলিম্পিয়াডের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো। আয়োজকদের দক্ষতায় খুশি বিদেশি দলগুলিও। খেলোয়াড়দের মতোই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দর্শকদের সুযোগ-সুবিধার দিকেও। অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে। সরাসরি খেলা দেখার সুযোগ থাকছে নেটমাধ্যমে। সর্বভারতীয় দাবা ফেডারেশনের (এআইসিএফ) সচিব ভরত সিংহ চৌহান বলেছেন, ‘‘দাবা খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের জন্য এই অলিম্পিয়াড এক নতুন অভিজ্ঞতা হবে। আমাদের তথ্য-প্রযুক্তি সহযোগী সংস্থা দর্শকদের জন্য সেরা ব্যবস্থা করেছে।’’
বহুজাতিক সংস্থাগুলির সাহায্যে এআইসিএফ কর্তারা চাইছেন দাবার জনপ্রিয়তা কয়েকগুণ বাড়িয়ে নিতে। আবার সহযোগী বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিও চাইছে দাবার মাধ্যমে নিজেদের প্রযুক্তি, দক্ষতা বিশ্বের সামনে মেলে ধরতে। পরিচিতি বাড়িয়ে নিতে। উভয়পক্ষের স্বার্থ এক জায়গায় মিলে যাওয়ায় দেশে দাবার ভবিষ্যৎ নিয়ে দারুণ আশাবাদী এআইসিএফ। যে ভবিষ্যতে উঠে আসবেন আরও বিশ্বনাথন আনন্দ, কোনেরু হাম্পি এবং প্রজ্ঞানন্দরা।
দাবা অলিম্পিয়াডকে সফল এবং আকর্ষণীয় করতে প্রচার ভিডিয়ো, ম্যাসকট ‘থাম্বি’, ছাড়াও ছোটদের প্রিয় বিভিন্ন সুপার হিরো চরিত্রকে ব্যবহার করেছে রাজ্য সরকার। শহরের বিভিন্ন শপিং মলে ত্রিমাত্রিক ছবি ব্যবহার করা হয়েছে প্রচারে। একটি বাণিজ্যিক সংস্থার কর্তা আর পার্থসারথী বলেছেন, ‘‘বিশ্বের সামনে নিজেদের পণ্যের প্রচারের জন্য এটা সুবর্ণ সুযোগ। এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থেকে আমরাও সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছি।’’ প্রতিযোগিতার তথ্য-প্রযুক্তি সহযোগী সংস্থার কর্তা জগদীশ মিত্র বলেছেন, ‘‘দাবার জগতে আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। খেলোয়াড় এবং দর্শক উভয় পক্ষেরই নতুন অভিজ্ঞতা হবে।’’
সব দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি লুকাজ টার্লে। তিনি বলেছেন, ‘‘চেন্নাইয়ের দাবা অলিম্পিয়াড সম্ভবত এখনও পর্যন্ত দাবার সেরা প্রতিযোগিতা হতে চলেছে। ১৮৬ দেশের ৩৪৩টি দল খেলছে। অংশ নিচ্ছেন দু’হাজারের বেশি খেলোয়াড়।’’ স্পেনের দাবাড়ু মিচেল রাহাল নেটমাধ্যমে লিখেছেন, ‘চেন্নাইয়েই সেরা দাবা অলিম্পিয়াড হচ্ছে।’
প্রতিযোগিতার টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ২০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকা। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া এবং সরকারি কর্মীদের জন্য এক নম্বর হলের টিকিটের দাম রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা এবং দুই নম্বর হলের টিকিটের দাম ২০০ টাকা। সাধারণ দর্শকদের জন্য টিকিটের দাম যথাক্রমে দুই এবং তিন হাজার টাকা। বিদেশি দর্শকদের জন্য টিকিটের দাম যথাক্রমে ছয় এবং আট হাজার টাকা। তুঙ্গে টিকিটের চাহিদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy