আমাদের ফুটবলার জীবন থেকেই চলে আসছে লড়াইটা। সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে বাংলা-গোয়া ম্যাচ মানেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরিবেশ। দুই যুধুধান প্রতিপক্ষের ভারত সেরা হওয়ার লড়াই। সে রকমই একটা ম্যাচ দেখতে রবিবার সন্ধেয় টিভির সুইচ অন করব।
কোচ হিসেবে এই দু’দলের সঙ্গেই কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে সন্তোষ ট্রফিতে। ১৯৯৯ সালে গত শতাব্দীর শেষ সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে চেন্নাইতে গোয়াকে ১-০ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলা। সেই গোয়া দলের কোচের দায়িত্বে ছিলাম আমি।
তার পরে দীর্ঘ দশ বছর আর সন্তোষ ট্রফি আসেনি বাংলার ঘরে। নতুন সহস্রাব্দে ফের যখন বাংলার ঘরে পরপর দু’বছর (২০১০ এবং ২০১১) সন্তোষ ট্রফি ঢোকে তখন আমি বাংলার কোচ।
গোয়া, বাংলা দু’জায়গাতেই ফুটবলের তুমুল জনপ্রিয়তা। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই ম্যাচে চাপটা বেশি বাংলার কোচের কাছে। সেই চাপ প্রত্যাশার। জিতলে ঠিক আছে। হারলেই গেল গেল রব উঠবে। তাই রবিবার বাংলা কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন।
সেমিফাইনালে মিজোরামকে হারানোর পর ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম মৃদুলকে। বলেছিলাম, ফাইনালে ঘরের মাঠে দর্শক সমর্থন পেতে পারে গোয়া। কিন্তু বাংলা এ বারের টুর্নামেন্টে শুরু থেকেই চ্যাম্পিয়নের মতো খেলছে। কোয়ার্টার ফাইনাল গ্রুপ লিগে এই গোয়ার বিরুদ্ধেই সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচটা জিতেই ফিরত বাংলা।
গোয়ার টিমে ডেম্পো, সালগাওকর, স্পোর্টিং ক্লুবের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ফুটবলার থাকতে পারে। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট হতে পারে গোয়ানরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিন্তু বাংলার বিরুদ্ধে গ্রুপের ম্যাচে ওদের রক্ষণ বেশ নড়বড় করেছে বলেই জেনেছি গোয়ার বন্ধুদের কাছ থেকে। কেরলকেও সেমিফাইনালে খুব সহজে হারাতে পারেনি। গ্রুপে মেঘালয়, সার্ভিসেস, কেরল, চণ্ডীগড় সবাই কিন্তু গোয়ার বিরুদ্ধে এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই গোল করেছে। মৃদুলের মতো পোড় খাওয়া কোচ গোয়ার রক্ষণের সেই ভুলভ্রান্তিগুলোকে কাজে লাগাবেই। আর চাপ দিলে গোয়া রক্ষণ ভেঙে পড়ে। তাই চাপ বাড়াতে হবে।
২০১০-এ সেমিফাইনালে এই গোয়াকেই টাইব্রেকারে হারিয়েই ফাইনালে গিয়েছিলাম আমরা। সেই ম্যাচের আগে ছেলেদের বলেছিলাম, একদম চিন্তামুক্ত হয়ে মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দাও। হারলে সব দায় আমার। ২০১০-এ জেতার পর অনেকে বলেছিলেন ঘরের মাঠে সুবিধা পেয়েছি আমরা। ২০১১ তে গুয়াহাটিতে ফাইনালে মণিপুরের বিরুদ্ধে নামার আগে ব্র্যাঙ্কো, বুধিরামদের বলেছিলাম, ঘরের বাইরেও যে বাঙালি ছেলেরা ভারত সেরা হতে পারে সেটা দেখাতে হবে তোমাদের।
এই বাংলা দলেও সেই জেতার মরিয়া মনোভাবটা রয়েছে। দিন কয়েকের জন্য হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে কলকাতায় এসেছি বিশেষ কাজে। বাড়ি ফেরার আগে মৃদুলের কাছ থেকে সন্তোষ জয়ের সুখের মুহূর্তটা উপহার চাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy