Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

ট্রফি জিতিয়ে বার্সা ছাড়ার ইঙ্গিত ইনিয়েস্তার, সিদ্ধান্ত কয়েকদিনেই

লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়ার ছয় বছরের মধ্যেই বার্সেলোনার সিনিয়র দলে সুযোগ পান ইনিয়েস্তা। ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাব ব্রুখের বিরুদ্ধে যখন মাঠে নামেন, তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৮।

জুটি: বার্সেলোনার জার্সি গায়ে কোপা দেল রে ফাইনালে সেভিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের পরে উল্লাস লিয়োনেল মেসি ও আন্দ্রে ইনিয়েস্তার। ছবি:গেটি ইমেজেস

জুটি: বার্সেলোনার জার্সি গায়ে কোপা দেল রে ফাইনালে সেভিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের পরে উল্লাস লিয়োনেল মেসি ও আন্দ্রে ইনিয়েস্তার। ছবি:গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫১
Share: Save:

সেভিয়া ০ : বার্সেলোনা ৫

কোপা দেল রে-তে টানা চার বার চ্যাম্পিয়ন। অথচ উৎসবের বদলে শোকের আবহ বার্সেলোনা শিবিরে। আর কখনও যে কোপা দেল রে-তে বার্সেলানোর হয়ে খেলতে দেখা যাবে না তাঁকে। তিনি— আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। সেভিয়াকে পাঁচ গোলে চূর্ণ করে বার্সেলোনাকে কাপ জিতিয়ে চোখের জলে মাঠ ছাড়লেন বিশ্ব ফুটবলে সর্বকালের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার।

স্পেনের ফুয়েনতিয়ালবিয়া গ্রামে ১৯৮৪ সালের ১১ মে জন্ম ইনিয়েস্তার। ১২ বছর বয়সে বার্সেলোনার অ্যাকাডেমি লা মাসিয়ায় ভর্তি করে দেন বাবা। ছোট্ট ইনিয়েস্তা বাবা-মাকে ছেড়ে থাকার যন্ত্রণায় কাঁদতেন। শেষ পর্যন্ত তিনি লা মাসিয়ায় থাকতে রাজি হয়েছিলেন এই শর্তে যে, বাবা-মা যখন তাঁকে দেখতে আসবেন, তখন হোটেলে তাঁদের সঙ্গে থাকতে দিতে হবে। এক সাক্ষাৎকারে ইনিয়েস্তা বলেছেন, ‘‘ওই দিনগুলো ছিল আমার জীবনের সব চেয়ে যন্ত্রণার। পরিবার ছেড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে থাকাটা একেবারেই সহজ নয়। সব ছেড়ে ফিরে যেতে চাইতাম বাবা-মার কাছে।’’

লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়ার ছয় বছরের মধ্যেই বার্সেলোনার সিনিয়র দলে সুযোগ পান ইনিয়েস্তা। ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাব ব্রুখের বিরুদ্ধে যখন মাঠে নামেন, তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৮। ২২ বছরের সেই সম্পর্ক যখন ছিন্ন হচ্ছে, তখন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাটাই স্বাভাবিক। শনিবার রাতে কোপা দেল রে ফাইনালে দলকে চ্যাম্পিয়ন করে ৮৮ মিনিটে যখন মাঠ ছাড়ছেন, তখন আর নিজেকে সামলাতে পারেননি আধুনিক ফুটবলের এই শিল্পী। রিজার্ভ বেঞ্চে বসেও কাঁদছিলেন।

সেভিয়ার বিরুদ্ধে ৫২ মিনিটে গোল করেন ইনিয়েস্তা। বার্সেলোনা অবশ্য প্রথমার্ধেই এগিয়ে গিয়েছিল লুইস সুয়ারেস ও লিয়োনেল মেসির যুগলবন্দিতে। ১৪ মিনিটে প্রথম গোল করেন উরুগুয়ে তারকা। ৩১ মিনিটে গোল মেসির। ৪০ মিনিটে ফের গোল করেন সুয়ারেস। আর ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে গোল ফিলিপে কুটিনহোর।

শনিবার রাতে কান্না সামলাতে পারেননি স্টেডিয়ামের দর্শকরাও। তাঁরা কী করে ভুলবেন ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসির বিরুদ্ধে সংযুক্ত সময়ে গোল করে বার্সেলোনাকে ফাইনালে তোলার স্মৃতি। বার্সেলোনার হয়ে এখনও পর্যন্ত ৬৭০টি ম্যাচ খেলেছেন। জিতেছেন ৩১টি ট্রফি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আটটি লা লিগা খেতাব ও চার বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের গৌরব। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে ইনিয়েস্তার করা গোলেই যে প্রথম বার বিশ্বসেরা হয় স্পেন।

মেসি, ইনিয়েস্তা ও জাভি হার্নান্দেজের জন্যই বিশ্বের সেরা ক্লাব হয়ে উঠেছিল বার্সেলোনা। তিন জনের বোঝাপড়া ছিল প্রতিপক্ষের আতঙ্ক। তিন বছর আগে বার্সেলোনা ছাড়েন জাভি। আগামী মরসুম থেকে দেখা যাবে না ইনিয়েস্তাকেও। বার্সেলোনা তারকা বলেছেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE