শাসন: ধর্মশালায় আগ্রাসী জস হেজল্উড। রয়টার্স
ধর্মশালার পাহাড়ে ঘেরা মনোরম পরিবেশে ভারতীয় দলও কি ঠান্ডা হয়ে গেল? নাকি বিরাট কোহালির অনুপস্থিতি কেড়ে নিয়েছে তাদের আক্রমণাত্মক শরীরী ভাষাটাই?
রবিবার সিরিজ ফয়সালার টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সেই প্রশ্নটা বার বার উঠল। সময়-সময় ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দেখে মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা নিজেদের দেশে নয়। তাঁরা খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে।
প্রথম ইনিংসে স্টিভ স্মিথদের ৩০০ রানের জবাবে ভারতীয় দল দ্বিতীয় দিনের শেষে ২৪৮-৬। এখনও ৫২ রানের ঘাটতি রয়েছে। হাতে রয়েছে চার উইকেট। রাঁচীতে সেঞ্চুরি করা ঋদ্ধিমান সাহা (১০) এবং রবীন্দ্র জাডেজা (১৬) অপরাজিত আছেন। ঋদ্ধির সহজ ক্যাচ স্লিপে ফেলে দিয়েছেন রেনশ। সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়, সোমবার সকালে প্রথম ঘণ্টাতেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
স্কোরবোর্ড যেটা বলছে না, তা হচ্ছে ভারতীয়দের অতি রক্ষণাত্মক ব্যাটিং। সারা দিন ধরে অস্ট্রেলীয়রাই বেশি চোখ রাঙিয়ে গেলেন। জস হেজ্লউড মুখের ওপর এসে চেঁচিয়ে গেলেন। নেথান লায়ন উইকেট নিয়ে সিংহ গর্জন করলেন। সমবেত ভাবে অস্ট্রেলীয় ফিল্ডাররা দুর্দান্ত আগ্রাসন দেখালেন। আর ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা খোলসে ঢুকে থাকলেন সারা দিন ধরে। এখনও পর্যন্ত ৯১ ওভার ব্যাট করে তাঁদের রান রেট ২.৭২। এখনকার টি-টোয়েন্টি যুগে যা ভাবাই যায় না।
আরও পড়ুন: দলগত সাফল্যেই ভারতসেরা বাংলা
এই ছবিই বলে দিচ্ছে কাদের বেশি আক্রমণাত্মক দেখিয়েছে।
কোহালির জায়গায় যিনি অধিনায়কত্ব করছেন, সেই অজিঙ্ক রাহানে পেসারদের আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেললেন। কিন্তু স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভীষণ রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করলেন। আর তার সুযোগ নিয়ে ম্যাচে ফিরলেন লায়ন-রা। রাহানের তবু স্ট্রাইক রেট ৪৪। দু’রান করা ব্যাটসম্যান কে এল রাহুল এবং চেতেশ্বর পূজারা যে রকম ঢিমে গতিতে ব্যাট করলেন, তাতে প্রশ্ন জাগছে ভারত টেস্ট বাঁচানোর খেলা খেলছে না জেতার জন্য ঝাঁপাবে? পূজারা ৫৭ করতে নিলেন ১৫১ বল। স্ট্রাইক রেট ৩৭.৭৪। করুণ নায়ার টিকলেন ১৬ বল। করলেন ৫ রান। তাঁরও স্ট্রাইক রেট ৩১.২৫। এই গতিতে রান করা যেন ম্যাচ ড্র করতে চাওয়ারই ইঙ্গিত। যা বিরাট কোহালি মাঠে না থাকার ফল কি না, বোঝা যাচ্ছে না। প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়া যেখানে ৩.৩৮-এর গড়ে রান তুলেছে, সেখানে ভারত এত গতিহীন কেন? দিনের শেষে সে প্রশ্ন রয়েই গেল।
দ্বিতীয় দিনের শেষে বলতেই হচ্ছে, অ্যাডভ্যান্টেজ অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি, এই প্রশ্নও থাকছে যে অতি রক্ষণাত্মক মনোভাব দেখিয়ে ভারতই সুবিধেটা স্মিথদের হাতে তুলে দিল কি না। বিশেষ করে অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের একেবারেই পাল্টা আক্রমণ করতে না চাওয়াটা ভীষণ ভাবেই চোখে পড়েছে। লায়ন চারটি উইকেট নিলেন যতটা না স্পিনের কারিকুরিতে, তার চেয়েও বেশি ভারতীয়দের মানসিক দিক থেকে পর্যুদস্ত করে।
স্টিভ ও’কিফ সাংঘাতিক কিছুই বল করছিলেন না। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধেও অযথা আতঙ্কিত হয়ে থাকলেন রাহানে-রা। কোনও ঝুঁকিই তাঁরা নিলেন না। ও’কিফ ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ২.৮৭। যা দেখে মনে হতেই পারে তাঁকে অতিরিক্ত সম্মান করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy