গত কয়েক মাস ধরে ভারতে টেস্ট সিরিজে ‘র্যাঙ্ক টার্নার’ দেওয়া নিয়ে কম অভিযোগ শুনিনি। আসলে কয়েক বছর ধরে যে রকম চলছে, তাতে এটা অস্বাভাবিকও নয়। কিন্তু রাজকোটে তো দেখছি যথেষ্ট ভাল উইকেট। এ রকম উইকেটে খেলা হলে ভারতীয় ক্রিকেটারদেরই লাভ হবে। সব রকম কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভাল খেলাটাই তো একজন ক্রিকেটারের আসল কোয়ালিটি। আর এমন ক্রিকেটারে ভরা দলকেই সারা দুনিয়া কুর্নিশ করে।
এ রকম কন্ডিশনে পেসারদের দায়িত্ব অনেক বেশি। তাই আমাদের পেসাররাও নিশ্চয়ই নিজেদের পারফরম্যান্সে আরও উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করবে। টিমের মধ্যে সে রকম একটা মানসিকতাও তৈরি হওয়া দরকার। স্পিনাররা ভাল বল করতে পারছে না, এমন আলোচনাও চলছে। কিন্তু সব সময় অশ্বিন, জাডেজারাই বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের উড়িয়ে দেবে, সেটা আবার হয় না কি?
রাজকোট টেস্টের দ্বিতীয় দিনের পর যা অবস্থা, তাতে ভারতকে এখন ম্যাচে থাকতে গেলে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে। উপমহাদেশে বরাবরই টস ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর এই টেস্টে ইংল্যান্ড টস জেতার সুযোগটাকে যে ভাবে কাজে লাগাল, তার প্রশংসা করতেই হচ্ছে।
গত দশ বছর ধরেই ইংল্যান্ড উপমহাদেশে ভাল খেলে আসছে। মনে হচ্ছে এ বারের সফরে ওরা ওদের সেই সুনামটা ধরে রাখতেই এসেছে। জো রুট, মইন আলি, বেন স্টোকসদের এই পারফরম্যান্সে আমি খুব একটা অবাক হইনি। এই দলটার ব্যাটিং গভীরতা যথেষ্ট ভাল। যে দলের এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান স্টুয়ার্ট ব্রড, সেই দলকে সহজে কাবু করা যায় না। তাই বেশ খাটতে হবে বিরাট কোহালিদের।
অশ্বিন ৪৬-৩-১৬৭-২ বনাম ইংল্যান্ড ব্যাটিং
রুট ৫৪ বল, ৩৯ রান। বাউন্ডারি ৪
স্টোকস ৫৮ বল, ৩৯ রান। বাউন্ডারি ৪, ওভারবাউন্ডারি ১
মইন ৭১ বল, ৪০ রান। বাউন্ডারি ৪
বেয়ারস্টো ১৪ বল, ১০ রান। বাউন্ডারি ১
আপাতত ফলোঅন বাঁচানোটাই প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত ভারতের। তার পর বড় রানের দিকে যাওয়া। যে টিমটা টানা পাঁচটা সেশন ফিল্ডিং করেছে, তাদের পক্ষে আরও এ রকম চার-পাঁচটা সেশন উইকেটে টিকে থেকে বড় ইনিংস গড়া মোটেই সহজ হবে না। কিন্তু মুরলী বিজয়, গৌতম গম্ভীররা শুরুটা যে ভাবে করল, তাতে ওরা ওদের কঠিন মানসিকতাটা বুঝিয়ে দিচ্ছে। শুক্রবার ওরা এটা ধরে রাখতে পারলে ভারত লড়াইটা করতে পারবে নিশ্চয়ই। তৃতীয় দিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বড় পরীক্ষা।
তবে অঙ্কটা সোজা। উইকেটে পড়ে থাকতে হবে বিরাটদের। ইংল্যান্ডের যতটা সম্ভব কাছাকাছি পৌঁছতে হবে। ভারতীয়রা যত বেশি সময় উইকেটে টিকে থাকবে, তত ইংল্যান্ডের হাতে সময়টা কমে যাবে। আর উপমহাদেশে টেস্টের শেষ দু’দিনে খেলা কত তাড়াতাড়ি ঘুরে যায়, তা অনিল কুম্বলের চেয়ে ভাল আর ক’জন জানে?
স্কোর
ইংল্যান্ড (প্রথম ইনিংস, আগের দিন ৩১১-৪-এর পর)
ভারত (প্রথম ইনিংস)
মইন বো শামি ১১৭
স্টোকস ক ঋদ্ধিমান বো উমেশ ১২৮
বেয়ারস্টো ক ঋদ্ধিমান বো শামি ৪৬
ওকস ক ঋদ্ধিমান বো জাডেজা ৪
রশিদ ক উমেশ বো জাডেজা ৫
আনসারি এলবিডব্লিউ বো মিশ্র ৩২
ব্রড নআ ৬
অতিরিক্ত ১০
মোট ৫৩৭
পতন- ৪৭, ৭৬, ১০২, ২৮১, ৩৪৩, ৪৪২, ৪৫১, ৪৬৫, ৫১৭, ৫৩৭।
বোলিং- শামি ২৮.১-৫-৬৫-২, উমেশ ৩১.৫-৩-১১২-২,
অশ্বিন ৪৬-৩-১৬৭-২, জাডেজা ৩০-৪-৮৬-৩, মিশ্র ২৩.৩-৩-৯৮-১।
ভারত (প্রথম ইনিংস)
মুরলী নআ ২৫
গম্ভীর নআ ২৮
অতিরিক্ত ১০
মোট ৬৩-০।
বোলিং- ব্রড ৫-১-২০-০, ওকস ৭-২-১৭-০,
মইন ৬-২-৬-০, আনসারি ৩-০-৩-০, রশিদ ২-০-৮-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy