চ্যাম্পিয়ন: লিগ সেরা হয়ে ইস্টবেঙ্গল। ইডেনে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ম্যাচ শেষে তখন ইডেন জুড়ে চলছে উৎসব। তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে ইস্টবেঙ্গল ডাগআউটে স্বস্তির আমেজ। অর্ণব নন্দী থেকে শুরু করে বি অমিত, সবার মুখে তখন হাসি। লাল হলুদের ছবিটা যেন উচ্ছ্বাসের। হবেই বা না কেন। সিএবি লিগ চ্যাম্পিয়নের তকমা আবার বসল ইস্টবেঙ্গলের পাশে।
তৃতীয় দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জয় তুলে আনল ইস্টবেঙ্গল। ২১২ রানে শেষ হল টাউনের ইনিংস। ১৫৪ রানে জিতে আবার লিগ চ্যাম্পিয়নের মুকুট ফেরত পেল সব্যসাচী শীলের দল।
ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অর্ণব নন্দী আগেই সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিলেন বিপক্ষকে। জানিয়ে দিয়েছিলেন ৩৫০ রানের মতো তুলতে পারলে জিতবে লাল হলুদ। হল ঠিক তাই। প্রথমে ব্যাট করে ৩৬৬ তুলেছিল ইস্টবেঙ্গল। জবাবে বি অমিতের বিধ্বংসী স্পেলের সৌজন্যে টাউন ব্যাটিংয়ে নামল ধস। ৬ উইকেট তুলে টাউনকে ২১২ রানে অলআউট করতে সাহায্য করলেন অমিত।
ম্যাচের শেষে স্বভাবতই অমিতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দলের অধিনায়ক। অর্ণব বললেন, ‘‘আমি আগেই বলেছিলাম এই পিচে বাউন্স আছে। পেসারদের সুবিধা হবে বল করতে। তাতেও বলব অমিত অবিশ্বাস্য বল করেছে।’’ অর্ণবের মতে রঞ্জি খেলার মতো প্রতিভা আছে অমিতের মধ্যে। ‘‘অমিত রঞ্জি খেলার যোগ্য। আমি অবাক ও কেন সুযোগ পাচ্ছে না বাংলা দলে,’’ বললেন অর্ণব। ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অর্ণব আরও বললেন, ‘‘গত দশ বছরে এই নিয়ে সাত বার আমরা জিতলাম। এর থেকে বোঝা যায় আমরা কতটা ধারাবাহিক।’’
টাউন ম্যাচে বল হাতে কেরামতি দেখালেও সেমিফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে নায়ক হয়েছিলেন অমিত। শেষের দিকে নেমেও মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ১০০ করেছিলেন অমিত। জানা গেল, ইস্টবেঙ্গলের ধারাবাহিক এই ক্রিকেটার বাংলায় জন্মগ্রহণ করলেও অমিতের পরিবার অন্ধ্রপ্রদেশের। বাদুপল্লি অমিত অবশ্য পরিষ্কার বাংলা বলতে পারেন। অমিত বললেন, ‘‘আমার স্বপ্ন ছিল লিগে বড় ম্যাচগুলোয় ভাল খেলব। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছি। টাউন ম্যাচে রান না পেলেও আমার স্ট্র্যাটেজি ছিল যত দ্রুত সম্ভব উইকেট তুলব। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ম্যাচটা জিততে পারব।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘টাউন শেষ ম্যাচে ভবানীপুরের সঙ্গে বড় রান তাড়া করে জিতেছিল। টাউনকে ২৫০-র কমে অলআউট করতে পারাটা প্রমাণ করছে আমরা দারুণ খেলেছি।’’
আরও পড়ুন: ট্রফি দিয়েই বিদায় নিলেন এনরিকে
দ্বিতীয় দিনের শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫০ তুলে লড়াইয়ে ছিল টাউন। কিন্তু তৃতীয় দিনে মাত্র ৬২ রান যোগ করে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে টাউনের ব্যাটিং লাইন আপ। শেষ দিনে অমিত তিন উইকেট নেন।
ইস্টবেঙ্গলের জয়ের নায়ক দু’বছর আগে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব মোহনবাগানে ছিলেন। গ্লেন ম্যাকগ্রার ভক্ত অমিতের বাবা এখন চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। ‘‘আমার বাবা সব সময় উৎসাহ দেন যাতে ভাল খেলতে পারি। আশা করছি বাংলার হয়ে রঞ্জি খেলব,’’ বললেন অমিত। ইস্টবেঙ্গল কোচ সব্যসাচী শীল বললেন, ‘‘আমাদের মধ্যে একাত্মতা আছে। সবাই দলকে সাহায্য করতে চায়। এই জন্যই চ্যাম্পিয়ন হলাম। দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy