Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ফিটনেস আর বিশ্বাসটাই সাফল্যের মন্ত্র: শ্রীকান্ত

প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগের প্রথম ম্যাচে তাঁর দল আওয়াধি ওয়ারিয়র্সের লড়াই গত বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই স্ম্যাশার্সের বিরুদ্ধে। কিদম্বি শ্রীকান্ত যা বললেন.....

দুরন্ত: স্বপ্নের ফর্মে কিদম্বি শ্রীকান্ত। জয় দিয়ে শুরু পিবিএলেও।

দুরন্ত: স্বপ্নের ফর্মে কিদম্বি শ্রীকান্ত। জয় দিয়ে শুরু পিবিএলেও।

শমীক সরকার
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৫
Share: Save:

এ বছরটা কাটিয়েছেন স্বপ্নের মতো। সুপার সিরিজ জিতেছেন চারটি। যে কৃতিত্ব ভারতীয় পুরুষ খেলোয়াড়দের মধ্যে এর আগে কারও নেই। প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগের প্রথম ম্যাচে তাঁর দল আওয়াধি ওয়ারিয়র্সের লড়াই গত বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই স্ম্যাশার্সের বিরুদ্ধে। সেই চ্যালেঞ্জে নামার আগে শনিবার সাক্ষাৎকারে তিনি—
কিদম্বি শ্রীকান্ত যা বললেন.....

প্রশ্ন: গত বার পিবিএলে সদ্য চোট সারিয়ে নেমেছিলেন। তার পরে গোটা মরসুমেই দুরন্ত ফর্ম দেখিয়েছেন। এ বারও দুবাইয়ে চোট থেকে ফেরার পরে এটাই আপনার প্রথম টুর্নামেন্ট। অনেকে বলছেন, পিবিএল আপনার জন্য সৌভাগ্য নিয়ে আসে। আপনি কী চোখে দেখেন এই টুর্নামেন্টকে?

কিদম্বি শ্রীকান্ত: পিবিএলে ফিটনেস পরীক্ষা করার খুব ভাল সুযোগ পেয়েছিলাম গত বার। অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম। আমার কাছে পিবিএল হল নতুন মরসুম শুরুর আগে ম্যাচ প্র্যাকটিস করার দারুণ সুযোগ পাওয়া। যাতে আত্মবিশ্বাস বেশ খানিকটা বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

প্র: পিবিএলকে অনেকে প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট বলছেন। কারণ, এর ফর্ম্যাট আলাদা। বেশ কিছু দিন ধরে চলে বলে চাপও অনেকটা কম থাকে। আপনার কী মনে হয়?

শ্রীকান্ত: প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট বলব না। কারণ প্রত্যেক টিমেই দারুণ দারুণ খেলোয়াড়রা আছে। কঠিন লড়াই হয়। আমার কাছে পিবিএল গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। গত বারও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম (আওয়াধি ওয়ারিয়র্স সেমিফাইনালে উঠেছিল গত বার)। এ বারও একই ভাবে চেষ্টা করব সেরাটা দেওয়ার।

প্র: চোট থেকে ফিরে মাত্র একটা টুর্নামেন্ট খেলেছেন। তার পরেই পিবিএলে নামছেন। আপনার ফিটনেস এখন কেমন?

শ্রীকান্ত: আমি এখন ফিট। টানা প্র্যাকটিসও করছি। আন্তর্জাতিক সার্কিটের বাইরে ছিলাম প্রায় এক মাস। তাই আশা করছি পিবিএলে প্রয়োজনীয় ম্যাচ প্র্যাকটিসের সুযোগ পাব আসন্ন মরসুমে সুপার সিরিজ শুরু হওয়ার আগে।

প্র: আপনার কী মনে হয়, টানা দুটো টুর্নামেন্ট খেলার পরে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে না নামলে হয়তো চোটটা এড়াতে পারতেন?

শ্রীকান্ত: হয়তো পারতাম। কারণ, সেই সময় আমাকে দু’সপ্তাহে ১০টা ম্যাচ খেলতে হয়েছিল (ডেনমার্ক ওপেন ও ফরাসি ওপেন সুপার সিরিজ)। হয়তো জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে না খেললে চোটটা এড়াতে পারতাম।

প্র: আসন্ন মরসুমে ঠাসা সূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই সাইনা নেহওয়াল এবং ক্যারোলিনা মারিন অসন্তোষ দেখিয়েছেন। আপনি কী ভাবে এই চ্যালেঞ্জ সামলানোর পরিকল্পনা করেছেন?

শ্রীকান্ত: নিশ্চিত ভাবে আসন্ন মরসুমে সূচি খুব কঠিন। আমাদের কমনওয়েলথ গেমস আর এশিয়ান গেমসও খেলতে হবে। সাইনা আর ক্যারোলিনা তাদের মত জানিয়েছে। আমি সে ব্যাপারে মন্তব্য করব না।

প্র: আপনার পরিকল্পনা কী? বেছে বেছে টুর্নামেন্ট খেলা?

শ্রীকান্ত: নিশ্চয়ই। ফিটনেসকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব তো দিতেই হবে। তবে এখনও কোনও পরিকল্পনা করিনি। যথেষ্ট সময় রয়েছে। দেখা যাক কী হয়।

প্র: ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়রা চলতি মরসুমে দুরন্ত পারফর্ম করেছে। আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে ভারত এখন অন্যতম বড় শক্তি। আপনি সিন্ধু, সাইনা ছাড়াও এইচ এস প্রণয়, বি সাই প্রণীত সাফল্য পেয়েছেন। এর কারণ কী?

শ্রীকান্ত: এই সাফল্য রাতারাতি আসেনি। আমরা গত তিন-চার বছর ধরে যে ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, তার বড় ভূমিকা রয়েছে এই সাফল্যের পিছনে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সফল হতে গেলে দুটো জিনিস সবচেয়ে জরুরি। আত্মবিশ্বাস আর ফিটনেস। আমাদের মধ্যে এখন এই বিশ্বাসটা গেঁথে গিয়েছে যে আমরাও পারি। তার প্রতিফলন কোর্টে দেখা যাচ্ছে।

প্র: ভারতের কোচিং দলে প্রাক্তন বিশ্বসেরা তৌফিক হিদায়েতের প্রাক্তন কোচ মুলো হান্দোয়ো যোগ দেওয়ার পরে খেলোয়াড়দের ফিটনেসে অনেক উন্নতি হয়েছে বলা হচ্ছে। আপনার কী মত?

শ্রীকান্ত: নিশ্চিত ভাবে উনি কোচিং দলে আসার পরে আমরা উপকৃত হয়েছি। ওঁর প্রায় তিরিশ বছর কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার প্রভাব আমাদের পারফরম্যান্সে ফুটে উঠছে।

প্র: আন্তর্জাতিক সার্কিটে আপনার সাফল্য ভক্তদের আশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রত্যেক টুর্নামেন্টে যে প্রত্যাশা ক্রমশ ছাপিয়ে যাচ্ছে, কী ভাবে সামলান এই চাপ?

শ্রীকান্ত: আমার কাছে এটা কোনও চাপ নয়। কারণ আমি টুর্নামেন্টের ফলাফল নিয়ে ভাবি না। প্রথমে হারলে পরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। লক্ষ্য থাকে সেরাটা দেওয়ার উপর।

প্র: দুবাই সুপার সিরিজ ফাইনালসে আপনার উপর অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু পরপর দুটো ম্যাচে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান। সদ্য চোট সারিয়ে ফিরে আসাটাই কি চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন করে দিয়েছিল?

শ্রীকান্ত: সুপার সিরিজ ফাইনালসের মতো টুর্নামেন্টে মরসুমের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে খেলতে হয়। ভুলের কোনও সুযোগ নেই। একটা ভুল করলে ফিরে আসা কঠিন হয়ে যায়। তাই তো বলছি ম্যাচ প্র্যাকটিসটা এত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, পিবিএলে ম্যাচ প্র্যাকটিস আর আত্মবিশ্বাস দুটোই আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসন্ন মরসুমে একই রকম সফল হতে পারব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE