শেষ মুহূর্তে গোল। ভক্তদের কাছে প্লাজা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
গত মরসুমে নজর কেড়েও হারিয়ে গিয়েছিলেন শেষ ধাপে গিয়ে। নতুন মরসুমের দল গড়তে গিয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের তালিকায় প্রথমে ছিল না তাঁর নাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোচ খালিদ জামিলের ইচ্ছায় দলভুক্ত করা হয় তাঁকে। শনিবার কল্যাণীর ডার্বিতে মহমেডানের বিরুদ্ধে গোল করে ইস্টবেঙ্গলের হার বাঁচালেন লাল-হলুদ সমর্থকদের প্রিয় ডব্লিউ পি নাইন। ম্যাচ শেষে উইলিস প্লাজা একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।
প্রশ্ন: গোল করার পর মহমেডানের দিপান্দা ডিকার মতো ফেন্সিং বেয়ে সমর্থকদের দিকে চলে যাচ্ছিলেন কেন?
উইলিস প্লাজা: (হাসতে হাসতে) না, ডিকাকে নকল করতে যাইনি তখন। আমরা যখন পিছিয়ে ছিলাম, তখন ওই সমর্থকরাই আমাদের উজ্জীবিত করছিল। তাই গোল করেই ওদের কাছে চলে গিয়েছিলাম ধন্যবাদ জানাতে। খুব টেনশন হচ্ছিল শেষের দিকে। তাই অতি উৎসাহে ফেন্সিং-এ চড়ে বসেছিলাম।
প্র: মহম্মদ আল আমনা ও আপনার গোলের মধ্যে কোনটা সেরা?
প্লাজা: অবশ্যই আমনার গোল। যে ভাবে বুকে বল নামিয়ে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দিল, সেটা দেখে আমিও মুগ্ধ।
প্র: এ বারের কলকাতা লিগে আপনার গোল মাত্র দুই। সমর্থকরা কিন্তু আজ থেকেই শিলিগুড়িতে আপনার গোল দেখার প্রতীক্ষায় থাকলেন।
প্লাজা: ডার্বির কথা পরে হবে। তার আগে কিন্তু আমাদের ম্যাচ রয়েছে মঙ্গলবার। সেই ম্যাচ শুধু জিতলেই হবে না। বেশি গোলও করে রাখতে হবে। কারণ গোল পার্থক্যে আমরাই এগিয়ে। ফলে ডার্বি ড্র হলে সেক্ষেত্রে লিগ জিততে আমাদের সুবিধা হবে। তাই ড্রেসিংরুমে ফিরেই কোচ বললেন, এই ডার্বি ভুলে যাও। মোহনবাগান ম্যাচের আগে টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে আমাদের বড় ব্যবধানে জিততেই হবে। তার পরে ডার্বির অঙ্ক।
প্র: আপনার তুমুল সমালোচনা করা হচ্ছিল এত দিন। কিন্তু আজ তো আপনার জন্যই হার বাঁচল। সেই সব সমালোচকদের কথা মনে পড়ছে?
প্লাজা: সমালোচকদের কথা ভেবে ফুটবল খেলি না। আমি জানি কী করতে পারি। সমালোচক নয়। আমি দায়বদ্ধ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছে। আর কৃতজ্ঞ আমাদের কোচ খালিদ জামিলের কাছে। তিনি আমাকে সই করাতে বলেছিলেন। সেই আস্থার মূল্য দিতে পেরেছি।
প্র: আজকের ম্যাচ ধরলে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের প্রিয় ডব্লিউ পি নাইনের গোল মাত্র দুই। সমর্থকদের প্রত্যাশা আপনার কাছে কিন্তু অনেক বেশি।
প্লাজা: কোনও সমস্যা হয়নি। আগে আমি একশো শতাংশ ম্যাচ ফিট ছিলাম না। এখন সেই ফিটনেস ফিরে পেয়েছি। ফলে পরবর্তী ডার্বিতে সমর্থকদের মুখে হাসি উপহার দিতেই পারি। ওদের একটু ধৈর্য ধরতে বলুন। আমার সেরা ম্যাচটা ডার্বিতে খেলতে চাই। এত দিন গোল পাচ্ছিলাম না বলে সবাই সমালোচনা করছিলেন। জানি, ডার্বিতে গোল করলেই সেই মুখগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সেটা নিয়েই ভাবতে চাই। অন্য কিছু নয়।
প্র: তার মানে বলছেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও আপনার কাছ থেকে গোল আশা করা যেতে পারে?
প্লাজা: আশা দিয়ে কিন্তু ফুটবলের ব্যাখ্যা চলে না। তবে আমি এখন হারানো ছন্দটা পেয়ে গিয়েছি। আর মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বি নতুন খেলছি না। গত বছরও তো খেলেছি। ফলে জানি ওই ম্যাচের গুরুত্ব।
প্র: গত আই লিগে শিলিগুড়িতে জোড়া ডার্বিতে আপনার পারফরম্যান্স কিন্তু মোটেই আহামরি ছিল না। সমর্থকরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
প্লাজা: আমি নিজেও সেটা জানি। সেই আক্ষেপ এ বার পুরোপুরি মিটিয়ে নিতে চাই। জানি এ বার কলকাতা লিগ জিতলে আমার ক্লাব ইস্টবেঙ্গল আট বার কলকাতা লিগ ঘরে তুলবে। তাই আজ রাত থেকে একটাই স্বপ্নই দেখব।
প্র: সেই স্বপ্নটা কী?
প্লাজা: উইলিস প্লাজার গোলে শিলিগুড়িতে ডার্বি জিতছে ইস্টবেঙ্গল। এটাই স্বপ্ন এবং সফল করার জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখব না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy