চ্যাম্পিয়ন: এ ভাবেই জাকার্তা এশিয়ান গেমসে দুরন্ত লড়াই করে অলিম্পিক্সে সেরা উজবেকিস্তানের হাসানবয় দুসমাতভকে হারিয়ে ভারতকে সোনা এনে দিলেন হরিয়ানার বক্সার অমিত পাংঘাল। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
অমিত পাংঘাল। তাঁর অমিত বিক্রমে ধরাশায়ী হলেন অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন ও এশীয় সেরা বক্সার হাসানবয় দুসমাতভ। বক্সিংয়ের ৪৯ কেজি বিভাগে সোনা জিতে চমকে দিলেন বাইশ বছরের এই ভারতীয় সৈনিক। এর আগে সাত জন ভারতীয় বক্সার এশিয়ান গেমস থেকে সোনা জিততে পেরেছিলেন। অমিত হলেন অষ্টম জন।
জাকার্তায় এ বার কোনও ভারতীয় বক্সারই ফাইনালে উঠতে পারেননি। ব্যতিক্রম অমিত। দুসমাতভকে তিনি হারালেন পুরোপুরি ট্যাকটিক্যাল উৎকর্ষে ৩-২ স্কোরে। এই একই স্কোরে দুসমাতভের কাছেই গত বছরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়শিপে হেরেছিলেন। অর্থাৎ জাকার্তায় অমিত আক্ষরিক অর্থে বদলা নিলেন।
এমনিতে অমিতের এটাই প্রথম এশিয়ান গেমস। এবং ৪৯ কেজি বিভাগে গোটা প্রতিযোগিতা জুড়েই দেখা গেল তাঁর অসাধারণ টেকনিক্যাল দক্ষতা। যেটা না থাকায় এ বার বেশির ভাগ ভারতীয় বক্সারই ব্যর্থ হয়েছেন। অমিতের সোনা বাদে বক্সিং থেকে প্রাপ্তি বলতে বিকাশ কৃষাণের ব্রোঞ্জ।
একই সঙ্গে হামবুর্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে হারের প্রতিশোধ ও এশিয়ান গেমসে সোনা জিতে উল্লসিত হরিয়ানার অমিত বললেন, ‘‘আগে ওর কাছে আমি হেরেছি। তাই আজকের জয়টা অবশ্যই প্রতিশোধ নেওয়া। কোচ সান্তিয়াগো (নিয়েভা) ও অন্য কোচেরা আমাকে দারুণ ভাবে তৈরি করেছেন। সেমিফাইনালে আমি প্রথম রাউন্ডে ভাল লড়তে পারিনি। ফাইনালে সেই ভুল আর করিনি।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘কোচ আমাকে বলেছিলেন, সুযোগ পেলেই প্রতিআক্রমণে যেতে। ইংল্যান্ডে এবং জাতীয় শিবিরে অনুশীলন করে আমি দারুণ উপকৃত হয়েছি। এখন আমি আপার কাটের সুবিধা দারুণ ভাবে নিচ্ছি।’’ অমিতের কোচ নিয়েভা বলেছেন, ‘‘জানতাম উজবেকিস্তানের এই বক্সার আক্রমণ করতে ভালবাসে। তাই অমিতকে বলে দিয়েছিলাম, একটু দূরে দূরে থাকতে। সেমিফাইনালে ও ভাল লড়তে পারেনি। কিন্তু আজ ফাইনালে ঘুসিগুলো ঠিক ঠিক জায়গায় লাগিয়েছে। শেষ দিকে দুসমাতভ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। অমিত তারও সুবিধা নিয়েছে।’’ প্রসঙ্গত এশিয়ান গেমসের বক্সিং থেকে ভারত শেষ সোনা জিতেছিল ২০১০-এ। সে বার বিজেন্দ্র সিংহ ও বিকাশ কৃষাণ সোনা জেতেন। আর বক্সিং থেকে ভারত প্রথম সোনা পেয়েছিল ১৯৬২ সালে। জিতেছিলেন পদম বাহাদুর মাল। বক্সিংয়ে পর পর দু’টি এশিয়ান গেমস থেকে একজনই সোনা জিতেছেন। তিনি হাওয়া সিংহ। ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালে তিনি হেভিওয়েটে সোনা জেতেন। পাশাপাশি মেয়েদের বক্সিংয়ে ভারত এখন পর্যন্ত একটিই সোনা পেয়েছে। ২০১৪ সালে যা জেতেন মেরি কম।
জাকার্তায় শনিবার স্কোয়াশে ভারতের মেয়েরা ফাইনালে হেরে গেলেন হংকংয়ের কাছে। গত এশিয়াডেও এই বিভাগে ভারত রুপোই জিতেছিল। এ দিন শুরুতেই নিজেদের সিঙ্গলস ম্যাচ হেরে যান সুনয়না কুরুভিল্লা ও ভারতের এক নম্বর জ্যোৎস্না চিনাপ্পা। তিন দিনে দু’বার এই হংকংয়ের কাছে হারল ভারত। তবু রুপো জয় যথেষ্ট কৃতিত্বের, কারণ সেমিফাইনালে ভারত হারায় গেমসের ফেভারিট মালয়েশিয়াকে। এমনিতে স্কোয়াশ থেকে এ বার কিন্তু ভারত পাঁচটি পদক জিতল। জ্যোৎস্নারা রুপো জিতলেন। পুরুষদের দল পেয়েছে ব্রোঞ্জ। সঙ্গে তিনটি ব্যক্তিগত ব্রোঞ্জ। প্রসঙ্গত স্কোয়াশ দলের বহু দিনের দাবি, তাদের এক জন বিদেশি কোচ যেন দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারিতে মিশরের কোচ সরে যাওয়ার পরে নাকি বর্তমান কোচ সাইরাস পুঞ্চাকে নিয়ে খেলোয়াড়রা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। বর্তমান কোচের নির্দেশও তাঁরা তাই শোনেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy