অমিত কুইলা। ৪৪ রানে ৩ উইকেট।
চার বছর আগে বাংলা রঞ্জি দলের প্র্যাকটিসে তাঁকে ডাকা হয়েছিল নেট বোলার হিসেবে। লক্ষ্মীরতন শুক্ল-মনোজ তিওয়ারিদের নেটে আসা সেই তরুণ পেসারই এই মুহূর্তে বাংলার অন্যতম বোলিং ভরসা। শুক্রবার যিনি তিন উইকেট নিয়ে পঞ্জাব ব্যাটিংকে ছত্রভঙ্গ করে দিলেন বলের গতি আর তীক্ষ্ণতায়। অশোক দিন্দার পরে বঙ্গ ক্রিকেটকে মেদিনীপুরের নতুন উপহার— অমিত কুইলা।
হিমাচলের বিলাসপুরে পঞ্জাবের টপ অর্ডারকে একাই ভাঙলেন এ দিন খড়গপুরের একুশের তরুণ। মনন ভোরা, জীবনজ্যোৎ সিংহ, গুরকিরত সিংহদের মতো ঘরোয়া প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে পোড়খাওয়া ব্যাটসম্যানদের আউট করে অমিত বুঝিয়ে দিলেন, তিনিও তৈরি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের জন্য।
কঠিন কন্ডিশন এবং পিচে বাংলা ৪০৪ তোলার পর পঞ্জাব ১৬৮ রানেই চার উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে। বাংলার চার শিকারের মধ্যে যুবরাজ সিংহও আছেন। ফর্মে থাকা তারকা ব্যাটসম্যান দিন্দার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন। অভিজ্ঞ রঞ্জি ব্যাটসম্যান উদয় কল রুখে না দাঁড়ালে একটা সময় ৭৪-৩ হয়ে যাওয়া পঞ্জাব আরও চাপে পড়ে যেতে পারত। সেই জায়গা থেকে উদয় এখনও দলকে বার করে আনার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও কাল তৃতীয় দিনে শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবেন সেটা দেখার!
শুক্রবার রাতে অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির গলায় তাঁর বোলারদের উপর যে ভরসার সুর শোনা গেল, তা মাঠে অমিত-অশোকরা ধরে রাখতে পারলে শনিবারই তিন পয়েন্ট সুরক্ষিত করে ফেলতে পারে বাংলা। মনোজ বললেন, ‘‘আর ছ’টা উইকেট নিতে হবে আমাদের। কাল সকালে ঠান্ডা আর স্যাঁতস্যাঁতে কন্ডিশনকে কাজে লাগাতে হবে বোলারদের। আজ লাঞ্চের পর শুরু করেও আমাদের পেসাররা যে রকম বল করেছে, তাতে আশা করাই যায় কাল সকালের কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে ওরা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।’’
এ দিন বাংলা অল আউট হওয়ার পরে পঞ্জাব ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে। ৪০-২ হওয়ার পর যুবরাজ ব্যাট করতে নেমেও সেই চাপ সামলাতে পারেননি। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া যুবরাজ লেগ স্টাম্পের বাইরে দিন্দার বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার শ্রীবৎস গোস্বামীর গ্লাভসে ধরা পড়েন। বাঁ দিকে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন বাংলার কিপার।
চার বছর আগে বাংলার নেটে বল করার সময় থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা যাঁকে নজরে রেখেছিলেন, সেই সিমেন্ট ফ্যাক্টরির কর্মীর ছেলে অমিত কুইল্যা এ দিন বিলাসপুর থেকে ফোনে বললেন, ‘‘কন্ডিশনটা সাহায্য করেছে ঠিকই। তবে এই বোলিংটা করতে পারছি আমাদের বোলিং কোচ রণদেবদার (বসু) জন্যই। ভিশন ২০২০ থেকে ওঁর কাছে অনেক কিছু শিখেছি। সেটাই এ বার বাংলাকে দিতে পারছি। অশোকদাও (দিন্দা) সাহায্য করে।’’
সেই দিন্দার পাশাপাশি খড়গপুর থেকে কলকাতায় আসার পর ছ’বছরে চার ক্লাবে খেলা অমিত কুইলা এখন ভরসা বাংলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ৪০৪ (সায়ন ১৩৫, সুদীপ ৫১, অগ্নিভ ৭০, পঙ্কজ ৫৫, মনোজ ৪৫, সন্দীপ শর্মা ৪-৯৬) পঞ্জাব ১৬৮ (উদয় কল ৭৩ নআ, যুবরাজ ২২, অমিত ৩-৪৪)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy