উৎসব: ট্রফি নিয়ে উচ্ছ্বাস আলজিরিয়া ফুটবলারদের। শুক্রবার। এএফপি
বিপক্ষে ছিল সাদিয়ো মানের সেনেগাল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আফ্রিকা কাপ অব নেশনস খেতাব ছিনিয়ে নিল আলজিরিয়া। ফাইনালে তারা সেনেগালকে হারাল ১-০ গোলে। এর আগে গ্রুপ লিগের খেলাতেও আলজিরিয়ার কাছে ০-১ ফলে হেরেছিল সেনেগাল।
ম্যাচ শুরু হওয়ার পরে দু’মিনিটেই বাগদাদ বোনেদজাহ-র গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আলজিরিয়া। কিন্তু সেই গোল আর শোধ করতে পারেনি সেনেগাল। শুক্রবার রাতে কায়রোয় অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে ফেভারিট ছিল সেনেগালই। দর্শকরাও নিশ্চিত ছিলেন সেনেগালই চ্যাম্পিয়ন হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব হিসেব উল্টে দিয়ে কাপ নিয়ে গেলে আলজিরিয়াই।
খেলার দ্বিতীয় মিনিটে বোনেদজাহ-র শট বিপক্ষ খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে সেনেগাল গোলকিপার অ্যালফ্রেড গোমিসের মাথার উপর দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। তার পরে গোলের সুযোগ পেলেও সেনেগাল তা কাজে লাগাতে পারেনি।
দলের এই সাফল্যে আলজিরিয়া কোচ জামেল বেলমাদি উচ্ছ্বসিত। ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে তাঁর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল ‘অবিশ্বাস্য’।
১৯৯০ সালে তাদের দেশের মাটিতেই অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় কাপ জিতেছিল আলজিরিয়া। তার পরে এটি তাদের দ্বিতীয় খেতাব। শুধু তাই নয়, বিদেশের মাটিতে এই প্রথম কোনও খেতাব জিতল আলজিরিয়ার ফুটবল দল। তাই জাতীয় ফুটবল দলের এই সাফল্যে উদ্বেল গোটা দেশ।
গত বছর অগস্টে আলজিরিয়ার ফুটবল দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন বেলমাদি। ফাইনালের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আলজিরিয়া কোচ বলেন, ‘‘এই আনন্দের দিনটা ভোলার নয়। এই মুহূর্তে আমি একজন সুখী মানুষ। আমাদের গোটা দেশের মানুষ দ্বিতীয় বার আফ্রিকা সেরা হয়ে জার্সিতে দ্বিতীয় তারা চিহ্নটা লাগাতে দীর্ঘদিন ধরেই মুখিয়েছিলেন। আজ তা সফল হল।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘দেশের বাইরে এটা আলজিরিয়ার প্রথম কাপ অব নেশনস। এই সাফল্যকে অবিশ্বাস্য বলছি। কারণটা বুঝতে পারা যাবে কোথা থেকে কোথায় এলাম আমরা তা ভাল করে খতিয়ে দেখলে। গত অগস্টে যখন এই দলটার দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন অনেক দুর্বলতা ছিল আমাদের। তার পরে এগারো মাসের মধ্যে আফ্রিকা-সেরা হওয়া মোটেই সহজ কাজ ছিল না।’’
আফ্রিকার ফুটবলে কড়া মানসিকতার কোচ বেলমাদি। আলজিরিয়ার দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে সে দেশের ফুটবল ধুঁকছিল। বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। আগের আফ্রিকা কাপ অব নেশনস থেকে গ্রুপ পর্যায়েই ছিটকে গিয়েছিল দল। সেই দল হাতে নিয়েই তিনি বলেছিলেন, লক্ষ্য মিশর থেকে আফ্রিকা-সেরা হয়ে ফেরা। তা তিনি করে দেখালেন।
দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে সেই প্রসঙ্গও উঠলে আলজিরিয়া কোচ বলেন, ‘‘আমি সে দিন বলেছিলাম, আলজিরিয়া ফুটবল দল কাপ অব নেশনস জিততে চায়। ফুটবলারদের কড়া বার্তা দিয়ে বলেছিলাম, খেতাব জেতা ছাড়া অন্য কোনও পরিকল্পনা এই মুহূর্তে আমার নেই। তোমাদের সেই প্রকল্পে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ছেলেরা সেই কাপ জিতে আমার মাথা উঁচু রাখল। তার জন্য ওদের ধন্যবাদ।’’
অন্য দিকে, ফেভারিট হয়ে ফাইনালে হারায় হতাশ সেনেগাল কোচ আলিউ সিসে। ১৭ বছর আগে ২০০২ সালে তাঁর অধিনায়কত্বে এই প্রতিযোগিতায় রানার্স হয়েছিল সেনেগাল। কোচ হয়েও তিনি চ্যাম্পিয়ন হতে পারলেন না। হতাশ সেনেগাল কোচ তাই বলছেন, ‘‘শুরুতেই গোল খেয়ে দলটা থমকে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরে গোল শোধ করে জেতার অনেক সুযোগ এসেছিল আমাদের কাছে। কিন্তু তা
বাস্তবায়িত হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy