অন্য যুদ্ধ। নতুন শত্রু
ইস্টবেঙ্গলের দশ নম্বরকে আটকানো যায়নি। আগামী বুধবার টাম্পাইন্সের বিখ্যাত ন’নম্বরকে আটকে প্রায়শ্চিত্ত করা যাবে কি!
ইস্টবেঙ্গলের সেই দশ নম্বর জার্সিধারী র্যান্টি মার্টিন্স তাঁর রক্ষণ ভেঙে গোল করে গিয়েছেন শনিবার। বুধবার সেই যুবভারতীতেই এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে টাম্পাইন্স রোভার্সের ন’নম্বর রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে বাগান কোচ সঞ্জয় সেনের টিমকে।
নাম— জার্মেইন পেনান্ট। এই জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেই মালিক হয়েছেন টাম্পাইন্স রোভার্সের ন’নম্বর জার্সির। বাগানের বিরুদ্ধেই ২৭ জানুয়ারি তাঁর অভিষেক হতে চলেছে নতুন ক্লাবের হয়ে।
আর্সেনাল, লিভারপুলের প্রাক্তনী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পাল্লা দিয়ে খেলেছেন। ফান পার্সি, গিলবার্তো সিলভা, মাসচেরানো, স্টিভন জেরারদের সঙ্গে। দু’ক্লাবের হয়েই গোল রয়েছে তাঁর। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালেও খেলেছেন লিভারপুলের জার্সি গায়ে। যদিও সেখানে তাঁকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রানার্স হয়েই। খেলে গিয়েছেন ভারতেও। প্রথম আইএসএলে এফসি হৃতিক রোশনের টিম এফসি পুণে সিটির হয়ে।
ব্রিটিশ এই আক্রমণাত্মক ফুটবলারকে এই বাগান টিমে সঞ্জয় এবং তাঁর সহকারী শঙ্করলাল ছাড়া জানেন কেবল একজন। তিনি আবার বাগান কোচের চোখে শনিবারের ডার্বির খলনায়ক। প্রীতম কোটাল। এফসি পুণে সিটিতে এক সঙ্গে খেলেছেন দু’জনে।
বাগান কোচ পেনান্ট সম্পর্কে বলছেন, ‘‘ডার্বি এখন অতীত। এ বার চোখ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। লড়াইটা অন্য রকম। ইউটিউবে পেনান্ট আর টাম্পাইন্সকে দেখতে হবে।’’
পেনান্টের একদা সতীর্থ প্রীতম কোটাল নাম শুনেই গলায় সম্ভ্রম এনে বলে দিলেন, ‘‘গতিটা মারাত্মক। পেনিট্রেটিভ জোনে দু’তিন জনকে কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়াটা খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয় ওর কাছে।’’
বিকাশ জাইরু, র্যান্টিরা যখন আপনাদের রক্ষণে গিয়ে ডার্বিতে দাপিয়ে এসেছেন তখন টাম্পাইন্স রোভার্সের পেনান্ট কতটা ভয়ঙ্কর?
প্রশ্ন শুনে বাগান রাইট ব্যাকের পত্রপাঠ জবাব, ‘‘এফসি পুণে সিটির প্র্যাকটিসে ওকে বার তিনেক আটকেছি। কিন্তু সেখানে তো গা লাগিয়ে খেলত না! যদি এএফসি-র ম্যাচে সুযোগ পাই তা হলে কড়া নজরে রাখতে হবে ওকে।’’
প্রীতমের কোচ আবার ডার্বির আবহ থেকে বেরিয়ে এএফসি মোডে গেলেও ডার্বির কাটাছেঁড়া জারি রেখেছেন। রবিবার সকাল দশটাতে ডার্বির পুনঃসম্প্রচার নিজে তো দেখেছেনই। টিভিতে চোখ রাখতে বলেছিলেন ফুটবলার ও কোচিং স্টাফকেও। যেখান থেকে মিস পাস, রক্ষণ-মাঝমাঠ, মাঝমাঠ-আক্রমণ ভাগের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব তাঁর নোটবুকে উঠে গিয়েছে। বাগান কোচ তাই বলছেন, ‘‘টিভিতে ফের ম্যাচটা দেখলাম রবিবার সকালে। সোম, মঙ্গল দু’টো প্র্যাকটিস সেশন পাব। সেখানেই যা করার করতে হবে।’’ একটু থেমে ফের বললেন, ‘‘টাম্পাইন্সের বিরুদ্ধে জেতার চেষ্টা যেমন করতে হবে, তেমনই ডিফেন্স আর মিডফিল্ডও পোক্ত রাখতে হবে। ওরা কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলটা খেলে। প্রয়োজনে দু’টো হোল্ডিং মিডফিল্ডার রেখে এক স্ট্রাইকারেও নামতে পারি।’’
কিন্তু আপনার সনি-গ্লেন-কাতসুমি তিন বিদেশিই তো ডার্বিতে সে ভাবে দাগ কাটতে ব্যর্থ। যার ফলে পুরো টিম নিয়েও এক পয়েন্ট পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাগানকে। যা মানতে চান না সঞ্জয়। ‘‘গ্নেনকে কেন মাঠে রেখেছিলাম তা গোলটা দেখেই বুঝতে পারছেন। কাতসুমিও চেষ্টা করেছে। আর সনি তিনটে প্র্যাকটিস সেশনের পর ডার্বিতে প্রথম খেলল। একটু সময় দিতে হবে। তবে এএফসি-র গুরুত্ব ওরা জানে। ঠিক সময়ে জ্বলে উঠবে।’’
টাম্পাইন্সকে হারালে বাগানের সামনে পড়বে চিনের শ্যানডং তাইশান এফসি। সেই বাধা টপকালে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ইউনাইটেড। অজি টিমকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ এফ। আর ২৭ জানুয়ারি হারলে এএফসি কাপে সেলাঙ্গর, শেখ জামালের সঙ্গে গ্রুপ ‘ই’।
কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? সঞ্জয়ের উত্তর, ‘‘দেশের প্রতিনিধিত্ব করার গুরুত্বই আলাদা। এএফসি-র টুর্নামেন্টে গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গল, ডেম্পো, বেঙ্গালুরু খেলেছে। আমাদের তার চেয়েও ভাল করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy