দুই দলের দুই অস্ত্র। প্র্যাকটিসে হাল্কা মেজাজে ইংল্যান্ডের ওয়েন রুনি। বালোতেলি কি ইতালির প্রথম দলে থাকবেন? ছবি: এএফপি, ফাইল চিত্র
মার্সেলো লিপ্পির কোচিংয়ে শেষ বার ইতালি বিশ্বকাপ জিতেছিল। মনে আছে সে বার চ্যাম্পিয়নদেরও বিরক্তিকর ফুটবল! ফাইনালে জিদান-মাতারাজ্জির গুঁতোগুঁতি এখনও চোখে ভাসে। ইতালির বরাবরের স্ট্র্যাটেজি ডিফেন্সে লক-গেট ফেলে দিয়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে গোল করে এসো। যা কখনও চোখের আরাম দেয় না। গত বার গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায়ের পর ইতালির ফুটবল স্টাইলে অনেক বদল এসেছে। ওদের এখনকার কোচ সিজার প্রান্দেলি সেই বদলটা আনতে পেরেছেন টিমে। ৪-৩-২-১-এর এমন এক ফর্মেশন তৈরি করেছেন যেটা ব্যালান্সড। বলা যায়, শুষ্ক ফুটবলে কিছুটা প্রাণ আনা। ফর্মেশনটা খেলতে খেলতে কখনও ৪-৩-৩ হয়ে যাচ্ছে। স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী যা চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক।
বালোতেলির এ বার এসি মিলানে মরসুমটা ভাল যায়নি। সিরি আ-এ ২২ গোল করা তোরিনোর ইমমোবাইল আছে। কিন্তু আমার ধারণা, অভিজ্ঞতা আর বড় শরীরের জন্য বালোতেলিকে বাছবেন প্রান্দেলি। পরে হয়তো আনা হবে ইমমোবাইলকে। পিছনে বুফোঁর মতো বিশ্বসেরা গোলকিপার আছে। বুফোঁ গোলের নীচে থাকা মানে সেই টিমের মনোবল অনেকটাই বেড়ে যাওয়া। তা সত্ত্বেও বলব, এই টিমটার হৃদপিণ্ড আন্দ্রে পির্লো। ইতালির ‘নিঃশব্দ নেতা’। এটাই সম্ভবত পির্লোর শেষ বিশ্বকাপ। কিন্তু এখনও কী সাবলীল! দু’বছর আগে ইউরো কাপে প্রান্দেলির টিম যে ফাইনালে উঠেছিল, সেখানে প্লে-মেকারের কাজটা পির্লোই করেছিল। সঙ্গে দুর্ধর্ষ ফ্রিকিক নেওয়ার ক্ষমতা। দু’টোই যদি বিশ্বকাপেও পির্লো করতে পারে তা হলে আমি নিশ্চিত, গ্রুপ অফ ডেথ-এ পড়েও ইতালি নক আউটে উঠে যাবে।
গ্রুপ অব ডেথের প্রথম ম্যাচটা ইতালির কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনই ইংল্যান্ডের কাছেও। কোস্টা রিকা দারুণ কিছু করবে বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু উরুগুয়ে আছে। সুয়ারেজের ফিটনেস নিয়ে এখনও আশঙ্কা থাকলেও কাভানি-ফোরলানদের টিমটাও খুব ভাল। গত বারের সেমিফাইনালিস্ট। ফলে ‘মৃত্যু-গুহা’ থেকে বেরোনোর জন্য এই ম্যাচটা পির্লোদের মতো ওয়েন রুনিদের কাছেও মহাগুরুত্বপূর্ণ। যারা হেরে যাবে বিপুল চাপে পড়ে যাবে। কাগজপত্রে দেখলাম, ইতালি কোচ বলেছেন, ন-ন’টা বিভিন্ন ফর্মেশন নিয়ে তিনি ব্রাজিলে এসেছেন। আমরা কোচেরা বিপক্ষ কী ভাবে স্ট্র্যাটেজি বদলাচ্ছে সেটা দেখে নিয়ে নিজের টিমেও বদল আনি। প্রান্দেলির ঘোষণায় তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই। যেটা দেখতে চাইব তা হল, ইতালি নিজেদের ঘরানা থেকে বেরিয়ে কতটা ডাইরেক্ট ফুটবল খেলছে। ইংল্যান্ডও কতকটা তাই। চিরাচরিত লং বল থেকে দলটাকে রয় হজসন কতটা বার করে আনতে পারেন সেটা দেখার। এ বার বিশ্বকাপে যে ক’টা টিমকে কিছু করতে পারে ভাবা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ইংল্যান্ড আছে। হজসনের হাতে এমন কিছু তরুণ ফুটবলার আছে যারা প্রতিভাবান। স্টার্লিং, ওয়েলব্যাক, স্টারিজরা খুব ভাল ফর্মে আছে। ওদের সঙ্গে রুনি, জেরার, ল্যাম্পার্ডের মতো অভিজ্ঞরা থাকায় ইংল্যান্ড নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী। রুনি মাঠ জুড়ে খেলে। লিভারপুলে এ বার স্টারিজ খুব ভাল খেলেছে। ৪-৩-২-১ ফর্মেশনে ওর পিছনে রুনিকে রাখতে পারেন হজসন। তবে একটা অদ্ভুত ব্যাপার হল, বিশ্বে ইপিএল এত জনপ্রিয়, উচ্চাঙ্গের লিগ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব ফুটবলে ইংল্যান্ডের তেমন সাফল্য নেই। কিন্তু এ বার কেন যেন মনে হচ্ছে, ওরা কিছু করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy