কলকাতার একটি নামী রেস্তোরাঁর দরুণ চেলো কাবাব খাদ্যরসিকদের দুনিয়ায় রীতিমতো বিখ্যাত নাম। এই বিশেষ খাবারটির উৎপত্তি ইরান। এবং এই বিশেষ খাবারটি একটি সম্পূর্ণ কোর্স। এখানে একই সঙ্গে মাংসের কাবাব, চেলো নামের ভাত, গ্রিল করা সব্জি এবং ডিমের পোচ থাকে। কিন্তু আসল কথা হল, আপনি যদি বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এই চেলো কাবাব, তাহলে আর রেস্তোরাঁয় যাওয়া কেন? এক রাত্তিরে জমিয়ে রেঁধেই ফেলুন চেলো কাবাব আর জীবন জমে যাক!
চেলো বানাতে যা যা লাগবে:
বাসমতি চাল— ২ কাপ
মাখন— ৪ টেবিল চামচ
পার্সলে পাতা— ১ আঁটি
পাতিলেবু— ১টি
নুন— স্বাদ মতো
চিনি— প্রয়োজন মতো
কাজু বাদাম— আধ কাপ
প্রণালী:
প্রথমে বাসমতি চাল জলে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এ বার জল গরম করে চাল দিয়ে ফুটতে দিন। ওই জলেই সামান্য পাতিলেবুর রস দিয়ে দিন। চাল ৩/৪ ভাগ সেদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে জল ঝরিয়ে নিন। শুকনো খোলায় কাজু বাদাম রোস্ট করে নিন। কড়াইয়ে মাখন গরম করুন। তাতে ভাত দিয়ে দিন। এ বার একে একে পার্সলে পাতা কুচি, নুন, স্বাদ মতো চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন। ভাত পুরোপুরি হয়ে গেলে রোস্টেড কাজুবাদাম দিয়ে নামিয়ে নিন। গরম গরম চেলো তৈরি।
(আমি চেলো তৈরি করতে সাধারণত ড্রায়েড পার্সলে দিয়ে থাকি। এ ছাড়াও ইচ্ছে অল্প অরিগ্যানো ছড়িয়ে দিতে পারেন। ড্রায়েড পার্সলে বা অরিগ্যানো যে কোনও বড় দোকানে কিনতে পাবেন।)
কাবাবের উপকরণ:
মাংসের কিমা— ৩০০ গ্রাম
পেঁয়াজ— ২টি
রসুন— ৪ কোয়া
আদা— এক টুকরো (২ ইঞ্চি মাপের)
ধনে পাতা— এক আঁটি
পার্সলে পাতা— আধ আঁটি
কাঁচা লঙ্কা— ৩-৪টি
পাতিলেবু— ২টি
ধনে গুঁড়ো— ১ টেবিল চামচ
জিরে গুঁড়ো— ১ টেবিল চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো— ১ টেবিল চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো— ১ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়ো— এক চিমটে
নুন— স্বাদ মতো
কর্নফ্লাওয়ার— ৩ চা চামচ
ব্যাম্বু স্কিউয়ার্স— ৫-৬টি
মাখন— ৫ টেবিল চামচ
বানাবেন কী ভাবে:
প্রথমে মাংসের কিমা ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। চেষ্টা করবেন যাতে কিমায় জল যতটা সম্ভব কম থাকে। একটি পেঁয়াজ, কাঁচা লঙ্কা, ধনে পাতা ও পার্সলে পাতা মিহি করে কুচিয়ে নিন। অন্য একটি পেঁয়াজ, রসুন, আদা এক সঙ্গে বেটে নিন। এ বার কিমায় একে একে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা লঙ্কা কুচি, ধনে পাতা কুচি, পার্সলে পাতা কুচি, পেঁয়াজ-আদা-রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, গোলমরিচ গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো, পাতিলেবুর রস, নুন ও কর্নফ্লাওয়ার এক সঙ্গে মেশান। ম্যারিনেট করে কিমা আধ ঘণ্টা রাখুন। তার পরে সামান্য গলানো মাখন দিয়ে হাল্কা হাতে আর এক বার মেখে নিন। এ বার কিমা থেকে ছোট ছোট বলের আকার গড়ুন। স্কিউয়ার্স নিয়ে তার চার পাশে বলগুলি এক সঙ্গে চেপে চেপে আকার দিন। এ বার ২০০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ওভেন প্রি-হিট করে রাখুন। কিমা লাগানো স্কিউয়ার্সগুলো গ্রিল র্যাকের উপরে রেখে ১৫ মিনিট ধরে গ্রিল করুন। তার পর আরও এক বার কাবাব উল্টে দিয়ে উপর থেকে গলানো মাখন লাগিয়ে আরও ১৫ মিনিট গ্রিল করুন। কাবাব লালচে হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
(স্কিউয়ার্স যদি কাঠ বা বাঁশের হয়, তাহলে কাবাব বানানোর অন্নত এক ঘণ্টা আগে জলে বিজিয়ে রেখে দিন। এ ছাড়া অনেকে কাবাব তৈরির জন্য কর্নফ্লাওয়ারের বদলে অনেক ক্ষেত্রে পাঁউরুটি বা আলু দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু কর্নফ্লাওয়ার দিলে কিমা স্কিউয়ার্সের সঙ্গে সহজে জমাট বেঁধে যায় এবং স্বাদেও অন্য পরিবর্তন আনে না)
আনুষঙ্গিক উপকরণ:
টোম্যাটো— ২টি
পেঁয়াজ— ২টি
সবুজ ক্যাপসিকাম— ১টি
লাল ক্যাপসিকাম— ১টি
হলুদ ক্যাপসিকাম— ১টি
মাখন— ৪ টেবিল চামচ
নুন— স্বাদ মতো
হলুদ— এক চিমটে
জিরে গুঁড়ো— ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো— ১ চা চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো— আধ চা চামচ
টক দই— ৩ টেবিল চামচ
গোলমরিচ গুঁড়ো— আধ চা চামচ
লেবুর রস— ২ টেবিল চামচ
হাঁসের ডিম— ১টি
প্রণালী:
পেঁয়াজ এ বং সমস্ত ক্যাপসিকাম চৌকো চৌকো করে কেটে নিন। টোম্যাটোর বীজ ছাড়িয়ে চৌকো করে কাটুন। একটি পাত্রে টক দই, হলুদ গুঁড়ো, নুন, লেবুর রস, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, গোলমরিচ গুঁড়ো এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন। সমস্ত সবজির টুকরো ওই মিশ্রণে মিনিট পনেরো মাখিয়ে রাখুন। ১৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে প্রি-হিট ওভেনে সবজি গ্রিল করে নিন। কড়াইয়ে মাখন গরম করে লালচে করে ডিমের পোচ ভেজে নিন। উপর থেকে নুন ও গোলমরিচ গুঁড়ো ছড়িয়ে দেবেন।
(প্রায়শই সবজি ম্যারিনেট করার মশলায় আমি বাড়িতে থাকা বোনলেস চিকেনের টুকরোও দিয়ে গ্রিল করে নিই।)
এ বার সাজানোর জন্য একটি বড় প্লেট নিন। বাটি করে চেলো অর্থাৎ রান্না করা ভাত নিন। প্লেটের উপরে উল্টে চেলো রাখুন। ভাতের এক পাশে কাবাব ও অন্য পাশে স্জি দিয়ে দিন। ডিমের পোচ চেলোর উপরে রাখুন। তার উপরে মাখনের টুকরো সাজিয়ে দিন। গরম গরম পরিবেশন করুন চেলো কাবাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy