জল পাই কোথায় বলুন তো গত দু’বছর এটাই ছিল মঙ্গলযান ‘মিস কৌতূহল’-এর মূল প্রশ্ন। অবশেষে সেই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় পাওয়া গেল। মঙ্গলের একটি পাহাড়ের জন্মরহস্য ভেদ করতে গিয়েই নাসার মঙ্গলযান বিশেষজ্ঞরা দাবি করলেন যে জলের সন্ধান মিলেছে লাল গ্রহে। যা হতে পারে প্রাণের উৎস।
কাহিনির শুরুটা প্রায় ৩৫০ কোটি বছর আগে। একটি ভয়ঙ্কর উল্কার আঘাতে মঙ্গল গ্রহে তৈরি হয়েছিল বিশাল এক গর্ত। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা যার নাম রেখেছেন ‘গেল ক্রেটার’। তবে, সেই গেল ক্রেটারের মাঝখানে জেগে ওঠা ৩ মাইল উঁচু ‘সার্পপর্বতকে নিয়েই আলোচনার ঝড় উঠেছে এখন। এত বড় পাহাড়টির জন্মরহস্য ভেদ করতে গিয়েই উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, এই পাহাড়টি মূলত পাললিক শিলা বা ‘সেডিমেন্টারি রক’ দিয়ে তৈরি।
টেকটোনিক প্লেটের ঘর্ষণে অথবা আগ্নেয়গিরির লাভা জমাট বেঁধে তৈরি হওয়া পাহাড়ে পাললিক শিলা থাকে না। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে নদীর বয়ে আনা পাথর, পলি স্তরে স্তরে জমেই তৈরি হয়েছিল পাহাড়টি। আসলে, পুরো গেল ক্রেটারই ছিল পলি-ময়। কিন্তু বহু দিন ধ’রে ঝড়ের দাপটে ক্রেটারের পলি উড়ে গিয়ে মাঝখানে জেগে উঠল এই পাহাড়টি।
নাসার এক বিজ্ঞানী জন গ্রোৎজিনগারের কথায়, “কে বলতে পারে আজ যেখানে পাহাড় কাল হয়তো অনেক হ্রদ ছিল সেখানে!” মিস কৌতূহলের আগেও অনেক বার মঙ্গল নিয়ে নানা গবেষণা চলেছে। তা থেকে জানা গিয়েছে যে সার্প পর্বতের পাদদেশে রয়েছে জমাট কাদা। এমনকী কিছু খনিজ বস্তুও পাওয়া গিয়েছে যা কেবলমাত্র জলের সংস্পর্শেই তৈরি হয়। সেপ্টেম্বর মাসেই সার্পের মাটি থেকে লোহার আকরিক হেমাটাইটের সন্ধান পেয়েছিল নাসার মঙ্গলযান কিউরিওসিটি।
তাই বিজ্ঞানীরা এই ক্রেটারটিকেই বেছেছিলেন মিস কৌতূহলের গন্তব্য হিসেবে। ২০১২ সালের অগস্ট মাসে মঙ্গলে পা রেখেছিল সে। তার পর থেকে পাঠানো বহু তথ্যে উঠে এসেছে যে গেল ক্রেটারটি কোনও এক সময় ছিল একটি বিশাল লেক। আর তার চার ধারে অণু জীবের চিহ্ণ মিললেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ পর্যন্ত যানটি প্রায় ৬ মাইল চলেছে, ছবি তুলেছে দশ হাজারেরও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy