শালবনির মৌপালের কালীবাসার জঙ্গলে একটি হাতি বাচ্চা প্রসব করেছে। বন দফতর সূত্রে খবর, এ জন্যই হাতির দল এলাকা ছাড়তে চাইছে না। দফতরের এক কর্তার কথায়, “সঙ্গে বাচ্চা রয়েছে বলেই হাতির দলটি এলাকা ছাড়তে চাইছে না। আমাদের অনুমান এটাই। গতিবিধে দেখে মনে হচ্ছিল, হাতির দলটি রামগড়ের দিকে চলে যাবে। তবে মঙ্গলবার দিনভর দলটি পিঁড়াকাটা রেঞ্জ এলাকাতেই ছিল।” তাঁর কথায়, “সঙ্গে বাচ্চা থাকলে হাতির দল দ্রুত এলাকা ছাড়ে না। সদ্যোজাতকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোয়। এ ক্ষেত্রেই তাই হয়েছে।”
সাধারণত, নভেম্বরের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের গোড়ায় ওড়িশা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামে ঢুকে পড়ে দলমার হাতির দল। এ বার অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই দলমার দলটি ওড়িশা থেকে এ জেলায় ঢুকে পড়ে। দিন কয়েক ধরে প্রায় ৭০টি হাতির দল গোদাপিয়াশাল রেঞ্জ এলাকায় ছিল। রবিবার রাতে দলটি ভাদুতলা রেঞ্জে ঢুকে পড়ে। পরে পিঁড়াকাটা রেঞ্জ এলাকায় চলে যায়। বন দফতরের এক সূত্রের খবর, আশির দশক থেকে হাতি আসা শুরু হয়েছিল এ রাজ্যে। তখন শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকা কাঁকড়াঝোর ও ময়ূরঝর্না পর্যন্ত হাতি আসত। ধীরে ধীরে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে হাতি জেলার অন্যত্রও ঢুকতে শুরু করে। এক সময় দাবি উঠেছিল, দলমা থেকে আসা হাতির দলকে সীমান্তেই আটকে দিতে হবে। এই দাবি সামনে রেখে আন্দোলনও হয়। তখন সরকার ময়ূরঝর্নায় একটি প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেখানে হাতির খাবার উপযোগী গাছ লাগানো হবে, পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু, প্রকল্প সে ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, ফি বছর দলমা থেকে হাতির দল আসে। সঙ্গে প্রতি বছর যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাতির সংখ্যা। ক্ষয়ক্ষতিও।
এ বারও যেমন হাতির হানায় দহ, গড়মাল, ভুতাশোল, নোনাশোল প্রভৃতি এলাকা ও তার আশপাশে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মেদিনীপুরের ডিএফও বিজয় সালিমঠ বলেন, “হাতির দলের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছে। শস্যহানি এড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।” অন্য দিকে, প্রায় ১০টি হাতির একটি দল হুমগড়ের বারোমেসিয়ায় রয়েছে। ওই দলেও একটি বাচ্চা হাতি রয়েছে। বাচ্চাটির জন্ম অবশ্য দিন পাঁচেক আগেই হয়েছে। রূপনারায়ণের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “বারোমেসিয়ায় হাতির একটি দল রয়েছে। সঙ্গে সদ্যোজাত থাকায় দলটি ধীরে ধীরে এগোচ্ছে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy