Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

তদন্তে নেমে সূত্রই পাচ্ছে না বন দফতর

গন্ডার শিকারের দু’দিন পরেও রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে নতুন কোনও তথ্য জানাতে পারেনি বন দফতর। এ দিন দুপুরের পরে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে চরে বেড়ানো ২৫টি গরু আটক করেন বন কর্মীরা। বনবস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে সভা করে জাতীয় উদ্যানের নদীতে মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও কোথাওই নজরদারির হাল ফেরেনি। এ দিনও নদীপথে দলে দলে লোকজনকে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।

গরুমারার জঙ্গলে বন্যপ্রাণীদের চরে বেড়ানোর জায়গায় অবাধে চরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশু। পরে অবশ্য গরুগুলিকে আটক করেন বনকর্মীরা। রবিবার দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

গরুমারার জঙ্গলে বন্যপ্রাণীদের চরে বেড়ানোর জায়গায় অবাধে চরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশু। পরে অবশ্য গরুগুলিকে আটক করেন বনকর্মীরা। রবিবার দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪০
Share: Save:

গন্ডার শিকারের দু’দিন পরেও রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে নতুন কোনও তথ্য জানাতে পারেনি বন দফতর। এ দিন দুপুরের পরে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে চরে বেড়ানো ২৫টি গরু আটক করেন বন কর্মীরা। বনবস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে সভা করে জাতীয় উদ্যানের নদীতে মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও কোথাওই নজরদারির হাল ফেরেনি। এ দিনও নদীপথে দলে দলে লোকজনকে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।

উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) তাপস দাস বলেন, এখনও দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে কোনও তথ্য হাতে আসেনি। জলপাইগুড়ির ডিএফও (বন্যপ্রাণ) সুমিতা ঘটক বলেন, “সব দিক থেকে চেষ্টা চলছে। কিন্তু সূত্র মিলছে না।” যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, গাদা বন্দুক দিয়ে গন্ডারটি শিকার করা হয়েছে। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য খড়্গ-সহ মাংস উপড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, গন্ডারটি অসুস্থ জেনেও কেন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি? তাঁদের অনুমান সঠিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন সুমিতাদেবী। গন্ডারটির চিকিৎসার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বুনোটি জন্ম থেকে অসুস্থ ছিল। তিন বছর আগে পশুরোগ বিশেষজ্ঞদের দেখানো হয়। তাঁরা জানান, অস্ত্রোপচার করা হলে বাঁচবে না। তবে তাঁর বক্তব্য, গন্ডারটির উপর যথেষ্ট নজরদারি রাখা হয়েছিল।

শুক্রবার সকালে দক্ষিণ গরুমারা রেঞ্জের ধূপঝোরা বিটের মূর্তি নদী সংলগ্ন ঘাস জঙ্গল থেকে গন্ডারটি উদ্ধার হয়। চোরাশিকারিরা গন্ডারটির খড়্গ মাংস-সহ উপড়ে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার দক্ষিণ ধূপঝোরার দরবেশপাড়া থেকে করিমূল হক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও তার কাছ থেকে কোনও তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি তারা।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চোরাশিকারিদের সম্পর্কে তথ্য জানানোর বিনিময়ে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণার ব্যাপারে রবিবারই আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও সন্ধ্যা ৬টার পরে উদ্যানে অপরিচিত কাউকে দেখা গেলে তাকে গ্রেফতারের কথাও ভাবা হচ্ছে। তবে নজরদারি না বাড়িয়ে শুধু নিয়ম করে জাতীয় উদ্যানে বাইরের লোকজনের যাতায়াত কতটা বন্ধ করা যাবে, তা নিয়ে খোদ বনকর্মী মহলেই সংশয় রয়েছে।

রবিবার সকালের পরে জলঢাকা ও মূর্তি নদী লাগোয়া গরাতি থেকে মেদলা পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় বন কর্মীদের দেখা মেলেনি। নাথুয়া, বামনডাঙা থেকে দলে দলে লোকজন জঙ্গলে ঢুকেছে। নদীর চরে গন্ডারের খাওয়ার জন্য তৈরি ঘাসজঙ্গলে গরু মোষও চড়ে বেরিয়েছে। দুপুরে সেই খবর পেয়ে এলাকায় যান রামসাইর বিট অফিসার স্মৃতা রাই। মেদলা থেকে কয়েক জন পাতাওয়ালা ডেকে এনে গরু ধরার ব্যবস্থা করেন।

একই ছবি নদীর ওপারে গধেয়াকুঠি এলাকায়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে তিনটি গন্ডার ঘুরে বেড়ালেও বনকর্মীদের কেউ পাহারায় নেই। গধেয়াকুঠি এলাকার বাসিন্দা বিমল বর্মণ জানান, প্রতিদিন এলাকায় বাইরের লোক ঢুকছে। নদীর ওপারে নাথুয়া এলাকার মৎস্যজীবীরাও কোনও নজরদারি ছাড়াই গরাতির আশপাশে পৌঁছে গিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

gorumara jalpaiguri hunting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE