ছবি সৌজন্যে: জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স।
আকাশে বিদ্যুতের চমকটা ঠিক কোথায় হয়, বজ্রপাতের জন্মস্থানটি ঠিক কোথায়, এই প্রথম তা চাক্ষুষ করা গেল। বজ্রগর্ভ মেঘে কী ভাবে জন্ম হয় বিদ্যুতের ঝলকের (‘লাইটনিং’), এই প্রথম তার প্রতিটি ধাপের ভিডিয়ো তোলাও সম্ভব হয়েছে।
দেখা গিয়েছে, বিদ্যুৎ ঝলকের সময় একটি বিদ্যুৎ তরঙ্গ (ইলেকট্রিক কারেন্ট) আকাশ থেকে মাটিমুখী হচ্ছে। অন্য একটি বিদ্যুৎ তরঙ্গ মাটি থেকে হচ্ছে আকাশমুখী। এই দু’টি তরঙ্গ একটি বিন্দুতে এসে মিশলেই ঝলকের (‘ফ্ল্যাশেস’) জন্ম হচ্ছে। কারণ, তখন মেঘ ও মাটির মধ্যে বিদ্যুৎপ্রবাহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এও দেখা গেল, বিদ্যুৎ ঝলকের খুব সরু একটি রেখাও (যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, 'স্ট্রিমার’) মেঘ আর মাটির মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্ম দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে মেঘ ও মাটির মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের বিন্দু বা জায়গাটা চিহ্নিত করা গেল। তার প্রেক্ষিতে বোঝা অনেকটাই সহজ হয়ে গেল, বজ্রপাতটা ঠিক কোথায় তৈরি হয়। তার সানুপুঙখ ভিডিয়ো তোলা গিয়েছে বলে বিদ্যুতের ঝলক কী ভাবে ধাপে ধাপে তৈরি হয়, সেটাও এ বার বোঝা গেল।
এত দিন বিদ্যুতের ঝলকের এই সরু সরু রেখাগুলিকে দেখা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানীদের। দু’টি কারণে।
প্রথমত, বিদ্যুতের ঝলকের এই সরু সরু রেখাগুলি খুবই ক্ষীণ হয়। এগুলির দেখা পাওয়াটা লটারি পাওয়ার তুল্য।
দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ ঝলকের জন্ম হয় এক সেকেন্ডের কয়েক লক্ষ ভাগের এক ভাগ সময়ের মধ্যে। তাই এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সময়ে বিদ্যুৎ ঝলকের প্রতিটি সরু রেখাকে দেখা কার্যত অসম্ভবই ছিল এত দিন। এই যৎসামান্য সময়েই একটি সরু রেখা আবার অন্য একটি সরু রেখার সঙ্গে মিলেমিশে তালগোল পাকিয়ে যায়। তখন আলাদা ভাবে একটি সরু রেখাকে দেখা আরও অসম্ভব হয়ে পড়ে।
২০১৭-য় একটি বজ্রপাতের ঘটনার সময় বেজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর বায়ুমণ্ডল বিশেষজ্ঞ রুবিন জিয়াং ও তাঁর সতীর্থরা বিদ্যুতের ঝলকের এমন দু’টি সরু রেখা দেখতে পেরেছিলেন। সেগুলির ভিডিয়োও তাঁরা তুলে রাখতে পেরেছিলেন। তার পর ২.৬ সেকেন্ড অন্তর এক-একটা স্ন্যাপ নিতে পারে এমন একটি হাই-স্পিড ক্যামেরা দিয়ে তাঁরা ধরে ধরে বিদ্যুতের ঝলকের ওই দু’টি সরু রেখার প্রতিটি ধাপের ছবি তুলেছিলেন। তাঁরা দেখেন, সব সরু রেখাই যে শক্তিশালী বিদ্যুৎ ঝলকের জন্ম দেয়, তা নয়। কোনও কোনওটি খুবই ক্ষীণ ঝলক তৈরি করতে পারে। কোনওটি আবার সেটাও করতে পারে না।
ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy