-ফাইল ছবি।
নাকে স্প্রে করে দেওয়া কোভিড টিকাই কি পারবে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন রুপ (‘ভেরিয়্যান্ট’)-টিকে রুখে দিতে?
আগামী দিনে দেখা দিতে পারে ভাইরাসের নতুন যে সব রূপ, যারা ওমিক্রনের চেয়েও বেশি সংক্রামক হতে পারে, তাদেরও কি রুখতে পারবে নাকে স্প্রে করে দেওয়া কোভিড টিকা?
তেমন সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দিল আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোবায়োলজি বিভাগের বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা।
সেই গবেষণা দেখিয়েছে, নাকে স্প্রে করে টিকা দেওয়ানো হলে তা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সব ধরনের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে মুখের মিউকাস মেমব্রেনেই রুখে দিতে পারছে। সেই ভাইরাসকে আর গোটা দেহে সংক্রমণ ঘটাতে দিচ্ছে না। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস জিনের নিউক্লিওটাইডের সঙ্গে করোনাভাইরাসের সব ক'টি রোগের কিছু না কিছু সাদৃশ্য থাকায় গবেষকদের ধারণা, এই ধরনের টিকা ওমিক্রন বা আগামী দিনে ভাইরাসের আরও বেশি সংক্রামক কোনও রূপকেও মুখেই রুখে দিতে পারবে।
গবেষণাটি আপাতত ইঁদুরের উপর চালানো হয়েছে। মানুষের উপর পরীক্ষা করে দেখা হয়নি এখনও। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স ইমিউনোলজি’-তে।
আশাব্যঞ্জক খবর, গবেষণাটি চালানো হয়েছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টিকারী সেই সব ভাইরাস নিয়ে যারা দ্রুত নিজেদের বদলে ফেলে (‘র্যাপিড মিউটেশন’)। তারা নানা ধরনের হয় বলে বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাদের বলা হয়— ‘হেটারোলোগাস রেসপিরেটরি ভাইরাস’। দ্রুত নিজেকে বদলে ফেলার ‘গুণ’টি ওমিক্রনের রয়েছে বলেই সেটি করোনাভাইরাসের অন্য রূপগুলির চেয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে। হয়ে উঠেছে বেশি উদ্বেগের কারণ। বিপজ্জনক।
গবেষকদের জোরালো আশা, নাকে স্প্রে করে দেওয়া এই বিশেষ ধরনের কোভিড টিকা সেই কারণেই মুখের ভিতরে ওমিক্রনের সংক্রমণও রুখে দিতে সক্ষম হবে।
গবেষকদের লক্ষ্য কী, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন গবেষণাপত্রের সিনিয়র অথর, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোবায়োলজি বিভাগের ‘ভালডেমার ফন জেডউইৎজ’ চেয়ার প্রফেসর আকিকো আওয়াসাকি।
তিনি বলেছেন, ‘‘নাকে স্প্রে করে দেওয়ার জন্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টিকারী প্রত্যেকটি ভাইরাসকে রোখার লক্ষ্যে আলাদা আলাদা টিকা বানিয়ে তাদের ‘ককটেল’কে প্রয়োগ করলে ওমিক্রন-সহ করোনাভাইরাসের যে কোনও বেশি সংক্রামক রূপকেও মুখের ভিতরেই রুখে দেওয়া সম্ভব হতে পারে। কারণ, নাক ও মুখই হল মানবশরীরে ঢোকার মূল ফটক।’’
কী ভাবে কাজ করবে সেই টিকা?
আওয়াসাকির ব্যাখ্যা— মুখের মিউকাস মেমব্রেনের মধ্যেই থাকে স্থানীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। থাকে সেই স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার কোষ, কলা। যা বাতাস ও নানা ধরনের খাদ্যের মাধ্যমে মুখে ঢোকা ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাককে রুখে দেওয়ার জন্য বিটা কোষ বানিয়ে ফেলতে পারে। সেই বিটা কোষই পরে চটজলদি আইজি-এ শ্রেণির অ্যান্টিবডি তৈরি করে বহিরাগত শত্রুদের রুখে দিতে। মুখের অভ্যন্তর ছাড়াও মিউকাসের এই কোষগুলিই রয়েছে নাকে, ফুসফুসে এবং পাকস্থলীতে। এরা কাজ করে স্থানীয় ভাবে। অন্য কোনও টিকা যেমন শরীরের সামগ্রিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলে বা সক্রিয় করে, এরা কিন্তু তা করে না। এরা কাজ করে স্থানীয় ভাবে। তাতেই সবচেয়ে আগে বহিরাগত শত্রুকে রুখে দেওয়া যেতে পারে, সফল ভাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy