Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bitcoin

Bitcoin Carbon Emissions: চিন ঠাঁই না দেওয়ায় নানা দেশের বাতাসে বিষ ছড়াচ্ছে বিটকয়েন, জানাল গবেষণা

জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতায় বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের ফলে বিটকয়েন বাতাসে বিষ বাড়াচ্ছে।

বাতাসে বিষ বাড়াচ্ছে বিটকয়েনও! -ফাইল ছবি।

বাতাসে বিষ বাড়াচ্ছে বিটকয়েনও! -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২২ ১২:৩২
Share: Save:

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এ বার কপালে ভাঁজ ফেলতে চলেছে সভ্যতার? বিষিয়ে দিতে চলেছে পৃথিবীর পরিবেশও? পরোক্ষে অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে চলেছে আরও বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের? আরও দ্রুত হারে পৃথিবীর উষ্ণায়নের?

সেই ইঙ্গিতই মিলল সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। জানাল, ক্রিপ্টোকারেন্সি যুগের প্রধান হাতিয়ার বিটকয়েনই পৃথিবীর পরিবেশ আরও বিষাক্ত হয়ে ওঠার কারণ হয়ে উঠেছে। বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকদের চিনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার পরিণতিতে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির উৎপাদন হয় যে সব দেশে, আমেরিকা-সহ সেই সব দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা। তাঁদের কাজও চলছে এখন সেই সব দেশে। ফলে, আমেরিকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন। যার জেরে উষ্ণায়নের রথের রশির লাগাম টেনে ধরা আরও মুশকিল হয়ে উঠতে চলেছে।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জুল’-এ। সোমবার।

বিটকয়েন তৈরি করার পদ্ধতির নাম— ‘বিটকয়েন মাইনিং’। খনি থেকে বিটকয়েন উত্তোলন করা হয় না যদিও। নতুন নতুন বিটকয়েন তৈরি হয় ঢাউস ঢাউস কম্পিউটারে। সেই কম্পিউটারগুলিকে অত্যন্ত শক্তিশালী হতে হয়। আর সেই কম্পিউটারগুলি চালাতে প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎশক্তির।

সেই বিদ্যুৎশক্তির প্রয়োজন মেটাতেই বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা গোড়ার দিকে বেছে নিয়েছিলেন চিনকে। বেজিং-সহ চিনের প্রায় সর্বত্রই বিশাল বিশাল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকায়। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করতে হয় না। সেখান বিদ্যুৎশক্তির উৎপাদন হয় নদীর জলপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকেই চিন বিটকয়েন রুখতে বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে। পরের কয়েক বছরে দেশের ব্যাঙ্কগুলির ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে বেজিং। তার পর গোটা চিনেই বিটকয়েন নিষিদ্ধ হয়। এর পরেই যাঁরা বিটকয়েন তৈরি করেন সেই নির্মাতা ও শ্রমিকরা বাঁচার তাগিদে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেন মূলত আমেরিকা, কাজাখস্তান-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। যে দেশগুলিতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির বড় অংশের উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে। এর ফলে, আমেরিকা-সহ বিশ্বের বহু দেশে আরও বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের কারণ হয়ে উঠেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি— বিটকয়েন।

চিনে কাজকর্ম নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকরা এখন কোন কোন দেশের কোন কোন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছেন তা জানতে গবেষকরা কেম্ব্রিজ সেন্টার ফর অলটারনেটিভ ফিনান্স-এর মাধ্যমে বিটকয়েন নির্মাতা ও শ্রমিকদের ব্যবহার করা আইপি অ্যাড্রেসগুলি সংগ্রহ করেন। সেগুলি খতিয়ে দেখেন। তাতে দেখা গিয়েছে, বিটকয়েন নির্মাতারা এখন তাঁদের কাজের ক্ষেত্র হিসাবে মূলত বেছে নিয়েছে আমেরিকা, কাজাখস্তান-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশকে। ওই সব দেশেই প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তির বড় অংশেরই উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভর করে। বিটকয়েন নির্মাতাদের এখন পছন্দের জায়গা যেগুলি সেই আমেরিকার টেক্সাস, কেনটাকি ও জর্জিয়াতেও প্রয়োজনীয় বি়দ্যুৎশক্তির সিংহভাগেরই উৎপাদন হয় কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতায়। বিটকয়েন নির্মাতাদের পরবর্তী লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ইউরোপের কয়েকটি দেশও যেখানে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের বড় বল-ভরসা এখনও জীবাশ্ম জ্বালানিই।

এর ফলে, বিটকয়েন উৎপাদন আর কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বে আরও বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউস নির্গমনের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Bitcoin Greenhouse Gas Emissions Global Warming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy