সামনে খোলা ল্যাপটপ। তাতে আপলোড করা হচ্ছে ব্ল্যাক হোলের ছবি। বিস্ময় আর সাফল্যের উচ্ছ্বাস তরুণীর চোখেমুখে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ২৯ বছর বয়সি কম্পিউটার বিজ্ঞানী কেটি বাউম্যানের এই ছবি। ব্ল্যাক হোলের প্রথম ছবি লেন্সবন্দি করার পিছনে রয়েছেন এই কেটি। ফেসবুকে নিজের ছবি পোস্ট করে তলায় লিখেছেন, ‘‘বিশ্বাস হচ্ছে না, ব্ল্যাক হোলের যে ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে, সেটা আমার সৃষ্টি।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় কেটির ছবি পোস্ট হতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে। টুইটারে নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট নেত্রী আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাশিয়ো-কর্টেজ় লিখেছেন, ‘‘ইতিহাসে নিজের জায়গা করে নিলেন মিস বাউম্যান।’’ আরও লিখেছেন, ‘‘বিজ্ঞান ও মানবসভ্যতায় আপনার অবদানের জন্য ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা। #উইমেনইনস্টেম!’’ ইংরাজিতে সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথেমেটিকস-এর আদ্যোক্ষর নিয়ে— ‘স্টেম’। কেটিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে এমআইটি এবং স্মিদসোনিয়ানও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা লিখেছে, ‘‘তিন বছর আগে এমআইটি স্নাতকের ছাত্রী কেটি নয়া অ্যালগরিদমে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ব্ল্যাক হোলের প্রথম ছবি তৈরিতে সাফল্য এনে দিয়েছে যা।’’
কেটি অবশ্য সমস্ত কৃতিত্ব নিতে রাজি নন। সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘কারও একার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন শিক্ষাক্ষেত্রের একাধিক মানুষের চেষ্টায় এই সাফল্য মিলেছে।’’
বর্তমানে ক্যালিফর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি-র কম্পিউটিং অ্যান্ড ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্স-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর কেটি। তিন বছর আগে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে স্নাতকের পড়াশোনা করার সময়েই এ নিয়ে অ্যালগরিদম শুরু করেন কেটি। পরে এমআইটি-র কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ল্যাবরেটরি, হার্ভার্ড-স্মিদসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স এবং এমআইটি হেস্ট্যাক অবজারভেটরি-র কিছু বিজ্ঞানী মিলে একটি দল গঠন করে। ব্ল্যাক হোলের সেই ছবি-শিকারি দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন কেটি।
অ্যান্টার্টিকা থেকে চিলে, পৃথিবীর আটটি প্রান্তে আটটি রেডিয়ো টেলিস্কোপ বসানো হয়েছিল। টেলিস্কোপের তথ্যগুলিকে কয়েকশো হার্ড ড্রাইভে জমানো হয়। সেগুলো পাঠানো হয় আমেরিকার বস্টন এবং জার্মানির বনে। এর পরে ওই তথ্যগুলি অ্যালগরিদমের সাহায্যে বেঁধে ব্ল্যাক হোলের ছবিটি মিলেছে। কেটি ও তাঁর দলবল অ্যালগরিদমের ওই সিরিজটি তৈরি করেছেন, যা টেলিস্কোপের তথ্যগুলি থেকে ঐতিহাসিক ছবিটির জন্ম দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy