ছবি: নাসার হিরোএক্স পেজ থেকে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আশা, চাঁদে বেড়াতে যাবে মানুষ। বৃহস্পতিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে ইসরোর প্রধান বলেছেন, চাঁদে মানুষের মহল্লা বানানোর জমি খুঁজছে চন্দ্রযান-৩। কিন্তু এই সব আশা-আকাঙ্ক্ষার মধ্যেই একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তবসম্মত সমস্যা নিয়ে ভেবেছে নাসা। আমেরিকার এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা খুঁজে বের করেছে চাঁদে মানুষ বা মহাকাশচারীরা মলমূত্র ত্যাগ করবেন কী ভাবে?
চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর ছ’ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ, চাঁদের মাটিতে যে কোনও বস্তুর ওজনও পৃথিবীতে মাপা ওজনের ছ’ভাগের এক ভাগ। কম ভরের বস্তু অনেক সময়েই সেখানে বাতাসে ভেসে থাকতেও পারে। যেমন মহাকাশ স্টেশন বা মহাকাশযানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকায় সেখানে ভেসে বেড়াতে পারেন মহাকাশচারীরা। তাই চাঁদে যদি শেষ পর্যন্ত মানুষ পৌঁছেই যায় এবং থাকতে শুরু করে, তবে তাদের শরীরের বর্জ্য যাতে দূষণ না তৈরি করে সেই ব্যবস্থাও করা দরকার। সমাধানের খোঁজে তাই বিশ্ববাসীর দ্বারস্থ হয়েছিল নাসা। আয়োজন করেছিল একটি বিশেষ প্রতিযোগিতার। যার নাম ‘লুনার লু কন্টেস্ট’। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে কোনও যোগ্যতার মাপকাঠি ছিল না। নাসার একটাই লক্ষ্য ছিল— সমস্যার সমাধান। যিনি বা যাঁরা সেই সমধান করবেন, তাঁদের মোটা ইনাম দেওয়ার ঘোষণা করেছিল নাসা।
সব মিলিয়ে প্রায় ২৯ লক্ষ টাকার (৩৫ হাজার ডলার) সমান অর্থমূল্য ছিল পুরস্কার হিসাবে। এর মধ্যে যাঁর সমাধানটি সবচেয়ে বেশি মনে ধরে নাসার, তিনি পেয়েছিলেন, ১৬.৬ লক্ষ টাকা (২০ হাজার ডলার)-র সমমূল্যের আর্থিক পুরস্কার। এ ছাড়া, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর জন্য ৮.৩ লক্ষ টাকা (১০ হাজার ডলার) এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীর ৪.১ লক্ষ টাকা (৫ হাজার ডলার )-র সমান আর্থিক পুরস্কার ছিল। ১৮ বছরের কম বয়সিরাও এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারবেন বলে জানিয়েছিল নাসা। তবে প্রতিযোগিতায় বেশ কিছু শর্তও ছিল।
কী কী শর্ত? চাঁদে বা মহাকাশযানে ব্যবহারের জন্য যে বর্জ্যপাত্রটি তৈরি করতে হয়েছিল প্রতিযোগীদের, নাসা বলেছিল,
১। সেটির আয়তন কোনও ভাবেই ০.১২ ঘনমিটারের বেশি জায়গা নিতে পারবে না। যা আদতে পৃথিবীতে শৌচালয়ে ব্যবহার করা একটি ছোট পাখার আয়তনের সমান।
২। মল এবং মূত্র ত্যাগ, দু’ধরনের কাজেই এর ব্যবহার করা যাবে।
৩। প্রতি বারের ব্যবহারে এক লিটারের সমান তরল বর্জ্য ধরে রাখতে পারবে।
৪। প্রতি ব্যবহারে ৫০০ গ্রামের সমান কঠিন বর্জ্য ধারণ করতে পারবে।
৫। অন্তত ১১৪ গ্রামের সমান ওজনের ঋতুকালীন রক্তপাতের হিসাবও রাখতে হবে প্রতি দিনের বর্জ্যের হিসাবে।
৬। সর্বোপরি প্রতি ব্যবহারের পর সংগৃহীত বর্জ্য পাঁচ মিনিটের মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে বর্জ্যপাত্র থেকে। যাতে পরের ব্যবহারকারীর জন্য স্পেস টয়লেটটি পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পরিচ্ছন্ন এবং ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু এর আগে তবে কী ভাবে মহাকাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হত মহাকাশচারীদের জন্য। নাসা জানিয়েছে, প্রথম প্রথম এই ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত অসুবিধাজনক। ইদানীং মহাকাশ যানে একটি বর্জ্য সংগ্রাহক প্রক্রিয়া রাখা হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংগৃহীত বর্জ্য মহাকাশে ছুড়ে ফেলা হয় বিশেষ ভাবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটিও সব সময় ঠিকঠাক কাজ করত না। তার জন্যই আরও উন্নত ব্যবস্থাপনার কথা ভেবে ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy