পৃথিবীর আকাশে সুপারমুন। ছবি: রয়টার্স।
তিথি, নক্ষত্র মিলিয়ে মাসে এক বার করে চাঁদ তার পূর্ণ রূপ নিয়ে হাজির হয় পৃথিবীর আকাশে। গোল থালার মতো বড় চাঁদই পূর্ণিমা তিথির মূল আকর্ষণ। কিন্তু একই মাসে পর পর দু’বার পূর্ণিমা? সচরাচর তেমন ঘটনা দেখা যায় না। অগস্টে সেই বিরল মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে চলেছে পৃথিবী। অগস্টের এই জোড়া পূর্ণিমার চাঁদ কিন্তু আর পাঁচটা পূর্ণিমার চেয়ে আলাদা। এতে চাঁদ হয়ে উঠছে ‘সুপার’।
ইতিমধ্যেই এই বিরল জোড়া পূর্ণিমার একটি পেরিয়ে এসেছে পৃথিবী। ১ অগস্ট, মঙ্গলবার পৃথিবীর আকাশে দেখা গিয়েছে পূর্ণিমার ‘সুপারমুন’। হিসাব অনুযায়ী, আবার আগামী ৩০ অগস্ট একইরকম ‘সুপারমুন’ দেখা যাবে। যদিও ইংরাজি মাসের হিসাব অনুযায়ী দু’টি পূর্ণিমা এক মাসে পড়লেও বাংলার তিথি, নক্ষত্রের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
কী এই সুপারমুন?
সাধারণ পূর্ণিমায় যে গোল থালার মতো বড় চাঁদ দেখা যায়, সুপারমুনে চাঁদের আকার হয় তার চেয়েও বড়। ‘সুপারমুন’ স্বাভাবিক চাঁদের তুলনায় আকারে প্রায় ১৪ শতাংশ বড়। এই চাঁদের ঔজ্জ্বল্য স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৩০ শতাংশ বেশি। পৃথিবীর অনেকটা কাছে চলে আসার কারণেই চাঁদের আকার এবং ঔজ্জ্বল্য এতটা বেড়ে যায়।
পৃথিবী থেকে সাধারণ ভাবে চাঁদের দূরত্ব ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার। সুপারমুনের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব কমে হয় ৩,৫৭,০০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। মঙ্গলবার পৃথিবী এবং চাঁদের দূরত্ব ছিল ৩,৫৭,৫৩০ কিলোমিটার। আগামী ৩০ অগস্ট এর চেয়েও বড় দেখাবে চাঁদকে। সে দিন পৃথিবীর সঙ্গে তার দূরত্ব কমে হবে ৩,৫৭,৩৪৪ কিলোমিটার। চলতি বছরে মোট চার বার এমন বড় এবং উজ্জ্বল ‘সুপারমুন’ দেখা যাবে। যার প্রথমটি ছিল মঙ্গলবার।
ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এক মাসে দু’বার পূর্ণিমা খুব একটা বিরল নয়। ২৯ দিন পর পর পূর্ণিমা আসে। ইংরাজি মাসগুলি ৩০ এবং ৩১ দিনের। ফলে দুই থেকে আড়াই বছর অন্তর প্রায়ই মাসে দু’বার পূর্ণিমা পড়তে দেখা যায়। কিন্তু ৩০ অগস্টের পূর্ণিমা এবং ‘সুপারমুন’কে বিশেষ বলে মনে করা হচ্ছে। ওই দিনের চাঁদকে বলা হবে ‘ব্লু মুন’। এক মাসে দু’বার পূর্ণিমা নতুন না হলেও এক মাসে দু’বার পূর্ণিমায় সুপারমুন দেখতে পাওয়া বিরল। সচরাচর এমন ঘটনা দেখা যায় না। ২০০৯ সালে শেষ বার এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আবার এমন এক মাসে দুই সুপারমুন দেখা যাবে ন’বছর পর, ২০৩২ সালে। এই চাঁদের নাম ‘ব্লু মুন’।
কী সুবিধা পাবে চন্দ্রযান-৩?
ইসরোর বিজ্ঞানীরা অনেক ভেবেচিন্তে এই সময়টিকেই চন্দ্রযান-৩-এর উৎক্ষেপণের জন্য বেছে নিয়েছেন। তার অন্যতম কারণ এই সুপারমুন। এই সময় চাঁদের সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্ব অনেক কমে আসে। ফলে চন্দ্রযান-৩-কে তুলনামূলক ভাবে কম রাস্তা অতিক্রম করতে হবে। জ্বালানির খরচও তুলনায় অনেক কম হবে।
বর্তমানে চাঁদের উদ্দেশে ঘণ্টায় ৩৮,৫২০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে যাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। তবে এই গতিবেগ হ্রাস করা হচ্ছে। কারণ চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বল পৃথিবীর চেয়ে ছয় গুণ কম। ধীরে ধীরে চন্দ্রযান-৩-এর গতি কমিয়ে চাঁদের জন্য তাকে উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে। এক মাসে দু’বার পৃথিবীর কাছাকাছি আসার কথা মাথায় রেখেই এই সময়টিকে বেছে নিয়েছে ইসরো। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ কিংবা ২৪ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছবে চন্দ্রযান-৩।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy