পৃথিবীর কক্ষপথে চন্দ্রযান-৩-এর অবস্থান। ছবি: ইসরো।
চন্দ্রযান-৩-এর উৎক্ষেপণের পর ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে চাঁদের পথে অনেকটা রাস্তাই অতিক্রম করে ফেলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি মহাকাশযান। ইসরো জানিয়েছে, মহাকাশে এখনও পর্যন্ত চন্দ্রযান-৩-এর যাত্রা নির্বিঘ্নেই চলছে। কোনও প্রতিবন্ধকতা আসেনি।
ইসরোর তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ৭১৩৫১ কিমি x ২৩৩ কিমি কক্ষপথে অবস্থান করছে চন্দ্রযান-৩। তবে এখনও তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অধীনেই রয়েছে। পৃথিবীর টান কাটিয়ে চাঁদের দিকে যেতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে।
মহাকাশে চন্দ্রযান-৩-এর গতি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করার জন্য মোট পাঁচটি কক্ষপথ পরিবর্তনের পরিকল্পনা করেছিল ইসরো। তার মধ্যে চারটি ধাপই সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কেবল শেষ ধাপটি। ওই ধাপ সফল ভাবে পেরোতে পারলেই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ টানের বাইরে বেরিয়ে যাবে চন্দ্রযান-৩। মঙ্গলবার ২৫ জুলাই পঞ্চম ধাপটি সম্পন্ন হবে। দুপুর ২টো থেকে ৩টে নাগাদ চন্দ্রযান-৩ পঞ্চম বারের জন্য কক্ষপথ পরিবর্তন করবে।
এর আগে ১৫ জুলাই, ১৬ জুলাই, ১৮ জুলাই এবং ২০ জুলাই চার বার কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে চন্দ্রযান-৩। ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়েছে। এখন পঞ্চম ধাপটির দিকে তাকিয়ে আছেন বিজ্ঞানীরা।
কক্ষপথ ধরে ধাপে ধাপে পৃথিবীর সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি করছে চন্দ্রযান-৩। পঞ্চম বার কক্ষপথ পরিবর্তনের পর এই মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে চাঁদে পরিবহণকারী কক্ষপথে প্রবেশ করবে। তার পরেই চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বল চন্দ্রযান-৩-কে টেনে নেবে।
চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বলের অধীনে ঢুকে পড়ার আগে ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ীই পৃথিবীর কক্ষপথে কিছুটা বেশি সময় কাটাচ্ছে চন্দ্রযান-৩। এ ভাবে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণকে ব্যবহার করে মহাকাশযানটি নিজের গতি আরও বৃদ্ধি করে নিচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ কিংবা ২৪ অগস্ট চাঁদে পৌঁছবে চন্দ্রযান-৩।
ইসরোর এই অভিযান সফল হলে সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা এবং চিনের পরেই চন্দ্র অভিযানে সাফল্যের তালিকায় নাম তুলে ফেলবে ভারত। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে তারা চাঁদে মহাকাশযানের অবতরণ করাবে।
গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে চন্দ্রযান-৩-এর। যদি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ থেকে ল্যান্ডার বিক্রম সফল ভাবে চাঁদের মাটি ছুঁতে পারে এবং তার পরে রোভার প্রজ্ঞানকে সঠিক ভাবে অবতরণ করাতে পারে, তবে ভারতীয় মহাকাশ অভিযানের ইতিহাস নতুন মাত্রা পাবে। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, উৎক্ষেপণের প্রায় ৪০ দিন পরে চাঁদের মাটিতে নামতে পারে চন্দ্রযান-৩-এর সৌরচালিত ল্যান্ডার বিক্রম। সেখান থেকে সৌরচালিত রোভার প্রজ্ঞান বেরিয়ে চাঁদের মাটি ছোঁবে। চাঁদের মাটির চরিত্র, বিভিন্ন খনিজ পদার্থের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি, যে অঞ্চল দিয়ে প্রজ্ঞান চলাচল করবে সেখানকার চাঁদের জমিতে অশোকস্তম্ভ এবং ইসরোর প্রতীক আঁকা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy