তুষার যুগের সিংহশাবকের দেহ। ছবি- 'কোয়াটার্নারি' জার্নালের সৌজন্যে।
তুষার যুগের সময়ের গুহায় থাকা দুই সিংহশাবকের দেহের হদিশ মিলল। পুরু বরফের তলায় চাপা পড়ে যাদের মধ্যে একটির মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ২৮ হাজার বছর আগে। অন্যটি মারা গিয়েছিল অন্তত ৪৩ হাজার বছর আগে। এত দিন আগে মৃত্যু হলেও সেই দু’টি সিংহশাবকের গায়ের সোনালি বাদামি রঙের লোম, দাঁত, ত্বক, বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, এমনকি গোঁফও থেকে গিয়েছে একেবারেই অবিকৃত। দেখে মনে হচ্ছে, যেন আজ-কালের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দু’টি সিংহশাবকের।
উত্তর গোলার্ধের সাইবেরিয়ায় বরফের নীচ থেকে বিজ্ঞানীরা উদ্ধার করেছেন এই দু’টি সিংহশাবকের দেহ। তাঁরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর সময় দু’টিরই বয়স ছিল ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে। একটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পার্টা’। অন্যটির নাম ‘বরিস’।
এই সাড়াজাগানো আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কোয়াটার্নারি’-তে। গত ৪ অগস্ট। সহযোগী গবেষক, সুইডেনের স্টকহোমে সেন্টার ফর প্যালিওজেনেটিক্স-এর জিনতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক লাভ ড্যালেন বলেছেন, “তুষার যুগের সময়ের কোনও প্রাণীর দেহ এতটা অবিকৃত অবস্থায় সম্ভবত এই প্রথম পাওয়া গেল। সিংহশাবক দু'টির দেহের সব কিছুই অবিকৃত থেকে গিয়েছে ৩০ থেকে প্রায় ৪৫ হাজার বছর ধরে। এমনকি তাদের গোঁফও অবিকৃত থেকে গিয়েছে।”
গবেষকরা জানিয়েছেন, সিংহশাবক স্পার্টার হদিশ মিলেছিল সাইবেরিয়ায় ইয়াকুতিয়ার বরফ সাম্রাজ্যে, ২০১৭ সালে। যেখানে স্পার্টার সন্ধান মিলেছিল তার থেকে মাত্র ৫০ ফুট (১৫ মিটার) দূরে অন্য সিংহশাবক বরিসের দেহের হদিশ মিলেছিল তার পরের বছরেই। ডিএনএ পরীক্ষা করে গবেষকরা জানিয়েছেন, স্পার্টার মৃত্যু হয়েছিল ২৮ হাজার বছর আগে। আর বরিস তুষারচাপা পড়ে মারা গিয়েছিল ৪৩ হাজার বছর আগে। এরা থাকত গুহায়।
তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গুহায় থাকা এই সিংহশাবকগুলি আদতে এখনকার আফ্রিকার সিংহেরই খুব কাছের আত্মীয়। তুষার যুগের কনকনে ঠান্ডায় তারা থাকত গুহায়। জীববিজ্ঞানের পরিভাষায় এই সিংহশাবকগুলির প্রজাতির নাম ‘প্যান্থেরা স্পেলিয়া’। এই প্রজাতির সিংহরা পৃথিবীতে প্রথম আসে আজ থেকে ২১ লক্ষ বছর আগে। সাড়ে ১১ হাজার বছর আগে পর্যন্ত এরা বিচরণ করত পৃথিবীতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy