মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উল্লেখযোগ্য হারে কমছে বরফের আস্তরণ। এ বার এমনটাই জানাল নাসার উপগ্রহচিত্র। জানা গিয়েছে, ২০২৪-২৫ সালের শীতে বরফের পরিমাণ এক ধাক্কায় প্রায় ১৫০ মিটার কমে গিয়েছে। এ তথ্য জেনে কপালে ভাঁজ পড়েছে পরিবেশবিদদের।
২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দু’বছর ধরে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার উপগ্রহ। সেই উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি প্রকাশ্যে এনেছে এই নতুন তথ্য। চলতি মাসের শুরুতে আমেরিকার নিকোলস কলেজের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক তথা হিমবাহবিদ মাউরি পেল্টো বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনেন। পেল্টোর কথায়, ‘‘২০২১, ২০২৩, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে শীতকালীন আবহাওয়া ছিল উষ্ণ এবং শুষ্ক। ফলে বরফ কমছে। এই কারণেই তুষাররেখার উচ্চতা আরও বাড়ছে। উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে অন্যান্য জায়গাতেও দাবানলের মতো ঘটনা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।’’
আরও পড়ুন:
তুষাররেখা বা ‘স্নো লাইন’ কী? ভূগোলের ভাষায়, তুষাররেখা হল সেই সীমানা বা উচ্চতা, যার উপরে পাহাড়ে বছরের সব সময়েই স্থায়ী ভাবে তুষার থাকে। তুষাররেখার উচ্চতা বেড়ে যাওয়া মানে নীচের দিকের বরফ ক্রমশ গলতে থাকা, যা উষ্ণ আবহাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মাউন্ট এভারেস্টে তুষাররেখার উচ্চতা ছিল ৫,৯৫০ মিটার। ২০২৫-এর ২৮ জানুয়ারি তা ৬,১০০ মিটারে গিয়ে পৌঁছেছে।
অন্য দিকে, পেল্টো জানাচ্ছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তুষারপাতের পরিমাণ সামান্য বেড়েছে। তবে তা একেবারেই উল্লেখযোগ্য বলা চলে না। প্রতি বছর শীতের শুরুতেই এই অঞ্চলে অল্পবিস্তর তুষারপাত হয়। অথচ সেই তুষারের চাদর বেশি দিন স্থায়ী হয় না। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এভারেস্টের ৬০০০ মিটারের উপরের হিমবাহগুলি গলতে শুরু করে দিয়েছে। তবে শুধু হিমালয়ই নয়, সামগ্রিক ভাবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেপালের আবহাওয়া স্বাভাবিকের থেকে ২০-২৫ শতাংশ বেশি শুষ্ক ছিল বলে জানাচ্ছেন পেল্টো। যে কারণে কোশি-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর পর ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তুষারপাতের চিত্রটা সামান্য বদলেছে। তবে তাতে উদ্বেগ কমছে না পরিবেশবিদদের।