Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
gene editing. china scientist

জিন থেকে রোগ মুছে ভূমিষ্ঠ করানো হল যমজ শিশু, দাবি চিনের বিজ্ঞানীর

সারা জীবনেও আর এডস রোগ গ্রাস করবে না সদ্যজাত শিশুদুটিকে। দাবি চিনের বিজ্ঞানীদের।

জিন এডিটিং করে সরানো হল রোগ, সারা জীবনেও আর এডস রোগ গ্রাস করবে না যমজ শিশুকন্যাদের, দাবি চিনের বিজ্ঞানীদের

জিন এডিটিং করে সরানো হল রোগ, সারা জীবনেও আর এডস রোগ গ্রাস করবে না যমজ শিশুকন্যাদের, দাবি চিনের বিজ্ঞানীদের

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৪৪
Share: Save:

লুলু এবং নানা। দুটি শিশু কন্যা। প্রথম বার ‘রোগাক্রান্ত জিন শুধরানো শিশু’ জন্ম নিল, দাবি করলেন চিনের বিজ্ঞানীরা।

শেনঝেন সাদার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক জিয়ানকুই হে নামে এক বিজ্ঞানীর এই দাবির কথা প্রথম জানা যায় ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি রিভিউ-র একটি ভিডিয়োতে। তখনই বিজ্ঞানীরা নড়েচড়ে বসেন।

বিজ্ঞানী জিয়ানকুই দাবি করেছেন, জিন থেকে এডস রোগের সমস্ত রকম সম্ভাবনা মুছে দিয়ে সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে সাহায্য করেছেন তাঁরা। যদিও শিশু কন্যা দুটির ছবিও মেলেনি। তাদের বাবা-মায়ের পরিচয়ও জানা যায়নি। ভিডিয়োতে তিনি জানিয়েছেন, সাত জন এইচআইভি আক্রান্ত যুগলের ভ্রূণ নিয়ে চলছে এই গবেষণা। একটি ক্ষেত্রে (সিঙ্গল সেলড এমব্রায়ো) মিলেছে ইতিবাচক ফল। ওই গবেষক বলছেন, ভবিষ্যতে এই শিশু দুটির ক্ষেত্রে কোনও দিনও এডস রোগের সম্ভাবনা থাকবে না।

আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে রয়েছে অভিনব এই ১০ ফিচার, আপনি কতগুলো জানেন?​

এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়নি এ নিয়ে, তাই এই গবেষণা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শুধু মাত্র ভিডিয়োতে চিনা বিজ্ঞানী দাবি করছেন। বাবা-মায়ের থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভ্রূণ। এর পর আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছে শিশু। সিসিআর৫ জিন সম্পাদনা করেই এই অসাধ্য সাধন করা হয়েছে, এমনটাও দাবি করেছেন বিজ্ঞানী।

চিনের গবেষকের এই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে

২০১৫ সাল থেকে মানব দেহের জিনোম নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। গুয়াংঝোউ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্রূণের জিন থেকে রোগ মুছে ফেলতে সক্ষম তাঁরা।

২০১৬ সালে ক্রিসপার পদ্ধতির কথা জানান লন্ডনের বিজ্ঞানীরাও। এই গবেষণা নিয়ে কাজ করে চলেছে জাপানও। তবে নৈতিক কারণেই বেশ কিছু দেশে বাধা পাচ্ছে এই গবেষণা। এ ক্ষেত্রে চিনের বিজ্ঞানীর দাবি, সিসিআর৫ জিন নিয়ে কাজ করেছেন। কারণ, হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে সিসিআর৫ জিনেই।

আরও পড়ুন: এমন ফোন আগে দেখেননি, স্যামসাংকে টপকে নতুন প্রযুক্তি আনছে হুয়াওয়ে?

জিন এডিটিং কী?

জিন থেকে রোগ সরিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতিটি হল CRISPR/Cas9 (ক্রিসপার)। যে সব মশা ম্যালেরিয়ার পরজীবী প্রতিরোধ করতে সক্ষম বর্তমানে, তারাও এই ক্রিসপার দ্বারাই ‘জেনেটিকালি মডিফাইড’।

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

CRISPR/Cas9 এর Cas9 হল একটি এনজ়াইম যা একটি নির্দেশক আরএনএ-র সাহায্যে ডিএনএ এর একটি নির্দিষ্ট অংশ কাটতে ব্যবহৃত হয়। ডিএনএ-এর এই পরিবর্তনের ফলে সে আর তার আগের বৈশিষ্ট প্রকাশ করতে পারে না, আগের বৈশিষ্ট্যটি এতে বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ নিজেকে আর প্রকাশ করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা এই CRISPR/Cas9 কে আবার বিভিন্ন শূন্যস্থানে সঠিক ডিএনএ বসানোর জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন।কিন্তু এখন পর্যন্ত এই পদ্ধতিটি মাত্র ৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই সাফল্য পেয়েছে।

চিনের বিজ্ঞানীদের ভিডিয়োটি দেখেই তাই নড়েচড়ে বসেছেন এ দেশের বিজ্ঞানীরাও। এর আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে একটি ইঁদুরের কালচার করা কোষে আলঝাইমার রোগের জিন মিউটেশনকে ঠিক করে হয়েছিল। কিন্তু মানব দেহ থেকে রোগের সম্ভাবনা মুছে দেওয়ার মতো যুগান্তকারী আবিষ্কারের কথা কখনওই সামনে আসেনি। এর পর চিনের বিজ্ঞানীদের ভিডিয়োটি আসায় তা ভাবাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীদেরও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE