ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
মুখোশ পরে ঘুষ নিন
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে অমিতাভ বচ্চনের মুখোশ পরে নিন। স্নানাহ্নিক করে সচিন তেন্ডুলকর, বিকেলে মাধুরী দীক্ষিত, রাত্রে শেন ওয়ার্ন সাজুন। আবার পরের দিন সকালে পাড়ার ক্লাবের গোলপোস্ট উদ্বোধন করতে গিয়ে পেলে, দুপুরে সভা করার সময় আইনস্টাইন, সন্ধ্যায় মিটিংয়ে মা কালী, ঘুমোতে যাবার আগে মহম্মদ আলি। ফায়দা: আপনাকে কেমন দেখতে, কেউ কোনও দিন জানতে পাচ্ছে না। তাই ঘুষ নিচ্ছেন ছবি তুললেই বা কী লাভ? আপনার পিতৃদত্ত শ্রীমুন্ডু তো কেউ কোনও দিন দেখেইনি ছাতা। যে বোকাটা স্টিং করছে, সে ভোটের আগে পরে মাঝখানে যখনই লোক ডেকে ভিডিয়োটা দেখাতে যাবে, সবাই যেই দেখবে বুশ, ওসামা, মাইকেল জ্যাকসন, মেরিলিন মনরো ঘুষ নিচ্ছেন, তাকে মাথায় তোলা তো দূর, তক্ষুনি লোকটাকে গাধার পিঠে বসিয়ে মাথা মুড়িয়ে ঘোল ঢেলে দেশছাড়া করবে। তখন আপনি শিগগির গিয়ে কানহাইয়া কুমারের মুখোশ পরে মিছিলটাকে লিড করে দেবেন, ব্যস।
কুকুরকে ক্যামেরা বাছতে শেখান
একটা দেশি জাতের বাঘা কুকুর পুষুন। কারণ কাজটা ঠিক অ্যালসেশিয়ান, গোল্ডেন রিট্রিভার, ল্যাব্রাডরের মতো ট্যাঁশেদের দিয়ে হবে না। বাঘা কুকুর আপনাকে যেমন ভক্তি করবে, তেমনই নোংরা হবে। অস্থানে-কুস্থানে গিয়ে বসবে, পাঁকে গড়াগড়ি দিয়ে আসবে। ফলে বাছাধনের গায়ে মাকড়সার মতো দেখতে খুদে পোকা আর রক্তচোষা এঁটুলি, দুইই হবে। সে-সব সে নিজেই দিনরাত খুঁটবে, চুলকোবে, দাঁত দিয়ে দিয়ে বের করবে। ওর এই এফিশিয়েন্সিটাই আপনাকে এনক্যাশ করতে হবে। ওকে পোকা আর এঁটুলির বদলে স্পাই ক্যামেরা বাছতে ট্রেন করুন। এ বার কেউ ঘুষ দিতে এলে তাকে প্রথমে কুকুরের ঘরে পাঠিয়ে দিন। কুকুর তার সারা গা খিমচে, চুলকে, কুটকুট করে কামড়ে সার্চ করে নেবে কোথাও কোনও স্পাই ক্যামেরা পোকার মতো ঘাপটি মেরে আছে কিনা। কিছু পেলে কামড়ে সেটা ছিঁড়ে এনে আপনার পায়ে ফেলে দেবে। এ বার আপনি উকুন মারার মতোই, কেরোসিনের বড় ভাঁড়ে ক্যামেরাগুলো ফেলে সেগুলো আঙুলে মটকে মটকে সাবাড় করতে থাকুন।
সমুদ্রের তলায় ঘুষ খান
সমুদ্রের তলায় গিয়ে ঘুষ খান। খেয়াল করে দেখবেন, স্টিং অপারেশনের ক্যামেরাগুলো একেবারে পচা রদ্দিমার্কা চাইনিজ টাইপ হয়। ওতে এমনিতেই ছবি ঝাপসা, আউট অব ফোকাস ওঠে, আর আপনি জলের তলায় গিয়ে ঘুষ খেলে তো ক্যামেরায় জল ঢুকে নষ্ট হয়ে যাবে, ব্যস, কোনও ছবি উঠবে না। ওর অপারেশন আক্ষরিক অর্থেই একেবারে জলে যাবে। তবে আপনার ঘুষের টাকা যাতে জলে না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে ওয়াটারপ্রুফ, ওয়াটার-রেজিস্ট্যান্ট টাকার থলে হাতের কাছে রেডি রাখুন। অবশ্যই অনেক দিন আগে থেকে নিজের ঘরের বাথটবে বা সুইমিং পুলে দীর্ঘ সময় ডুবসাঁতার প্র্যাকটিস করুন, লোক ডেকে স্কুবা ডাইভিংটাও শিখে রাখুন। ডি ডে-তে কাজে দেবে। আর হ্যাঁ, সমুদ্রের জলে হাঙর, তিমি, চুনোমাছেরা অচেনা উৎপাতে অবাক, বিরক্ত হতে পারে। হাঁ-মুখে তেড়ে আসাও বিচিত্র নয়। ওদেরও কিছু ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখুন। অ্যাদ্দিন ডুবে ডুবে জল খাওয়া অভ্যেস করেছেন, এ বার ডুবে ডুবে ঘুষ খান।
ন্যাড়ামাথা ও উলঙ্গ করে ঘরে ঢোকান
কোনও অচেনা লোক নিরিবিলিতে দেখা করতে চাইলেই তাকে বলুন, সব জামাকাপড় খুলে, ফুলটু নাঙ্গাবাবা হয়ে তবেই সে ঘরে ঢুকতে পারবে। কারণ জানতে চাইলে বলুন, আজকাল জামাকাপড়ের ভাঁজে লুকনো ক্যামেরা থাকতে পারে। ও হ্যাঁ, লুকনো ক্যামেরা আবার চুলের মধ্যেও রেখে দেওয়া যায়। তাই তাকে ন্যাড়া করার জন্য, বাড়িতেই মাসমাইনে দিয়ে, এক জন নাপিতও রেখে দিন। এই বন্দোবস্তে যারা আপত্তি করবে, তাদের জানান, আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, আর এটুকু স্বার্থত্যাগ সে করতে পারবে না? মন্দিরে ঢুকতে হলে কি সে জুতো খুলে ঢুকত না? এর পরেও যারা চেঁচামেচি করবে, তাদেরকে ঘোর সন্দেহের চোখে দেখুন এবং জানিয়ে দিন, তারা যে স্টিং অপারেশন করতে যাচ্ছে, সে কথা আপনি বুঝে গিয়েছেন, আর এক্ষুনি পুলিশকে সেটা জানিয়ে দেবেন।
আমি না, আমার যমজ ভাই ঘুষখোর
পার্টির ক্যাডার, সাঙ্গোপাঙ্গ ও ভাইপো-ভাগ্নে-ছেলেপুলেদের দিয়ে রটিয়ে দিন, আপনার এক অবিকল হুবহু জুড়ুয়া ভাই ছিল, ছোটবেলায় গ্রামের বাড়ির রথের মেলায় পাঁপড়ভাজা কিনতে গিয়ে হারিয়ে গেছে, এবং তার পর যা হয়, অবধারিত বখাটে বদসঙ্গে পড়ে রামগোল্লায় গিয়ে এখন নানান অকাজ-কুকাজ করে বেড়াচ্ছে, যার একটা হল ঘুষ খাওয়া! ফেসবুক ওয়ালে পাশাপাশি দুটো ছবি দিন, একটা আপনার, আর একটা সেই দুয়োভাইয়ের (বলা বাহুল্য, দুটোই আসলে আপনারই ছবি, কিন্তু গবেট পাবলিক কিচ্ছু বুঝতে পারবে না, আপনার ছবিতে কয়েক হাজার লাইক আর ‘ওর’ ছবিতে কয়েকশো ছি-ছি কমেন্ট পড়লেই বুঝবেন, কেল্লা ফতে!)। ব্যবস্থা আইনি পথে পাকা, নিশ্ছিদ্র ও ডবল বিশ্বাসযোগ্য করতে সোজা থানায় গিয়ে সেই কুলাঙ্গার ভাইয়ের নামে একটা এফআইআর-ও করিয়ে রাখুন। পুলিশ এমনিতে সাধারণত এফআইআর নেয় না, বহুত হ্যারাস করে, কিন্তু আপনি তো নেতা-মন্ত্রী, আপনার অভিযোগ নেবে না, ওর ঘাড়ে ক’টা মাথা? খবরকাগজে আগাম বিজ্ঞাপনও দিয়ে রাখতে পারেন: ‘একটি অসাধু কুচক্রী স্বার্থান্বেষী এবং ঘটনাচক্রে আমার কার্বন কপি, কতিপয় ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় করিয়া দিবেন বলিয়া ঘুষ খাইতেছেন...’ এ বার নিশ্চিন্তে ঘুষ খান, তোয়ালে জড়িয়ে টাকা তুলে রাখুন এবং পরে চোখ বড় বড় করে মিডিয়ার সামনে বলুন, শয়তান ভাইটা আমি কী রঙের তোয়ালে ইউজ করি, সেটা অব্দি হোমওয়ার্ক করেছে, কাণ্ড দেখেছেন!!!
ঘুষদাতাকেই ঘুষ দিয়ে রাখুন
একদম সেকেন্ডের ফ্র্যাকশনেরও ফ্র্যাকশনে কাজটা সেরে ফেলতে হবে কিন্তু। যে মোমেন্টে আপনাকে টেবিলের তলা দিয়ে ঘুষের টাকাটা বাড়াল, বাঁ হাতে টাকাটা টেনেই, ডান হাতে যে ঘুষ দিচ্ছে তাকেই উলটে কিছুটা ঘুষ ধরিয়ে দিন। খুব তাড়াতাড়ি লোকটাকে ঘুষ দিয়ে দিতে হবে, যাতে ব্যাটা ক্যামেরা বন্ধ করার টাইমই না পায়। আর ও ক্যামেরা বন্ধ করে দিলেও ক্ষতি নেই। আপনার শাগরেদদের বলুন, ওরাও যেন স্পাই ক্যামেরায় এই ঘুষাঘুষি কেসটা রেকর্ড করে রাখে। বেঁড়েচালাক লোকটাকেই টাকা দিয়ে চুপ করিয়ে দিলে ও নিশ্চয়ই আর আপনার মুখ পোড়াতে সব ফাঁস করতে যাবে না। আর করবেই বা কেন? স্টিংয়ের ফাঁস থেকে তো ও নিজেও বেরোতে পারেনি। আর যদি বেইমান তার পরেও কিছু করে, আপনার হাতেও তো পালটা ভিডিয়ো রয়েইছে। যাকে বলে টিট ফর ট্যাট। চোরের ওপর বাটপাড়ি। ব্ল্যাকমেলের পাটকেল।
হাতে আলকাতরা মেখে নিন
রাজ্যের খবর হওয়ার চেয়ে জাতীয় খবর বড়। আবার জাতীয় খবর হওয়ার চেয়ে আন্তর্জাতিক খবর আরও বড়। তাই, সবার আগে সবচেয়ে বড় খবর হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচান। ইংরেজি মিডিয়ার মুখ বন্ধ করুন। টাকা নিতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লেই ওরা ‘কট রেড হ্যান্ডেড’ বলে চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। তো আপনি ঘুষ নেওয়ার আগে বরং হাতে বেশ করে আলকাতরা মেখে নিন। ‘কট রেড হ্যান্ডেড’ কথাটা আর আপনার ক্ষেত্রে খাটবে না। বিদেশে আপনার কেচ্ছা নিয়ে আর আলোচনা হবে না। তার পর রাজ্যের মাসিপিসিরা কী বলল, তাতে আপনার ঘেঁচু।
দেশদ্রোহী হয়ে যান
যেই দেখবেন, নিউজ চ্যানেলে আপনার ঘুষ নেওয়ার স্টিং অপারেশনের পরদা ফাঁস হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সেই চ্যানেল অফিসের সামনে চলে যান। তার পর তেড়ে দেশকে গালাগাল করুন। প্রতিবেশী দেশের নামে চিল্লিয়ে ‘জিন্দাবাদ’ও বলতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই আপনাকে ‘দেশদ্রোহী’ বলতে শুরু করবে। ওই চ্যানেলই আপনাকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা সভা বসাবে। কিছু আঁতেল আবার আপনাকে সাপোর্ট করেও বক্তৃতা দিতে থাকবে। প্রবল দেশপ্রেমিক টিকাধারী নেতাদের সঙ্গে বিরোধীদের ধুন্ধুমার বেঁধে যাবে। কিন্তু স্টিং অপারেশন নিয়ে একটা কথাও আর হবে না। এ দিকে ঘুষের টাকা বেঁচে যাওয়ায় আগামী ছ’মাস আপনার বাড়িতে রোজ রোববার।
ঘুষ খেয়েই সম্বন্ধ পাতান
মুঘল বাদশাদের রাস্তাটা ধরুন। ওরা তেএঁটে লোক দেখলেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে নিজের দলে টেনে নিত। সেটাই করুন। যে ঘুষ দিতে এসেছে, সে ছেলেই হোক বা মেয়ে, তাকেই ধাঁ করে বিয়েটা করে নিন। তবে, নিজেদের বিয়ে ইতিমধ্যেই অন্যত্র হয়ে গিয়ে থাকলে ছেলেমেয়ে, ভাইপো-ভাইঝিদের বিয়ে লাগিয়ে দিন। এক বার ঘরের লোক বানিয়ে ফেললে এ সব স্টিং অপারেশনের শিং দিয়ে আপনাকে গোঁতানোর প্ল্যান সে আর স্বপ্নেও বানাবে না।
বলুন, তখন তো পাগল ছিলাম
যেই না ঘুষ নিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুড়ে নিলেন ভাল করে অথবা চাপরাশি আলমারিতে তুলে দিল টাকাটা, অমনি ধড়াস করে লাফিয়ে উঠে ‘হুলাহুহুলাহু হুলাহুলা হু’ বলে বুক ঠুকে জংলিনেত্য জুড়ে দিন। ‘ওওওও’ করে টারজানের মতো চেঁচান। নিজের মাথা চুলকে নিন, ঘুষওলাকে চেটে দিন, ডিগবাজি খান। সারা ঘরে হামাগুড়ি দিয়ে ঘুরে এসে এ বার উঠে জামাকাপড় ঝেড়ে হাতমুখ মুছে গম্ভীর হয়ে গুছিয়ে বসুন। যারা ছিটকে গিয়ে হাঁ করে দেখছে তাদের স্মার্টলি বলুন, প্রতি বার কালো টাকা নিয়ে এ ভাবে নিজের শুদ্ধি করে নিতে হয়। এটা আপনার কোরাপশনের রিচুয়াল। গুরুমশাই মন্ত্র দিয়ে গিয়েছেন। এর পর স্টিং হলে? ইজি। সোজা বলে দিন, ওই সময়ে বিরোধীরা ওষুধ খাইয়ে পাগল করে রেখেছিল, দেখেই তো বোঝা যাচ্ছে।
ঘুষ খান পিছন ফিরে
কেউ টাকার বান্ডিল নিয়ে এলেই স্যাট করে পিছন ঘুরে যান। লোকটাকেও বলুন পিছন ফিরে দাঁড়াতে। এ ভাবে পিঠোপিঠি দাঁড়িয়ে, হাত উলটো বাগে বাড়িয়ে, টাকাটা গাপ করে নিন নিমেষে। এতে আপনাকে সামনাসামনি দেখাই গেল না। ফলে বিপদ কমল। ও দিকে পিছন ঘুরে দাঁড়িয়ে হাত মুড়িয়ে এত কসরত করে টাকা দিতে গিয়ে, লোকটা ফুরসতই পাবে না স্পাই ক্যামেরা ঠিকঠাক তাক করার। আরে ফুরসত কী, ওই অপোগণ্ডের মাথাতেই আসবে না নিজের ব্যাকঅফিসে এত ক্যামেরা ফিট করে আনার কথা। শিয়োরশট ধাপ্পা খাবে।
নো ম্যান’স ল্যান্ডে ঘুষ খান
নিজের ঘরে বসে বা অফিসে ঘুষ খায় কেবল হদ্দ বোকারা। আরে বাবা, মহাকাশে গিয়ে ঘুষ খেলেও নাসা-র স্যাটেলাইটে ধরা পড়বে, আপনার রুমটি তো কোন ছার গুমটি! স্বদেশে হুজ্জতে সিবিআই, লন্ডনে গিয়ে ঘুষ খেলে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড খবর পাবে, আমেরিকায় পেন্টাগন পেন্টু খুলিয়ে ছাড়বে, পোলভল্ট দিয়ে ইউরোপে পালাবেন ভাবলে পিছু নেবে ইন্টারপোল। জলেও জলপুলিশ, পাতালেও যেতে পারবেন না, এক ভূমিকম্প না হলে। বরং মহাপুরুষের জীবনচরিত থেকে শিক্ষা নিন। এক মহাপুরুষ ছেলেবেলায় দেদার দুষ্টুমি করে, দিদিরা ধরতে এলেই ছুট্টে গিয়ে দাঁড়াতেন নর্দমার জলের মধ্যে। নোংরা, অশুচি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ক’হাত ধরে দূরে দাঁড়ানো দিদিরা ছুঁতেও পারতেন না। আপনিও তেমনই চলে যান ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’-এ। ভারতের ম্যাপটা ভাল করে জরিপ করে নিন। চারপাশে কত্তগুলো পড়শি দেশ, মানে কত্তগুলো নো ম্যান্স ল্যান্ড! এক এক বার এক-একটা নো ম্যান্স ল্যান্ডে গিয়ে ঘুষ-ঘাঁটি গাড়ুন, এন্তার ঘুষ খান। শুধু দেশোয়ালি ভাইবেরাদরের কাছ থেকে কেন, পড়শি দেশের লোকের থেকেও ঘুষ খেতে পারেন। আর নো ম্যান্স ল্যান্ডে এ-পার ও-পার কোনও দেশের আইনই কাজ করে না, এ কথা বর্ডারের গরুও জানে। সুতরাং দুই সীমান্তে পুলিশ-দারোগা-হাইকোর্ট চোখ পাকিয়ে রাঙিয়ে ভস্ম-মোডে অ্যাটেনশন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুক, আপনি ওদের কলা ও বক দেখান, এবং দেখিয়ে দেখিয়ে ঘুষ খান।
মৌমাছির হুলের অভ্যেস করুন
বাড়িতে মৌমাছির চাষ করুন। তার পর নিয়মিত তাদের চাকে খোঁচান, চাকের নীচে ধুনো জ্বালান। সব ক’টা রেগে লাল হয়ে আপনাকে হুল বিঁধিয়ে অস্থির করে দেবে। ও এট্টু সহ্য করে নিন। একটু মলম, দুটো ইঞ্জেকশন, বার কয়েক আইসিইউ (এই ফাঁকে মেডিক্লেমের টাকাটাও পুরো তোলা হয়ে যাবে) ঘুরে এলেই আপনার সিস্টেমে স্টিংয়ের এগেনস্টে একটা ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যাবে। তার পর সারা দিন রাত বাড়ি বসে ঘুষ খান। কত করবে স্টিং করুক এ বার। মৌমাছির হুলের জ্বলুনি বিষে যার প্র্যাকটিস আছে, ক্যামেরার স্টিং, পাবলিকের গালাগাল, বিরোধীর বিষ— কারও বাপের সাধ্যি নেই তাকে টসকায়।
মরে যান। ভূতেদের ছবি ওঠে না
একদম মরে যান। তার পর ঘুষ নিন যত খুশি। কারণ কোনও ক্যামেরাতেই ভূতেদের ছবি ওঠে না। যা ইচ্ছে রেকর্ড করুকগে, ভিডিয়ো চালালেই ছবি বার বার কেটে যাচ্ছে। স্ক্রিনের ওপর হিজিবিজি আঁচড়, ধোঁয়া ধোঁয়া, টাকা আপনাআপনি শূন্যে ঘুরছে। ‘চোর চোর’ নয়, ‘ভূত ভূত’ চিল্লিয়ে পাবলিক ভাগলবা। অল ক্লিয়ার হলে, নেক্সট মুরগিকে ডাকুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy