Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Novel Series

হাওয়ার আড়ালে

রুংটা তাকে দুটো অফার দেন। কিড স্ট্রিটের অফিসে রিজিয়োনাল ম্যানেজার হিসেবে বদলি অথবা ভুবনেশ্বরে একটা তাঁদের নতুন সফ্টওয়্যার কোম্পানিতে জয়েন করা।

ছবি: পিয়ালী বালা

ছবি: পিয়ালী বালা

অজিতেশ নাগ
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ ০৬:০৩
Share: Save:

পূর্বানুবৃত্তি: আকিঞ্চনের সঞ্চিত টাকাপয়সার অনেকটাই বেরিয়ে গেল তার মামলা লড়তে। উকিলের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও রেহাই পেল না আকিঞ্চন। ও দিকে স্বর্ণেন্দুর সঙ্গে মেহুলির বাইরে যাওয়ার দিন এগিয়ে আসছে। ভাল কথায় বুঝিয়েও তাকে নিরস্ত করতে পারে না কস্তুরী। তার অফিস থেকে ফোন আসে। মালিক বিলাসসুন্দর রুংটা তার সঙ্গে কথা বলতে চান। কস্তুরী তাঁর সঙ্গে কথা বলে। রুংটা তাকে দুটো অফার দেন। কিড স্ট্রিটের অফিসে রিজিয়োনাল ম্যানেজার হিসেবে বদলি অথবা ভুবনেশ্বরে একটা তাঁদের নতুন সফ্টওয়্যার কোম্পানিতে জয়েন করা। সেখানে কস্তুরী অফিস থেকে কোয়ার্টার্স, গাড়ি সবই পাবে। রুংটা তাকে পরামর্শ দেন, তার জীবনে নানা অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তাই কলকাতা ছেড়ে বেরোলে হয়তো সে কিছুটা স্বস্তি পাবে। অফিস থেকে বেরিয়ে অদ্রিজার সঙ্গে রুংটার প্রস্তাব আলোচনা করে কস্তুরী। অদ্রিজাকে বলে, বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়ি এবং মেহুলিকে ফেলে তার বাইরে যাওয়ার উপায় নেই।

দিন কয়েক পরে।

“কী! চুয়া-নন্দিনী?”

“হ্যাঁ বিবি। ওর মধ্যে আমিই চুয়া। হি হি হি। তুমি দেখো। লাইট হার্টেড কমেডি। সেটে খুব মজা হচ্ছে।”

“কোথায় হচ্ছে?”

“ওই এন টি ওয়ানেই।”

“চুয়া একটা নাম হল?”

“ওই হল। তুমি দেখবে তো এপিসোড? সামনের সোমবার থেকে রাত সাড়ে ন’টায়।”

“অ্যাপে দেখে নেব।”

“বিবি, মেহুলি এখন, মানে সব ঠিকঠাক তো?”

“বুঝতে পারি না। চুপচাপ থাকে। টুকটাক কথাবার্তা বলে। নর্মাল।”

“আমি এখন ফোন রাখছি। কৃষ্ণের ডাক এসেছে। রাতে ফোন করব। ভাল থেকো। ঠান্ডা পড়ছে বেশ। তোমার গলা ধরা-ধরা শোনাচ্ছে যেন। রাতে মাফলার জড়িয়ে শোবে, কেমন? বাই।”

লাইনটা কেটে যেতে কস্তুরী এক বার কী মনে করে আকিঞ্চনের ঘরে এল। ঘরটা সেই আগের মতোই, পরিপাটি। আকিঞ্চন খুব গোছানো মানুষ, স্বাবলম্বী ধরনের। নিজের জামাকাপড় নিজেই পরিষ্কার করে নিত ওয়াশিং মেশিনে। তার পর নিজেই ইস্ত্রি করত। জুতো নিজে পালিশ করত। যখন দু’জনে এক বিছানায় শুত, সেই দিনগুলোতেও নিজেই খাট ঝাড়পোঁছ করে বালিশ পেতে একদম টানটান করে রাখত। অনেক দিন হল মশারি টাঙিয়ে শোওয়ার অভ্যেস চলে গেছে। অঘোরচাঁদ লেনের বাড়িতে সেই সময়গুলোতেও আকিঞ্চন নিজেই মশারি টাঙাত। দু’-এক দিন কস্তুরী মশারি টাঙিয়েছে। আকিঞ্চনের পছন্দ হয়নি। ফের মশারি খুলে নিজে টাঙিয়েছে। এই ঠান্ডার দিনেও কোর্ট থেকে ফিরে গিজ়ার চালিয়ে শাওয়ারের নীচে স্নান সেরেছে। এই শাওয়ারের নীচে স্নান করা আকিঞ্চনের অনেক দিনের অভ্যেস। বালতি থেকে মগে করে জল ঢালা তার ছিল না-পসন্দ। আর বাথটাব জিনিসটাও তেমন পছন্দ করত না সে। আকিঞ্চন বলত, শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে স্নান করার যে আনন্দ, তা নাকি আর কোনও সিস্টেমে নেই। আর টয়লেট থেকে বেরিয়েই তার চাই সাদা ধপধপে পায়জামা আর টি-শার্ট। আজ অবধি কখনও এক দিনের পোশাক পরের দিন পরেনি আকিঞ্চন।

এখন কোথায় আকিঞ্চন? কস্তুরী মনে মনে কল্পনা করল, জেলের নোংরা মেঝে, নোংরা কম্বল। আকিঞ্চন ঘুমোতে পারছে? হয়তো ভাল করে খেতেও পারছে না। জেলে কে আর হালকা সাদা তেলে ভাজা লুচি অথবা মিল্ক-ওটস খেতে দেবে? কস্তুরী খেয়াল করল, এত খারাপ-খারাপ কথা ভেবেও আকিঞ্চনের জন্য একটুও সহানুভূতি তৈরি হচ্ছে না তার মনে। বরং প্রতি বারই একটি আপ্তবাক্য মনকে ছেয়ে ফেলছে, ‘যেমন কর্ম তেমনই ফল’। আচ্ছা, রাধিয়ার সঙ্গে আকিঞ্চনের রিলেশন ঠিক কত দিনের? হয়তো মাস দুয়েক। হয়তো বছরখানেক। এই কেস-কাবারির মাধ্যমে তো অনেক অজানা তথ্যই জানতে পেরেছে কস্তুরী। সে সব না মনে করাই ভাল। হয়তো যখন কস্তুরীর সঙ্গে ফিজ়িক্যাল রিলেশনশিপ ছিল তখন থেকেই রাধিয়ার সঙ্গেও... আগেও এ কথা মাথায় এসেছে তার। তখন ঘেন্না জেগেছে। এখন আশ্চর্য লাগে। এক জন মানুষ কী করে দু’জনকে এক সঙ্গে ভালবাসতে পারে?

কত ক্ষণ আকিঞ্চনের ঘরে ছিল মনে নেই। হঠাৎ নীচে ডোরবেল। দোতলা থেকে উঁকি মেরে দেখল, সদর দরজার বাইরে একটা গাড়ি দাঁড় করানো। কে হতে পারে? ঘোষাল নাকি? আকিঞ্চন জেলে যাওয়ার পরে এক দিন এসেছিল। হ্যানত্যান কথার মারপ্যাঁচে কস্তুরী বুঝেছিল যে, লোকটা জাস্ট সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়। কস্তুরী তার ঠান্ডা, নিরুৎসাহ ব্যবহারে সে দিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, সে আকিঞ্চনের ব্যাপারে মোটেই ইন্টারেস্টেড নয়, ঘোষালের ব্যাপারে তো নয়ই। আর আসেনি ঘোষাল। একটা নোংরা লোক। যে একটা মেয়ের বয়সি মেয়ের দিকে নোংরা চোখে তাকাতে পারে, সে সব পারে।

মেহুলির ঘর থেকে মেহুলির গলার আওয়াজ পাওয়া গেল এক বার। সম্ভবত ওর ঘরের বারান্দা থেকে কেতকীবালাকে অনুরোধ করল দরজা খুলে দিতে। কস্তুরী টের পেল, এক জন কেউ সিঁড়ি বেয়ে ধীরে ধীরে উঠে আসছে এবং তার পায়ে বুট। দোতলার দরজার সামনে এসে দাঁড়াল কস্তুরী। একটি লোক। পরনে কোট প্যান্ট বুট আর টাই। মাথায় একটা বেমানান টুপি। এ আবার কে? মেহুলি চেনে একে? ভদ্রলোক সাহেবি কেতায় টুপি খুলে বললেন, “কেমন আছেন? আমাকে চিনতে পারছেন না? আমি স্বর্ণেন্দু মুখার্জি।”

সেই লোকটা! আগের বার ধুতি-পাঞ্জাবিতে এসেছিল। এ বার ভোল বদলে! মুহূর্তে বুকটা কেঁপে উঠল কস্তুরীর। তবে কি আজই সেই দিন?

যথাসম্ভব চোয়াল স্বাভাবিক রেখে কস্তুরী বলল, “আসুন, ঘরে আসুন।”

ভদ্রলোক জুতো খুলে ভিতরে এসে বলল, “মেহুলি কোথায়? উই আর অলরেডি লেট।”

“লেট মানে!” জিজ্ঞেস করেই ফেলল কস্তুরী।

“মেয়ে কিছু বলেনি? আচ্ছা, একটু জল হবে? ঠান্ডা পানীয় থাকলে আরও ভাল। একটু বসি?”

কস্তুরীর বলার অপেক্ষা না রেখে ভদ্রলোক ধপাস করে সোফায় বসে পড়লেন। আচ্ছা অভদ্র লোক তো! অপরিচিত লোকের বাড়ি এসে কেউ কোল্ড ড্রিঙ্কস চেয়ে খায়, প্রথম দেখল কস্তুরী। তাও আবার এই ঠান্ডার সময়? সে ফ্রিজ খুলে দেখল, রয়েছে। কস্তুরীর নিজের পছন্দ নয় কোনও ঠান্ডা পানীয়। তবে মেহুলি খায় বলে ফ্রিজে থাকে।

কস্তুরী ঠান্ডা পানীয়ের গ্লাসটা ভদ্রলোকের হাতে ধরিয়ে দিয়ে কিছু বলার আগেই ভদ্রলোক বললেন, “আপনার নিশ্চয়ই আমার উপরে খুব রাগ হচ্ছে। আমাকে দুশ্চরিত্র ভাবতে কোন অসুবিধেই হচ্ছে না, তাই না? আপনি দাঁড়িয়ে কেন?”

হতভম্ব কস্তুরী ভদ্রলোকের মুখোমুখি সোফায় বসল। এক চুমুকে গ্লাসটা শেষ করে ভদ্রলোক হাসলেন। চওড়া হাসি নয়, ঠোঁট সামান্য বেঁকিয়ে একটু হাসি। এমন হাসি সে কোথায় দেখেছে? কার মুখে? প্রাণপণে মনে করার চেষ্টা করতে লাগল সে। নাঃ, মনে আসছে না তো।

“আপনি অযথা চিন্তা করছেন। ‘মেয়ের মতো’ এই শব্দ দুটো আমার খুব অপছন্দের। মেহুলি যেমন আপনার মেয়ে, আমারও মেয়ে। আমার একটা মেয়ে ছিল। মেহুলি নিশ্চয়ই বলেছে। মেহুলি আমার দ্বিতীয় মেয়ে। আমি সামান্য লিখি-টিখি। লেখালিখির চাপে ঘোরা হয় না। আবার দেখুন, না ঘুরলে প্লট আসবে কোথা থেকে! হা হা। মেহুলি বলল, বিদেশে ওর এক আত্মীয় থাকেন। আমি ভাবলাম রথ দেখার সঙ্গে সঙ্গে কলাটাও বেচে আসি। মানে নতুন উপন্যাসের প্লট। ভেবে দেখলাম, বাপে-মেয়েতে ঘুরে এলে মন্দ হয় না। কিন্তু, আফটার অল, মেহুলি আপনাদের মেয়ে। তাই আপনার অনুমতি চাই। বিশ্বাস করুন মিসেস রায়, আপনি না বললে আমি স্ট্রেট বাড়ি ফিরে যাব। ভাববেন না। আমি মেহুলিকে বুঝিয়ে দেব। বাই দ্য ওয়ে, আপনাদের বাড়িটা খুব সুন্দর। আচ্ছা, ওই ছবিটা কি শিল্পী মনোজ সেনের আঁকা?”

কী বলবে ভেবেই পেল না কস্তুরী। ভদ্রলোক নিতান্ত বাচ্চা ছেলের মতো মুখ করে বসে আছেন। যেন অনুমতি পেলে তবে ভাজা মাছটি ওল্টাবেন। কস্তুরী খেয়াল করল, ভদ্রলোকের ভুরুর পাশে একটা কাটা দাগ। কার ছিল এমন দাগ? কপালের ঠিক ওইখানে?

কস্তুরী বলল, “আমি আর কী বলব? আমার তো কিছুই মাথায় আসছে না।”

উত্তরে ভদ্রলোক ফের কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এসে তাকে ঢিপ করে একটা প্রণাম করে ফেলল মেহুলি! ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে মেহুলিকে আলতো জড়িয়ে মাথার মাঝখানে চুমু খেলেন। বাবা রে! কোনও দিন তো কাউকে প্রণাম করতে দেখেনি কস্তুরী। আকিঞ্চনের অপছন্দের ব্যাপার ছিল এই প্রণামের নামে পায়ে হাত দেওয়াটা। বলত, মানুষের পায়ে কত জার্মস থাকে। মেয়েকেও তো তারই মন্ত্রে দীক্ষিত করা। কস্তুরীকে অবাক করে দিয়ে তারও পা ছুঁয়ে প্রণাম করল মেহুলি।

বিহ্বল কস্তুরী শুধু বলতে পারল, “আজই যাচ্ছিস? আগে বলিসনি তো? সাবধানে।”

উচ্ছল গলায় মেহুলি বলল, “আসছি মাম্মি। আজ মাঝরাতের প্লেন। লেট’স গো বাবি।”

শেষ শব্দগুচ্ছ অবশ্য ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে বলা। তার পরই নিজের কামরার দিকে দৌড় লাগাল, “ফাক, ফাক। আই জাস্ট ফরগট মাই পাসপোর্ট অ্যান্ড ক্যামেরা।”

বাবি! মেহু এই লোকটাকে বাবি বলে ডাকে? কস্তুরী দেখল, ভদ্রলোক নিজের কোটের পকেট থেকে কিছু একটা বার করছেন। অবশেষে টেনেটুনে একটা মাঝারি প্যাকেট বার করে কস্তুরীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “পড়ে দেখবেন।”

“কী এটা?”

“মাই লেটেস্ট নভেল। আমার বিষয়ে আপনার যা কিছু জানার এতেই পাবেন।”

একটা বড় ট্রলিব্যাগ হাতে মেহুলি নেমে গেল সিঁড়ি বেয়ে। কেতকীবালা আর শ্যামলেন্দুকে প্রণাম করতে হবে যে। কস্তুরী বলল, “এই প্রণামের ঘটাটা নিশ্চয়ই আপনারই শিক্ষা?”

কোনও উত্তর না দিয়ে ফের সেই হাসিটা হাসলেন ভদ্রলোক। কী মুশকিল! কিছুতেই কেন মনে করতে পারছে না সে। ভীষণ, ভীষণ চেনা এই হাসিটা। কে হাসত এমন করে, এক সময়ে? আর ওই কপালের দাগ? ঠিক জিনিস ঠিক সময়ে মনে না পড়লে ভারী অস্বস্তি হয়।

কস্তুরী এক দৌড়ে বারান্দায় এসে দেখল, গাড়ির ডিকিতে মেহুলির ব্যাগটা লোড করে দিচ্ছে একটি অল্পবয়স্ক ছেলে। বোধহয় ড্রাইভার। মেহুলি গাড়িতে ঢোকার আগে উপরের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ল। কস্তুরী গলা তুলে বলল, “সাবধানে যাস। গিয়ে ফোন করিস।”

মেহুলিও চেঁচিয়ে জবাব দিল, “ওখানে পৌঁছেই সিম নিয়ে নেব। তার পর ফোন করব। ভাল থেকো।”

কস্তুরী দেখল, হাত নাড়তে গিয়ে হাত নামিয়ে নিলেন ভদ্রলোক। অল্প কিছু ক্ষণ স্থির চোখে তাকিয়ে থাকলেন কস্তুরীর দিকে। তার পর ধীরেসুস্থে উঠে গেলেন গাড়িতে।

আর ঠিক তখনই বিদ্যুচ্চমকের মতো আর্টিস্ট ফোরামের যাওয়ার পথে দেখা স্বপ্নটা মনে পড়ে গেল কস্তুরীর। না, আর কোনও বিভ্রম নয়। সুকোমল, সুকুমার অথবা শুভেন্দু নাম ছিল না সেই ছেলেটার। মনে পড়ে গেছে। ওর নাম ছিল স্বর্ণেন্দু। ডাকনাম, ভাল নাম একটাই। যে ভদ্রলোকের সঙ্গে মেহুলি বেরিয়ে গেল তারও তো নাম স্বর্ণেন্দু। কস্তুরী ঘরে এসে হাতের প্যাকেটটা ফড়ফড় করে ছিঁড়ে ভিতরের বইটা বার করে আনল। সাদার উপরে নীল রঙে প্রচ্ছদ। একটা মেয়ের মুখ। কার মুখ! কেন এটাও খুব চেনা-চেনা লাগছে? এ ক্ষেত্রে খুব বেশি মাথা ঘামাতে হল না। চার সেকেন্ডের মাথায় মুখটাকে ট্রেস করতে পারল। এ সেই মালবাজারের স্কুলে পাঠরতা কস্তুরী মজুমদার। রুদ্ধশ্বাসে পিছনের ফ্ল্যাপে চলে গেল সে। প্রথমে ভদ্রলোকের ছবি। তার নীচে লেখা নাম, জন্মসাল, লেখাপড়া আর উপন্যাস, কবিতা আর পুরস্কারের লিস্টি। তবু পিঁপড়ের মতো এত অক্ষরের সমাবেশ থেকেও একটা জায়গায় ঠিক চোখ আটকে গেল কস্তুরী। ভদ্রলোকের জন্মস্থান মালবাজার, উত্তরবঙ্গ।

সে দিন স্টুডিয়োয় যা একটা কাণ্ড হল! চুয়া-নন্দিনী’র ছাব্বিশতম এপিসোডের শুট শেষ হতে হতে বিকেল চারটে বেজে গেল। কথা ছিল মেরেকেটে আড়াইটের মধ্যে প্যাকআপ হয়ে গেলে মিশুক বেরিয়ে আসবে। বাড়ি ফেরার আগে তার কিছু কাজ আছে। প্রথমে দাসানিতে যেতে হবে। রাঙামাটির মেয়ে-র পরে একটা ওয়েব সিরিজ় করেছিল সে। মোট চার দিনের শুট। আজকাল প্রচুর মানুষ, বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশন টিভি-সেট নামক বস্তুটার প্রতি ইন্টারেস্ট হারাচ্ছে। তার কারণ টিভি হল এক জায়গায় বসে থাকার আয়োজন। সেই তুলনায় নতুন নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তা প্রধানত এই জন্যই যে, যেখানে খুশি যখন খুশি বসে দেখে নেওয়া যায়।

ইংরেজি সিরিজ়ের পাশাপাশি অনেক ওটিটি চ্যানেলও খুলে গেছে, যেখানে ওয়েব সিরিজ চালু হয়েছে। এই ছবিগুলো যথেষ্ট উন্নত মানের এবং হল ভাড়া করার মত হ্যাপা-ট্যাপাও দিব্যি এড়ানো যায়। পেমেন্টও সাফিশিয়েন্ট। ‘ওয়েলনোন আরবান’ নামে একটা প্রোডাকশন হাউসের একটা সিরিজ়ে অভিনয় করেছিল মিশুক। কোনও কারণে পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ আটকে যাওয়ায় ওয়েবে আপলোড করা হচ্ছিল না এত দিন। অবশেষে গত সপ্তাহে প্রথমটা গেছে।


ক্রমশ

অন্য বিষয়গুলি:

Novel Series Bengali Novel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy