তিনি পালওয়ানকর বালু। তাঁর বাঁ হাতি রহস্যময় স্পিনে পরাস্ত তাবড় ব্রিটিশ ব্যাটসম্যানরাও। কিন্তু তাঁকে দলে নিতে নারাজ ভারতীয় হিন্দু ক্রিকেটাররা। সহ-খেলোয়াড়রা তাঁকে বল দিতে হলেও পা দিয়ে ঠেলে দিতেন। তিনি যে চামার সম্প্রদায়ের! সূর্যশেখর দাস
আজ আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। টিম ইন্ডিয়ার জন্য কোটি কোটি ভারতবাসীর আবেগ আর সমর্থন সে কথাই প্রমাণ করে। ক্রিকেটার মানেই আজকের দুনিয়ায় গ্ল্যামার আর ঐশ্বর্যের উজ্জ্বল সমন্বয়, অথচ এই ক্রিকেট খেলার সঙ্গে এমন কিছু খেলোয়াড় যুক্ত ছিলেন বা এখনও রয়েছেন, যাঁদের নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে অনেক লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছিল। এই রকমই এক জন দলিত ক্রিকেটার ছিলেন পালওয়ানকর বালু। বালু-র জন্ম ১৮৭৬ সালে কর্ণাটকের ধারওয়ারে। তাঁর বাবা ছিলেন পরাধীন দেশে সেনাবাহিনীর চাকুরে। তিনি কর্মসূত্রে সপরিবার পুণেয় চলে আসেন। ছোটবেলা থেকেই বালু এবং ওঁর ভাইয়েরা ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতেন, কিন্তু নিজেদের ক্রিকেট খেলার সামগ্রী বলতে তেমন কিছু ছিল না। ব্রিটিশদের ফেলে দেওয়া ব্যাট-বল দিয়ে বালুরা খেলতেন। ১৮৯২ সালে বালু পুণেয় ইংরেজদের ক্লাবে মালি হিসেবে নিযুক্ত হন। তখন বালুর বয়স মোটে ১৬। মাসিক বেতন চার টাকা। সেখানে বালুর দায়িত্ব ছিল সাহেবদের প্র্যাকটিসের জন্য নেট খাটানো, ক্রিকেটের পিচ রোল করা এবং পিচে প্রয়োজনীয় দাগ দেওয়া।
তখনকার ডাকসাইটে ইংরেজ ব্যাটসম্যান ছিলেন জেজি গ্রেগ। শোনা যায়, একদিন নেট সেশন চলছে, তিনি নেট প্র্যাকটিস করতে করতে একবার বালুর কাছে বল চলে যায়। বালু হাত ঘুরিয়ে বলটা ফেরত দেয়। হঠাৎই কী মনে হতে গ্রেগ বালুকে ডেকে বল করতে বললেন। গ্রেগ বালুর বলে প্রথমে পরাস্ত হলেন, তার পর আউট হয়ে গেলেন! এই বিস্ময় গ্রেগকে আমূল নাড়িয়ে দিল। তিনি ভেবে পেলেন না, একজন মালি কী করে ওঁর মতো একজন দক্ষ ব্যাটসম্যানকে এই ভাবে বোকা বানিয়ে আউট করে দিল! এর পর গ্রেগ প্রতিদিন প্র্যাকটিস শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে মাঠে এসে ব্যাট হাতে বোলার বালুর মুখোমুখি হতেন। তখনকার দিনে প্রখ্যাত এই ইংরেজ ব্যাটসম্যান বহুবার উপযুক্ত প্রশিক্ষণহীন বালুর বলে আউট হন! গ্রেগেরও জেদ চেপে গেছিল, কিন্তু গ্রেগ বালুর বলের রহস্যজাল কখনও ভেদ করতেই পারেননি। এই ইংরেজ ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারলেই বালু প্রতিবার আটআনা করে পুরস্কার পেত। ও দিকে ব্রিটিশ ক্রিকেটাররা এই ভেবে অবাক হয়ে গেলেন যে, গ্রেগ যেখানে অন্যান্য নামীদামি বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে বলের সেলাই খুলে ফেলতেন, সেখানে এক জন প্রশিক্ষণহীন মালির বলে কী করে বার বার আউট হন? শেষ পর্যন্ত ইংরেজ তথা ইউরোপিয়ানরা স্পিন বোলার হিসেবে বালুর আশ্চর্য দক্ষতা মেনে নিতে বাধ্য হলেন।
আস্তে আস্তে দেশীয় হিন্দু খেলোয়াড়রা বালুর স্পিন বোলিংয়ের দক্ষতা সম্পর্কে জানতে পারলেন। হিন্দুরা তখন ইউরোপীয়দের ক্রিকেটের ময়দানে হারাতে মরিয়া। আর বালুর মতো প্রতিভাধর স্পিনার দলে থাকলে ইউরোপীয়দের হারানোর সম্ভাবনা বাড়বে! কিন্তু হলে হবে কী, বর্ণহিন্দু খেলোয়াড়রা বালুর সঙ্গে এক দলে খেলতেই রাজি নন। বালু তো চামার সম্প্রদায়ের দলিত, অর্থাৎ অস্পৃশ্য, এর সঙ্গে খেললে ব্রাহ্মণ বা অন্য বর্ণহিন্দুদের জাত থাকবে কী করে! নাকউঁচু সমাজ যত মুখ ঘুরিয়ে নেয়, বালু তত উইকেট পুঁতে দিনের পর দিন নিবিড় অনুশীলনে ডুবে যান। নিজের অস্ত্রে শান দিতে দিতে বালু ক্রমশ হয়ে উঠলেন আরও রহস্যময় বোলার। ওঁর বল অনেক ভাল ব্যাটসম্যানই আর ঠিকমতো ধরতে পারেন না।
আজকের ক্রিকেট-বিশ্বে অনেকেই তন্নতন্ন করে ভাল ‘মিস্ট্রি স্পিনার’ খোঁজেন, তাঁদের ক’জনই বা জানেন যে, আজ থেকে এগারো দশক আগেই বালুর স্পিন বোলিংয়ে এক অভেদ্য রহস্য লুকিয়ে ছিল! শেষ পর্যন্ত উনি ১৮৯৬ সালে হিন্দুদের দলে পরমানন্দদাস জীবনদাস হিন্দু জিমখানায় খেলার সুযোগ পেলেন। তৎকালীন বম্বেতে ইউরোপিয়ান, পার্সি, হিন্দু এবং মুসলিমদের মোট চারটি দল নিয়ে দেশের সেরা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ‘বম্বে কোয়াড্রাঙ্গুলার’ অনুষ্ঠিত হত। বালুর বলে ইউরোপিয়ান, পার্সি এবং মুসলিমরা বারবার আউট হতে লাগলেন। অন্যান্য বোলার ব্যর্থ হলে অধিনায়কের দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। কিন্তু বালু যদি কখনও রান খরচ করে ফেলতেন, তখনও অধিনায়কের দিকেই তাকিয়ে থাকতেন আরও ওভার পাওয়ার প্রত্যাশায়। আসলে উনি কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসতেন এবং হাল না ছাড়া ছিল ওঁর চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের আউট করার ওঁর প্রবল খিদে কোনও অধিনায়কই উপেক্ষা করতে পারতেন না। তাই বল করে উনি নিয়মিত উইকেট তুলতেন। ওঁর দল হিন্দু জিমখানাও ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ জিততে লাগল।
দলের জয়ের অন্যতম কারিগর হয়ে উঠলেও খেলার মাঠে এবং মাঠের বাইরে অস্পৃশ্যতার যন্ত্রণা বালুকে প্রতিমুহূর্তে কষ্ট দিত। হিন্দু খেলোয়াড়রা অনেক সময় ওঁর দিকে বল পাঠাতে হলে লাথি মেরে এগিয়ে দিতেন। বর্তমানের এই কোভিড পরিস্থিতিতে আমরা অনেকেই সামাজিক দূরত্ব পালন করছি, কিন্তু বালুর সময়ে জাতিভেদ প্রথার জন্য উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিম্নবর্ণের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেন। ওই সময়ে অস্পৃশ্যতার বিষ আজকের করোনা ভাইরাসের চেয়েও মারাত্মক। এমনকি লাঞ্চের সময়ও বালু হিন্দু খেলোয়াড়দের সঙ্গে একসঙ্গে খেতে পারতেন না, ওঁর জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ ছিল। শুধু তাই নয়, খাওয়ার পর নিজের এঁটো বাসন নিজেকেই ধুতে হত। একবার মুষলধারায় বৃষ্টি নেমেছে, প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে-ভিজতেও বালুকে নিজের এঁটো বাসন ধুতে হচ্ছে, কারণ ওই বাসন না ধুলে তো বর্ণহিন্দু খেলোয়াড়দের রাতে ভাল করে ঘুমই হবে না। অন্যান্য খেলোয়াড় যখন সুন্দর পোর্সেলিনের কাপে চা পান করতেন, তখন বালুর জন্য বরাদ্দ ছিল শুধুই মাটির ভাঁড়। এমনকি প্রচণ্ড জলতেষ্টা পেলেও উনি ইচ্ছেমতো জল পান করতে পারতেন না, কোনও দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ ওঁকে জল দিলে তবেই উনি তেষ্টা মেটাতে পারতেন।
উচ্চবর্ণের হিন্দুরা ওঁকে মানুষ হিসেবে কতটুকুই বা সম্মান করতেন? কিন্তু বালু কখনও কোনও প্রতিবাদ করেননি। তাঁর সমস্ত প্রতিবাদ ছিল ক্রিকেটের ভাষায়। উনি যত মানসিক ভাবে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হতেন, ততই নিজের সেরাটুকু খেলার সময় উজাড় করে দিতেন। বালুর জন্য হিন্দুরা ইউরোপিয়ানদের হারিয়ে দিল। চামারের ছেলের জন্যই বর্ণহিন্দু খেলোয়াড়দের মুখে শেষ পর্যন্ত হাসি ফুটল। কার্যত নিজেদের থুতু নিজেরাই গিলে ব্রাহ্মণরা বালুর শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করতে বাধ্য হলেন।
হিন্দু তথা ভারতীয়রা ব্রিটিশদের কাছেই ক্রিকেট খেলা শিখেছিল। ইউরোপিয়ানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের এই দুর্দান্ত জয় তৎকালীন ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকেও গঠনমূলক ভাবে প্রভাবিত করেছিল। এই দলিত বোলারের অবিশ্বাস্য দক্ষতা সেই সময়কার ক্রিকেট পৃষ্ঠপোষকদের রীতিমতো চমকে দিয়েছিল। সেই সময়ের অন্যতম সেরা ক্রিকেট দল ছিল নাটোরের মহারাজার দল। বালু ওই দলে ১৯০১ সালে জায়গা পেয়ে দুর্দান্ত বল করেছিলেন। নাটোরের মহারাজা এবং বালু এক দলে খেলছেন, এটা ওই সময়ের জাতপাতের জটিল হিসেবকে তীব্র ভাবে আঘাত করেছিল। আবার ১৯১১ সালে পাটিয়ালা মহারাজার পৃষ্ঠপোষকতায় যে ভারতীয় ক্রিকেট দল প্রথম বারের জন্য ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল, সেই সফরে অভিজ্ঞতার অভাবে ভারতীয় দল ব্যর্থ হলেও বালু উজ্জ্বল ধ্রুবতারার মতো সেরা পারফর্মার ছিলেন। ওই সফরে উনি মোট ১১৪টি উইকেট পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ব্যাট হাতেও উনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ওঁর কেন্ট, কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি কিংবা এমসিসির মতো উচ্চমানের দলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যাটিং-সাফল্য নাকউঁচু ইংরেজদের সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছিল। নিজের দক্ষতা এবং যোগ্যতা প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণ করা সত্ত্বেও ওঁকে হিন্দু দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হত না, অথচ ওঁর অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার পূর্ণ ছিল। এমনকি একবার পুরোপুরি অন্যায়ভাবে ওঁকে দল থেকে বাদও দেওয়া হয়। এই অন্যায়ের প্রতিবাদে বালুর দুই ভাই বিঠল এবং শিবরাম (ওঁরাও দক্ষ ক্রিকেটার ছিলেন) দল থেকে সরে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত বালুকে দলের সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়। তবে ক্রিকেটের ময়দানে বালুর এই লড়াই ব্যর্থ হয়নি। বিংশ শতাব্দীর কুড়ির দশকের গোড়ার দিকেই হিন্দুরা বালুর ভাই বিঠলকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেন। বালুর অনবদ্য পারফরম্যান্স এবং বিঠলের অসামান্য দক্ষতা হিন্দু কর্তৃপক্ষকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল। এই সিদ্ধান্ত এই কারণেই ঐতিহাসিক যে, একজন দলিতের অধীনে বর্ণহিন্দু ও ব্রাহ্মণ ক্রিকেটাররা খেলছেন এবং একসঙ্গে মিলেমিশে জয়োৎসব পালন করছেন। জাতপাতে দীর্ণ তৎকালীন ভারতে এই দৃশ্য আদৌ সুলভ ছিল না।
বালু যখন খেলতেন, তখন ভারতীয় ক্রিকেট দল টেস্ট খেলার সুযোগ পায়নি। ১৯৩২ সালে ভারত প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলে। বালু তত দিনে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। তবে বাঁহাতি স্পিনার বালুকে যাঁরা বল করতে দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই বলেছেন যে, উনি ছিলেন তাঁর সময়ের সেরা স্পিন বোলার। শৈশব থেকেই ওঁকে প্রচণ্ড অপমান-যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে, কিন্তু উনি ময়দান ছেড়ে চলে যাননি, নিজের লড়াই এক মুহূর্তের জন্যও থামিয়ে দেননি। ক্রিকেটই ছিল ওঁর আত্মপ্রকাশের প্রধান মাধ্যম। ক্রিকেটার হিসেবে ওঁর লড়াই শুধুই খেলার ময়দানে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং ওই লড়াই জাতপাতের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভাঙতে সাহায্য করেছিল। গাঁধীজির দলিত বা হরিজনদের নিয়ে আন্দোলনের আগেই বালুর এই লড়াই সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও ভীষণ রকম তাৎপর্যপূর্ণ। বালুর জীবন-সংগ্রাম যে কোনও নিপীড়িত মানুষকেই ভীষণভাবে উদ্বুদ্ধ করে। ভারত তো স্পিন বোলিংয়ের জন্য বিখ্যাত। বিষেণ সিংহ বেদী, এরাপল্লী প্রসন্ন, ভাগবত চন্দ্রশেখর, শ্রীনিবাসন ভেঙ্কটরাঘবন, হরভজন সিংহ এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো অনেক দুনিয়া-কাঁপানো স্পিনার ভারতে জন্মেছেন। ভারতের সফলতম স্পিনার অনিল কুম্বলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোট ৯৫৬টি উইকেট পেয়েছেন। তবে পালওয়ানকর বালুর হাত ধরেই ভারতীয় স্পিন বোলিংয়ের গৌরবময় জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। ওঁর সমসাময়িক কেউ কেউ ওঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রথম নায়ক বলে অভিহিত করেছেন। ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ তাঁর ‘আ কর্নার অব আ ফরেন ফিল্ড : দি ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি অব আ ব্রিটিশ স্পোর্ট’ বইটিতে বালু প্রসঙ্গে সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
উনবিংশ শতকে খেলা শুরু করা পালওয়ানকর বালু অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও খেলার ময়দানে নিজের সেরাটুকু দিয়ে গিয়েছেন। ওঁর জীবনসংগ্রাম আমাদের বুঝিয়ে দেয় যে, পরিস্থিতি যতই জটিল হোক না কেন, আশপাশের লোকজন যতই অপমান করুক না কেন, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে নিজের কাজটা করে গেলে একদিন ঠিক সাফল্য আসবেই। এই একবিংশ শতাব্দীতেও আমরা যখন দেখি যে, আমাদের
দেশে দলিতরা মাঝে-মাঝেই ভয়ঙ্কর লাঞ্ছনা-অপমানের শিকার হন, তখন পালওয়ানকর বালুর উঠে আসার লড়াই বিশেষ মাত্রা পায় বইকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy