Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ছোটগল্প

মেহের এখন শুটিং ফ্লোরে

ক্যামেরাপার্সন গম্ভীর হয়ে তাকায় ছেলেটির দিকে। ছেলেটির কোনও বিকার নেই।  

ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

মৌসুমী বিলকিস
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

হাঁটছে মেহের। শীতের ভোর। স্ট্রিট লাইটের নীচে জমাট ধোঁয়াশা। সামনে-পিছনে কেউ থাকলেও কুয়াশায় ঢাকা। বুকের মধ্যে ভয়-ভয়।

একা মেয়ে। ফাঁকা রাস্তা।

গলি পেরিয়ে, পার্ক পেরিয়ে বড় রাস্তা। মাঝে-মাঝে হুস-হুস করে ছুটে যাচ্ছে বাইক, সাইকেল। ঘড়িতে পাঁচটা। হাত তুলে বাইক দাঁড় করাতে গিয়েও সে পিছিয়ে এল। আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে। ইস! শুটিংয়ে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে। কুয়াশার ওপার থেকে বাইকের শব্দ। অজানা আরোহী। ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় নেমে হাত তুলে দাঁড়ায় মেহের। বাইক থামে।

“লিফট দেবেন?”

“কোথায় যাবেন?”

“টালিগঞ্জ।”

“আনোয়ার শা থেকে ডান দিকে ঘুরব।”

“তা হলে... ওখানেই নামিয়ে দেবেন প্লিজ়?”

“চলুন।”

মধ্যবয়সি বাইকারের পিছনে বসে মেহের। চলতে থাকে বাইক। ছ’টার মধ্যে টেকনিশিয়ানস স্টুডিয়োর সামনে পৌঁছতেই হবে। ওখান থেকেই ছাড়বে শুটিং ইউনিটের গাড়ি। টালিগঞ্জ ছাড়িয়ে অনেকটা গিয়ে তার পর স্টুডিয়ো। বেশির ভাগ স্টুডিয়ো এখন টালিগঞ্জ চত্বরের বাইরে। এক-একটা স্টুডিয়োয় অনেকগুলো করে ফ্লোর। চলছে একাধিক সিরিয়ালের শুটিং। মেহের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর।

না, বাইক-আরোহী মন্দ নন। ভদ্রলোক। অযথা ভয় পাচ্ছিল। ঠিক সময়ে সে পৌঁছে গেল।

শুটিং ফ্লোর। লাইট হচ্ছে। সেট সাজানো চলছে। হই-হট্টগোল।

মেহের দৌড়োদৌড়ি করছে মেকআপ রুম আর কস্টিউম রুমে। চলতি সিরিয়ালের মাঝখানে কাজ করতে ঢুকে কিছু বুঝে ওঠাই মুশকিল। তবু পোশাক, মেকআপ-সহ আজকের শেডিউল অনুযায়ী ঠিক সময়ে আর্টিস্টরা রেডি হচ্ছেন কি না তদারক করছে।

কয়েকটা দৃশ্য শুট হয়ে গিয়েছে। একটু ফুরসত পেয়ে শুটিং

জ়োনে ক্যামেরার পিছনে এসে

দাঁড়ায় মেহের।

“রোল সাউন্ড।”

“রোলিং।”

“রোল ক্যামেরা।”

“রোলিং।”

পরিচালকের নির্দেশে যথাক্রমে সাউন্ড রেকর্ডিস্ট এবং ক্যামেরাপার্সন নিজের-নিজের যন্ত্র অন করে উত্তর দেন। চার জন তরুণ ফ্রেমে ঢুকে পড়ে। যার ডায়ালগ বলার কথা সে বলতে শুরু করে—

“তুই এখানে? আমরা তোকে খুঁজে-খুঁজে...”

“আরে বাপ রে! ‘অ্যাকশন’ বলেছি? ফ্রেমে ঢুকে পড়লে কেন?” পরিচালক রেগে গিয়েছেন...

“তোরা কাদের নিয়ে এসেছিস? আমি কি অ্যাক্টিং স্কুল খুলেছি? মাথা খারাপ করে দেবে। যাও, পজ়িশনে গিয়ে দাঁড়াও।”

চার তরুণ অপ্রস্তুত। ফ্রেমের বাইরে গিয়ে দাঁড়ায়। চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, সংক্ষেপে চিফ এডি, স্ক্রিপ্টের কপি হাতে চারজনের সামনে আসেন, “‘অ্যাকশন’ শুনে ফ্রেমে ঢুকবি। না হলে...” কিছু বলতে গিয়েও থেমে যান।

চার তরুণ মাথা নাড়ে। ফ্রেমের মধ্যে দেয়ালে টাঙানো একটা পেন্টিং এক দিকে কাত হয়ে।

“ওরে পেন্টিংটা সোজা করে দে। টাঙানোর সময় খেয়াল করিস না?’’

ক্যামেরাপার্সন বলেন। আর্ট সেটিংয়ের একটি ছেলে ফ্রেমে ঢুকে পেন্টিংটা ঠিক করে, “দাদা, তখন তো ঠিক ছিল।”

ক্যামেরাপার্সন গম্ভীর হয়ে তাকায় ছেলেটির দিকে। ছেলেটির কোনও বিকার নেই।

“রোল সাউন্ড।”

“রোলিং।”

“রোল ক্যামেরা।”

“রোলিং।”

“অ্যাকশন।”

ছেলেগুলো ফ্রেমে ঢোকে। যার উদ্দেশে সংলাপ বলার কথা সেই অভিনেতা দাঁড়িয়ে ফ্রেমের বাইরে, ক্যামেরা থেকে দূরে। রিহার্সালের সময় তার দিকে তাকিয়ে ডায়ালগ বলেছে, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্র্যাকটিস করছিল। এখন সেই অভিনেতা যদিও দূরে দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকিয়ে সংলাপ শুরু করে, “তুই এখানে? আমরা তোকে খুঁজে-খুঁজে...”

লুক হবে ক্যামেরার কাছাকাছি।

“ওরে, তোরা কোথা থেকে... একটা জিনিস বুঝতে না পারলে কী করে শট নিই? কোনও কাজে চান্স পাসনি, না? তাই অভিনয় করতে এসেছিস?... পাগল করে দেবে... উফ! চাপের ওপর চাপ! এইখানে লুক, এইখানে!” দাঁতে দাঁত চেপে পরিচালক তাকানোর জায়গা দেখিয়ে দেন। ইউনিটের লোকজন মুখ টিপে হাসছে। চার তরুণ ফ্রেমের বাইরে গিয়ে দাঁড়ায়।

সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা বেড়েছে। অনেক তরুণী-তরুণ কাজ করতে আসছে দূরদূরান্ত থেকে। সবাই ভাল করছে না। কিন্তু কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। এই চারজনেরও মুখের ভিতর যেন মফস্সল লেগে। খেয়াল করে মেহের।

“এই যে, চারজনে ঠিক এখানে লুক দিবি।” চিফ এডি নিজের হাতের পাতা লুক পজ়িশনে স্থাপন করেন। আবার শট হয়। এই শটটাকেই ‘ওকে’ করেন পরিচালক।

সাউন্ড রেকর্ডিস্টের টেবিলে মনিটর। একজন এডি লিখছে শটের টাইম কোড।

“ক’মিনিট হল রে?” পরিচালকের প্রশ্নে সে উত্তর দেয়, “এখনও পর্যন্ত ছ’মিনিট।”

“কী বলছিস! বেশি হবে।”

“না, পাক্কা ছ’মিনিট,” বলে এডি। স্ক্রিপ্টের কপিতে প্রতিটি শটের টাইম কোড, লেংথ মেপে রাখছে সে। ভয়েসওভার থাকলে অভিনেতাকে দিয়ে তক্ষুনি রেকর্ড করাচ্ছে। তার নোট-সহ স্ক্রিপ্টের কপি ক্যামেরার চিপ-এর সঙ্গে চলে যাবে এডিট শুটে। এই কপি দেখেই ভিডিয়ো এডিট করবেন এডিটর।

এক দিনের শেডিউল লেফট ওভার হলে পরের দিনের নির্ধারিত শেডিউল ঘাঁটবে। ধারাবাহিকের এক-একটা এপিসোড রেডি করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চ্যানেলকে দিলে তবেই টেলিকাস্ট হবে। টাইট অবস্থা। এপিসোড ব্যাঙ্কিং নেই। যেন যুদ্ধ চলছে, শুটিং ফ্লোরে এবং এডিট শুটে। দিনরাত জেগে কাজ করছে রাইটার টিম, শুটিং ইউনিট

এবং এডিটর।

“তুমি হাঁ করে ফ্লোরে দাঁড়িয়ে কী করছ? যাও মেকআপ রুমে,” সিরিয়ালের প্রোগ্রামার। বলার ভঙ্গিটা খুব বিশ্রী। মেহের তবু রাগে না, “চিন্তা করবেন না, কখন কী করতে হবে ঠিক পেয়ে যাবেন।”

মুখে হাসি ঝুলিয়ে রাখে সে। তবু প্রোগ্রামারের মুখের রেখা কঠিন হয়ে থাকে। বিরক্ত মেহের স্থান ত্যাগ করে, ‘‘উফ! যে যাকে পারছে রাগ দেখাচ্ছে। কারও মেজাজ-মর্জি ঠিক নেই।’’ ভাবতে-ভাবতে সে স্টুডিয়োর দোতলায় মেকআপ রুমগুলোর দিকে এগিয়ে যায়।

মেজাজ ঠিক থাকা কঠিন। লাগাতার কাজ। অবসর নেই। উইক এন্ড বলে কিছু নেই। সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রিতে মিনিমাম ঘুমের সময় নেই ইউনিট সদস্যদের। অভিনেতাদের চোখের নীচে কালি, মেকআপের আড়ালে লুকিয়ে। ক্লান্তি ঢেকে ঝকঝকে করে দিতে হবে। টেলিভিশনের সামনে বসে থাকা দর্শক ভাবতেও পারবেন না এই নিরন্তর চাপ।

একটা আস্ত ইন্ডাস্ট্রি ঘুম, খাওয়া, ব্যক্তিগত অবসর ত্যাগ করে ঢুকে পড়েছে থোড়-বড়ি-খাড়া বৃত্তের মধ্যে। চ্যানেলগুলো যে ভাবে নির্দেশ দেবে, সে ভাবেই কাজ করতে হবে। কর্পোরেট পৃথিবী যে দিকে যে ভাবে চালাবে, সে ভাবেই এগোবে

টেলি ইন্ডাস্ট্রি, ক্লান্তিহীন দৌড়ের

সঙ্গী হয়ে, যে দৌড়ের পিছনে জমবে জমাট অন্ধকার।

আর-একটা সেকেন্ড ইউনিটে কাজ করতে গেল মেহের। সকাল সাতটা থেকে প্রথম ইউনিট কাজ করছে। সেকেন্ড ইউনিটের কল টাইম ছিল বিকেলের দিকে। সেকেন্ড ইউনিট ঢুকে যাওয়ার পরও চলছে ফার্স্ট ইউনিটের শুট। সেকেন্ড ইউনিটের ক্যামেরায় সিরিয়ালের প্রোমো শুট করছে চ্যানেলের প্রোমো প্রোডিউসার। সেকেন্ড ইউনিট শুট শুরু করতে পারছে না।

নিজের কাজ যতটা সম্ভব গুছিয়ে ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে নেয় মেহের। বাকি দু’জন এডি-র সঙ্গেও আলাপ করে। এডি গিল্ডের প্রচুর সদস্য। সবাইকে সে চেনে না। ফার্স্ট ইউনিটের চিফ এডি

পাশ দিয়ে যেতে যেতে মন্তব্য ছুড়ে দেয়, “এখানে আড্ডাবাজি করতে এসেছ? সব কাজ পড়ে, আর সব এডি এখানে দাঁড়িয়ে?” চিফ এডি কথাটা বলেই হাঁটা দেয়।

“দাদা, আমার যেটুকু দায়িত্ব, তার কিচ্ছু কাজ পড়ে নেই। অযথা রাগ করবেন না,” হাসে মেহের। তবু চিফ এডি-র মুখে রাগ জমে থাকে।

প্রোমো শুটিং শেষ। ফার্স্ট ইউনিটও প্যাকআপ হয়ে গিয়েছে। ক্যামেরা ফ্রি হতেই সেকেন্ড ইউনিট শুটিং শুরু করেছে।

ফ্যান্টাসি গল্প। ভারী-ভারী পোশাক। চড়া মেকআপ। সেই সকাল থেকে শুট করছে দু’জন আর্টিস্ট। এখনও তাদের দু’টো দৃশ্য বাকি। প্রোডাকশন হাউসের কারও অনুরোধে অপেক্ষা করছে। চোখে ঘুম। মেকআপ ভেদ করেও বোঝা যাচ্ছে। লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ার জায়গা নেই। সোফার উপরেই বসে চোখ বন্ধ করে ঘুমে ঢুলছে।

মেহের যত বার মেকআপ রুমে আর্টিস্ট ডাকতে যাচ্ছে তত বার, “আমার?” প্রশ্নের সঙ্গে-সঙ্গে কানের ভারী ঝুমকো দু’টো নড়ে উঠছে। নিরাশ করে মেহেরকে বলতে হচ্ছে, “স্যরি। এখন আপনার নয়।”

আর এক জন ঘুমচোখে কোনও রকমে তাকিয়ে। নকল গোঁফের খানিকটা খুলে ঝুলছে ঠোঁটের উপর। পাশে খুলে রাখা ঢাউস পাগড়ি।

রাত দু’টো। দু’জন আর্টিস্ট এগজ়িকিউটিভ প্রোডিউসারকে, যাঁকে সবাই ‘ইপি’ বলে, ডেকে বারবার বলেছেন ওদের দৃশ্যগুলো শুট করে নিতে। “এক্ষুনি হবে,” বারবার আশ্বাস দিয়েছেন ইপি। আপাতত যে দৃশ্যের জন্য ফ্লোর রেডি, সেটা নায়িকা ও এক জুনিয়র আর্টিস্টের। জুনিয়র আর্টিস্ট পোশাক পরে রেডি হয়ে বাইরে খোলা আকাশের নীচে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে। তাঁর জন্য মেকআপ রুমে জায়গা নেই। মেহের তাঁকে বলে, “আপনি ফ্লোরে চলুন। এ বার আপনার দৃশ্য।”

সন্ধে থেকে বসে থাকা ছেলেটি ঝিমুনি ভাব কাটিয়ে তাড়াতাড়ি চেয়ার ছেড়ে ফ্লোরের দিকে এগিয়ে যায়। মেহের নায়িকাকে ডাকতে মেকআপ রুমের দিকে হাঁটে। যেতে-যেতে দেখে পাশের পুকুর। জলে আলো পড়ে ঢেউয়ে-ঢেউয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আর্ট ডিপার্টমেন্টের জিনিসপত্র ভর্তি একটা ছোট্ট দোতলা বাড়ির প্রতিবিম্ব কাচের জানলার আলো-সহ জলে ভাসছে। জায়গাটা একটা ফার্ম হাউসের মতো। আগে পিকনিক স্পট ছিল। এখন শুটিংয়ে ভাড়া দেয়।

মেকআপ রুমে নক করে ঢোকে মেহের। নায়িকা একটা সোফায় বসে-বসেই

ঘুমিয়ে পড়েছেন। মেহের আলতো গলায় ডাকে, “ফ্লোরে ডাকছে। আপনার দৃশ্য।”

এক ডাকেই উঠে পড়েন নায়িকা। ঘুম চোখে তাকান। বাথরুমে যান। বাথরুমের দরজা খোলার শব্দে সকাল থেকে বসে থাকা আর্টিস্ট দু’জনেরও ঘুম ভাঙে। বড় সোফার দু’প্রান্তে দু’জনে বসে ঘুমোচ্ছিলেন।

“আমাদের সিন?”

“না গো, এখন নায়িকার সিন শুট হবে,” বিব্রত হয়ে ‘গো’ বলে ফেলে মেহের। দু’জনের মুখ থমথমে।

নায়িকা বাথরুম থেকে বেরোন। তাঁর টাচআপ করেন মেকআপ আর্টিস্ট। এলোমেলো কুচো চুল ঠিক করেন হেয়ার ড্রেসার। পুরুষ অভিনেতা ছেলেদের মেকআপ রুমে চলে যান। শুটিংয়ের পোশাক খুলে নিজের পোশাক পরেন। মেকআপ তুলতে শুরু করেন। কাকে যেন ফোনে ধরেন, “সব কিছুর একটা লিমিট আছে দাদা। আমি চললাম। আর শুট করতে পারব না।”

মহিলা অভিনেতা পোশাক পাল্টাতে বা মেকআপ তুলতে পারছেন না। আবার রেডি হতে হলে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু অসম্ভব রেগে গিয়েছেন, “এক্সট্রা শুট করে দেব বলেছি মানেই সারা দিনরাত ফ্লোরে বসিয়ে রাখতে হবে? এখন ভোর তিনটে বাজে। কী হচ্ছে এটা? চোদ্দো ঘণ্টার বেশি শুট করার তো কথা নয়! রাজি হয়েছি বলে অপব্যবহার করতে হবে?”

ইপি ছুটে এসেছেন মেকআপ রুমে। ফ্লোর ও পোস্ট প্রোডাকশনের যাবতীয় ঝঞ্ঝাট তাঁরই সামলানোর কথা। বোধ হয় প্রোডাকশন হাউসের উপর দিকের কারও ফোন এসেছে তাঁর কাছে। অর্থাৎ যার এখন ঘুমনোর কথা, তিনি সারা দিন অফিস করে এত রাতেও ঘুমোতে পারছেন না। বিছানায় তাঁর ছোট্ট মেয়ে বাবার গলা শুনে হয়তো জেগে গেছে। তাকিয়ে আছে বাবার দিকে।

মেহের নায়িকাকে নিয়ে ফ্লোরে আসে। শুট শুরু হয়। বিশাল ক্রোমা কাপড় দিয়ে মোড়া ফ্লোরে দৌড়চ্ছেন নায়িকা। কেউ একজন ফ্লোরের কোণে রাখা জিনিসপত্রের আড়ালে ঘুমোচ্ছে। নাক ডাকার প্রবল শব্দ।

“এই, কে ঘুমোচ্ছিস রে?” বিরক্ত হয়ে চেঁচান পরিচালক। নাক ডাকার শব্দ কমে, কিন্তু বন্ধ হয় না। শুট চলে।

হঠাৎ ইপি ফ্লোরে এসে মেহেরের ওপর চোটপাট শুরু করেন, “কেন বলেছ এখন ওদের সিন হবে না? তোমার জন্যই ওরা রেগে...”

অযথা দোষারোপে মেহের অবাক। কিছুক্ষণ স্তব্ধ। মাথা গরম হতে থাকে। নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য রকম চেঁচিয়ে ওঠে, “কানের গোড়ায় দেব! নিজের দায়িত্ব নিজে সামলাতে পার না? অকারণে অন্যের উপর...”

পুরো ফ্লোর চুপ।

যাক, থোড়-বড়ি-খাড়া বৃত্তটার মধ্যে অবশেষে ঢুকতে পেরেছে মেহের। এ বার সেও টিকে যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Short Story ছোট গল্প Rabibasariya Bengali Short Story Meher Ekhan Shhoting Floore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy