ছবি: তারকনাথ মুখোপাধ্যায়
কল্যাণ কলিং বেল টিপে অপেক্ষা করছে। পুরনো দিনের প্লাস্টিকের কলিং বেল। ঢিপির মতো গোল, কালো, ওপরে সাদা বোতাম। দেখলে মনে হয়, কলিং বেল নয়, কালো চাদর গায়ে কোনও বুড়ো মানুষ। ধূসর ভুরু কুঁচকে এখনই ধমক দিয়ে উঠবে।
‘‘অ্যাই, তুমি এ বাড়িতে আসো কেন? জানো না এখানে এক জন মেয়েমানুষ একা থাকে? তার পঁাচ বছরের একটা ছেলে আছে। জানো না তার স্বামী নেই? একা থাকা মেয়েমানুষের বাড়িতে এ ভাবে আসা উচিত?’’
‘‘স্যার, আজ মাসের তিন তারিখ।’’
‘‘ও সব তোমার অজুহাত।’’
‘‘আমি তো এক বছর ধরে আসছি স্যর। পঁাচ মিনিটও থাকি না। বেশির ভাগ দিন দরজার বাইরে থেকে চলে যাই।’’
বুড়ো আরও জোরে ধমকে উঠবে, ‘‘চুপ করো। আমাকে বোকা ভেবো না।’’
কলিং বেল থেকে মন সরাল কল্যাণ। শান্তা দরজা খুলছে না কেন? সে কি বাড়ি নেই? তা কী করে হবে? আসার আগে প্রতিবারের মতো আজও অফিস থেকে ফোন করেছিল।
‘‘আমি আসছি।’’
ফোন ধরে শান্তা হকচকিয়ে যায়। প্রতিবারই যায়। এমন ভাবে চুপ করে থাকে যেন গলা চিনতে পারছে না। তার পর একটু সময় নিয়ে বলে,
‘‘ও আপনি।’’
কল্যাণ বলে, ‘‘হ্যঁা, আজ তিন তারিখ।’’
শান্তা গলা নামিয়ে বলে, ‘‘মনে ছিল না। কখন আসবেন?’’
কল্যাণ বলে, ‘‘ওই যেমন যাই, অফিস থেকে বেরিয়ে। ছ’টা-সোয়া ছ’টা। অসুবিধে হবে?’’
শান্তা চুপ করে রইল। কল্যাণ একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘‘আজ এক বছর হল।’’
শান্তা এ বার ফোন কেটে দিল। বছরের কথাটা কি শুনতে পেল না? তাই হবে। মেয়েটার গলা আজ ভারী ঠেকল। ঠান্ডা লেগেছে? লাগতে পারে। ওয়েদার ভাল যাচ্ছে না। ফোন কেটে দেওয়ার পরেও হাতে ধরা মোবাইলটার দিকে কিছু ক্ষণ তাকিয়ে রইল কল্যাণ। এই তার এক অদ্ভুত স্বভাব। শান্তার সঙ্গে কথা বলার পরে মুহূর্তখানেকের জন্য হলেও ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। যেন শান্তার কথাগুলো দেখতে চায়। সব ‘তিন তারিখ’ অবশ্য অফিস থেকে ফোন করা হয় না। শনি-রবি আছে, ছুটিছাটাও পড়ে যায়। সব সময়ে শান্তার ওখানে যাওয়াও হয় না। ঝড়বৃষ্টি, বন্ধ, ট্রেনের গোলমাল।
শান্তা বলে, ‘‘আপনি তারিখ নিয়ে ব্যস্ত হবেন না।’’
কল্যাণ ঢোঁক গিলে বলে, ‘‘না...না, ব্যস্ত হইনি।’’
শান্তা বলে, ‘‘এ মাসটা থাক না। পরের মাসে এক সঙ্গে হবে ’খন।’’
কল্যাণ নিচু গলায় বলে, ‘‘আমি উদয়কে কথা দিয়েছিলাম।’’
শান্তা বলে, ‘‘প্রতি মাসে দিনক্ষণ ধরে আসতে হবে এমন তো নয়। রনোর বাবার সঙ্গে আপনার কী কথা হয়েছিল জানি না। আপনাকে তো বলেছি এই বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। টাকাপয়সা নিয়ে ও কখনও আমাকে কিছু বলত না। আপনার অসুবিধে হতে পারে, তাই বলছিলাম।’’
কল্যাণ গাঢ় গলায় বলে, ‘‘আমার তো এক দিন অসুবিধে, তুমি তো পাকাপাকি অসুবিধের মধ্যে থাকো শান্তা। ক’টা টিউশন, সামান্য কিছু সেলাইয়ের কাজ দিয়ে চলতে হয়। বাচ্চাটাও রয়েছে।’’
শান্তা কথা ঘোরায়। বলে,
‘‘চা খাবেন?’’
‘চা খাবেন?’ কথাটা বলার মধ্যে অনিচ্ছে থাকে। কল্যাণ বুঝেও যেন বুঝতে চায় না। বলে, ‘‘দাও।’’
চায়ের কাপ রেখে ফের ভিতরে চলে যায় শান্তা। যাওয়ার আগে বলে, ‘‘আপনি চা খান। আমি ভিতরে যাই, বাচ্চাটার জ্বর।’’
কল্যাণ একা বসে চা খায়। উসখুস করে। শান্তা আসবে? আসে না। যে এক-দু’দিন ভিতরে ঢোকে, রেলিং ঘেরা এক চিলতে বারান্দায় বসিয়ে ছুতোনাতায় ভিতরে চলে যায় শান্তা। চা অর্ধেক খেয়ে উঠে পড়ে কল্যাণ। কিছু না বলে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে। প্রতিজ্ঞা করে, আর আসবে না। পারে না। তিন তারিখ এলে অস্বস্তি হয়, খচখচ করে মনটা। কী যেন তাড়া করে। কী তাড়া করে?
ঘুপচি দেড় কামরার ফ্ল্যাট। দিনের বেলাতেও আলো জ্বালাতে হয়। এক বছর আগে উদয় এক রকম জোর করেই নিয়ে এসেছিল। হাতলভাঙা চেয়ার আর মোড়া নিয়ে বারান্দাতে বসার ব্যবস্থা। সে দিনও শান্তা চা এনেছিল। সেই প্রথম দেখা। চমকে ওঠে কল্যাণ। অথচ চমকানোর মতো কিছু ছিল না মেয়েটার। এই জন্যই কি বলে জীবন যুক্তিহীন? চমকে দেওয়ার জন্য তার কারণ লাগে না। শান্তা নীল আর সাদায় মেশানো খুব সাধারণ একটা ছাপা শাড়ি পরেছিল। সঙ্গে আরও ম্যাড়মেড়ে সাদা ব্লাউজ়। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, গেস্ট আসায় দ্রুত হাতে কাপড় বদলেছে। কোনও রকমে হাতখোঁপা বেঁধেছে। ঘরে ঢুকতে ঢুকতে সেটাও ভেঙে পড়েছে ঘাড়ের ওপর। রোগা, গায়ের রং ময়লার দিকে। মুখে প্রসাধনের ছাপ মাত্র নেই। এমনকি একটা টিপও নয়। মুখ তুলে হাত জোড় করে নমস্কার করল। বুকটা ধক করে উঠেছিল কল্যাণের। স্নিগ্ধ, ছলছলে দুটো চোখ। পঁয়ত্রিশ বছরের পুরুষজীবনে নারী কম দেখা হয়নি কল্যাণের। এই বিষয়ে তার কোনও উৎসাহ নেই। বরং সে এড়িয়েই চলে। তার পরেও শান্তাকে দেখে মনে হয়েছিল, এমন সু্ন্দর মেয়ের সঙ্গে তার আগে কখনও দেখা হয়নি কেন?
উদয় হেসে বলেছিল, ‘‘আমার বউ শান্তা। কেমন সুন্দর বল।’’ কল্যাণ লজ্জা পেয়েছিল। উদয়টা এ রকমই। যা মুখে আসত বলে ফেলত। শান্তা ভুরু কুঁচকে তাকাল। উদয় বলল, ‘‘আরে বাপু লজ্জার কিছু নেই। এক সময়ে এর সঙ্গে এক কোম্পানিতে চাকরি করেছি। ভালই ছিল। এই বেটা সরকারি চাকরি পেয়ে পালাল। কোম্পানিও এখান থেকে পাততাড়ি গোটাল। আমি লাট খেতে খেতে শেষ পর্যন্ত বিজ়নেসে এসে আটকেছি। আট বছর পর হারামজাদার সঙ্গে লঞ্চঘাটে দেখা। গত বুধবার। জড়িয়ে ধরে চিল্লামিল্লি শুরু করল, এত দিন কোথায় ছিলি? বললাম, নির্বাসনে। এক দিন বাড়ি আয়। সুন্দরী বউ দেখে যা।’’
কল্যাণ চাপা গলায় বলল, ‘‘আবার বাজে কথা।’’
শান্তা মাথা নামিয়ে নিচু গলায় বলল, ‘‘আপনার বন্ধু শুধু বাজে কথা বলতে জানে।’’
ভিতর থেকে শিশুর কান্না ভেসে আসায় তড়িঘড়ি ছুটে গিয়েছিল শান্তা। এত ক্ষণ যে খোঁপা ঘাড়ে ভেঙেছিল, এ বার একরাশ চুল হয়ে বুকে ছড়িয়ে পড়ে। কল্যাণের শরীর শিরশির করে ওঠে। ঘোর ভাঙে উদয় মুচকি হেসে হাতে হাত রাখলে। বলে, ‘‘রাতে খেয়ে যাবি। শান্তা শুধু দেখতে সুন্দর নয়, ভাল রাঁধেও।’’
কল্যাণ তাড়াতাড়ি বলে, ‘‘না না। আজ নয়, পরে এক দিন হবে।’’
ফিরে যাওয়ার পথে উদয় অন্ধকার গলিতে ফের হাত চেপে ধরল। নিচু গলায় বলল, ‘‘একটা উপকার করতে হবে ভাই। ব্যবসা করতে গিয়ে ডুবে গিয়েছি। গলা পর্যন্ত ধার। বাড়িভাড়া দিতে পারি না। যে কোনও দিন বউ-বাচ্চাকে নিয়ে পথে বসতে হবে। বেশি নয়, মাত্র দু’হাজার টাকা করে যদি মাসে দিস... সিচুয়েশন একটু ঠিক হলেই ফিরিয়ে দেব... তোর পায়ে পড়ি কল্যাণ... প্লিজ় হেল্প মি। বিয়ে-থা করিসনি, তোর খরচপাতি কম। যদি চাস, নিজে মাসে এক দিন এসে শান্তার হাতে টাকা দিয়ে যাবি। রাতে খেয়েও যাবি। ওই সময়ে আমি বাড়ি থাকব না।’’
কল্যাণ ঝটকা দিয়ে হাত সরিয়ে বলল, ‘‘ছিঃ উদয়। এত নীচে নেমেছিস!’’
এত ঘেন্নার পরও সে দিন রাতে কল্যাণ স্বপ্ন দেখল। শান্তা তাকে যত্ন করে ভাত বেড়ে দিচ্ছে। কঁাধের পাশ দিয়ে বুকের ওপর এক ঢাল চুল এসে পড়েছে তার।
সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে উদয়ের সঙ্গে আবার দেখা। ছুটির দিন ছিল। গঙ্গা পারাপারের শেষ লঞ্চে উঠেছিল কল্যাণ। ওপরে গিয়ে দেখে, নির্জন ডেকের এক পাশে দঁাড়িয়ে আছে উদয়। তাকিয়ে আছে অন্ধকার জলের দিকে। দেখতে পেয়ে নিজেই এগিয়ে এসেছিল।
‘‘রাগ করিস না ভাই। অভাবে মাথার ঠিক থাকে না। পাগলের মতো কী বলতে কী বলে ফেলি। বৌ-বাচ্চার জন্যই তো বলি। প্লিজ়, রাগ করিস না।’’
কল্যাণ বলে, ‘‘ঠিক আছে। শান্তার কানে এ সব গেলে কী হবে বল তো? অমন সুন্দর, নরম মনের মেয়ে।’’
উদয় অন্ধকারে হাসল। বলল, ‘‘যাবে না। ও জানে ওকে আমি খুব ভালবাসি।’’
কল্যাণ নরম গলায় বলল, ‘‘টাকা পয়সা লাগলে বলিস।’’
‘‘বলব।’’
কথা বলতে বলতে কল্যাণকে ফেলে উদয় রেলিঙের দিকে এগিয়ে গেল। লঞ্চ তখন মাঝগঙ্গায়। চাপা স্বরে ভোঁ ডাক দিয়েছে। এক সময়ে উদয় দু’হাতে রেলিঙে ভর দিয়ে ঝুঁকে ফিসফিস করে বলল, ‘‘কল্যাণ, জল আমাকে ডাকছে। এখন যদি আমি জলে ঝঁাপ দিই, তুই আটকাবি তো? নইলে কিন্তু মরে যাব মাইরি। শান্তা একা হয়ে যাবে।’’
শরীর ঝিমঝিম করে ওঠে কল্যাণের। চাপা গলায় বলে, ‘‘কী পাগলের মতো বকছিস? নাটক করছিস?’’
উদয় তার ডান পা রেলিঙের ওপর তোলে। কল্যাণ কী করবে ঠিক করতে পারে না। ছুটে গিয়ে চেপে ধরবে? চিৎকার করবে? নাকি...
কয়েক মুহূর্তের ব্যাপার ছিল। উদয় আলতো ভাবে রেলিঙ টপকে যায়। কল্যাণ সময় নিয়ে, শান্ত ভাবে ডেক থেকে নীচে নামে। সেটা ছিল মাসের তিন তারিখ।
আরও এক বার বুড়ো বেলের দিকে হাত বাড়াতে শান্তা দরজা খুলল। চোখমুখ থমথম করছে। দরজা থেকে সরে দঁাড়িয়ে বলল, ‘‘আসুন। ভিতরে এসে বসুন।’’ সত্যি তার গলা ভারী। জ্বর হয়েছে? কঁাদছিল না তো? চা বানিয়ে শান্তা অন্ধকার বারান্দায় আসে। মোড়া টেনে কল্যাণের মুখোমুখি বসে। এই প্রথম। কল্যাণের হালকা অস্বস্তি হয়।
‘‘নিন, এ বার বলুন।’’
থতমত খেয়ে কল্যাণ বলল,
‘‘কী বলব?’’
শান্তা ঠান্ডা গলায় বলল, ‘‘তিন তারিখ কী হয়েছিল?’’
কল্যাণ মাথা নামিয়ে বলল, ‘‘কিছুই হয়নি। এক সময়ে তোমার স্বামীর থেকে টাকা ধার নিয়েছিলাম। বলেছিলাম একসঙ্গে ফেরত দিতে পারব না, মাসে মাসে শোধ দেব। তিন তারিখ দিন ঠিক হয়েছিল। মাঝখানে অনেকগুলো বছর তার খোঁজ পাইনি। সেই টাকাই তোমাকে দিতে আসি। উদয় তো নেই।’’
শান্তা একটু চুপ করে থেকে শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখে মোছে। বলে, ‘‘মিথ্যে কথা। এ রকম কিছুই হয়নি। এক বছর ধরে আপনি গল্প বানিয়ে আমাকে টাকা দিতে আসেন। আমি অন্য তিন তারিখের কথা শুনতে চাই।’’ কল্যাণ মাথা নামিয়ে চুপ করে বসে থাকে। শান্তা উঠে দঁাড়ায়। চাপা গলায় বলে, ‘‘অনেক দিন অপেক্ষা করেছেন, এ বার আমার শোওয়ার ঘরে আসুন। ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে।’’
ঘর আরও অন্ধকার। শান্তা বুকের অঁাচল সরায়। বিহ্বল হয়ে পড়ে কল্যাণ। এ এক অন্য শান্তা! নগ্ন হওয়ার আগেই সে এত সুন্দর!
‘‘আমি তোমাকে ভালবাসি শান্তা।’’
এগিয়ে এসে কল্যাণের মুখে হাত চাপা দেয় শান্তা। গায়ে গা লাগিয়ে মুখের কাছে মুখ নিয়ে বলে, ‘‘আমি আপনাকে ঘেন্না করি কল্যাণবাবু। কেন করি জানেন? করি কারণ আজ তিন তারিখ। এক বছর আগে আপনার বন্ধু আপনার চোখের সামনে যে দিন জলে ঝঁাপ দিয়ে মরে, সে দিনও তিন তারিখ ছিল। ইচ্ছে করলে সে দিন আপনি ওকে আটকাতে পারতেন। তা করেননি। ওকে মরতে দিয়েছিলেন। কে জানে আলতো ঠেলে দিয়েছিলেন হয়তো!’’
কল্যাণ বিস্ফারিত চোখে বলল, ‘‘বাজে কথা। ওকে ঠেলিনি, ধরতে গেলে হাত ফসকে যায়।’’
শান্তা দঁাতে দঁাত চেপে বলল, ‘‘সেই জন্য সত্য গোপন করেছেন? আজ লঞ্চ ঘাটে গিয়েছিলাম। তিন তারিখ বলেই গিয়েছিলাম। ওখানকার কর্মীরা আমাকে বললেন, সে দিন এক জনকে তারা নীচে নেমে আসতে দেখেছিলেন। বর্ণনা শুনে বুঝলাম, সেই লোক আপনি। অথচ আপনি আমাকে আর পুলিশকে বলেছিলেন, আপনি লঞ্চের নীচে ছিলেন। ডেকের খবর জানতেন না। উদয়ের ডেডবডি তোলার পরে তাকে দেখেন এবং চিনতে পারেন। তাই না?’’
কল্যাণের ভয় করে। এই তেজি শান্তাকে সে চেনে না। ঠেলে সরিয়ে দিতে যায়। বলে, ‘‘বাজে কথা।’’
শান্তা হিসহিসিয়ে বলে, ‘‘সরিয়ে দিচ্ছেন! এত অপেক্ষার পরে? কোন অপরাধ চাপা দিতে মাসে মাসে টাকা দিতে আসেন কল্যাণবাবু? নাকি আমাকে বিছানায় পেতে?’’
কল্যাণ বিড়বিড় করে বলে, ‘‘ভালবাসা অপরাধ?’’
শান্তা আঙুল তুলে বলে, ‘শাট আপ। এই আপনার ভালবাসা! আপনি ক্রিমিনাল। আপনি চলে গেলে, আমি পুলিশের কাছে যাব। বলব, সাহায্য করার ছুতোয় ঘরে ঢুকে জোরজবরদস্তি করেছেন। আমার শাড়ি টেনেছেন, ব্লাউজ় ছিঁড়েছেন। আপনার সব ক’টা খাম রাখা আছে কল্যাণবাবু। ওপরে ভালবেসে নিজের হাতে নাম লিখেছেন। খুনের মামলা তামাদি হয় না। আমার মরা বর জানুক, আমি তাকেই ভালবাসি।’’ কথা শেষ করে শান্তা খাটের ওপর বসে পড়ে। দু’হাতে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে ওঠে।
বিধ্বস্ত কল্যাণ বাড়ির গেট খুলে পথে নামে। সে এখন কী করবে? শান্তা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। তার কাছে যে ক’টা টাকা ছিল মুঠো করে এনে মুখের ওপর ছুড়ে দিয়ে বলেছে, ‘‘নিন, বেরিয়ে যান। আর কোনও দিন যেন না দেখি।’’ কিন্তু উদয়? সে কি ক্ষমা করবে? অন্ধকার গলিপথে টলমল পায়ে ঘোরের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায় কল্যাণ।
থানা কোন দিকে? এখনও রাত বাড়েনি। যা হওয়ার আজ তিন তারিখেই হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy