নমস্কার স্যর! কেমন আছেন?”
“নমস্কার! ইয়ে… মানে, আপনাকে তো ঠিক…”
“চিনলেন না তো? সে আর বেশি কথা কী! আপনাদের মতো সম্ভ্রান্ত শিক্ষিত উচ্চকোটির মানুষের আমাদের মতো অর্ধশিক্ষিত চালচুলোহীন গরিবগুর্বোদের চেনার কথাও নয়। আমি কিন্তু আপনাকে চিনি। রোজ সকালে এই লেকে মর্নিংওয়াক করতে আসেন, দেখি তো। গত তিন মাস ধরে লকডাউন চললেও আপনি মর্নিংওয়াক বাদ দেননি। আমিও রোজ সকালে আসি কি না… বসি?”
“হ্যাঁ, হ্যাঁ… বসুন না।”
“বসি তা হলে, এই মাঝখানে ফুটতিনেক গ্যাপ রেখে দিলাম, ব্যস, আর চিন্তা নেই! আসলে কী জানেন, কাছাকাছি বসে কথা না বললে কথাগুলো হাওয়ায় উড়ে যায়! হাঃ হাঃ... আজ আপনার মর্নিংওয়াক হয়ে গেল এত তাড়াতাড়ি!”
“নাঃ… আজ মর্নিংওয়াকটা আর হয়নি। শরীর-মন কোনওটাই ঠিক বশে নেই।”
“সেটা আপনাকে দেখেই বুঝেছি… হেঁ হেঁ… শরীরের থেকেও মনটাই বোধহয় বেগড়বাঁই করছে বেশি। কিছু নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় আছেন বলে মনে হচ্ছে, তাই না?”
“দুশ্চিন্তা বলে দুশ্চিন্তা! একেবারে শিরে সংক্রান্তি! কী যে করব, ল্যাজা-মুড়ো কিছুই ভেবে উঠতে পারছি না।”
“তাই? তা, যদি কিছু মনে না করেন, সমস্যাটা কী জানতে পারি? যদি আমার দিক থেকে কোনও সাহায্য-টাহায্য…”
“সাহায্য? আপনি?”
“পেত্যয় হচ্ছে না? আমার এই এক মুখ দাড়ি, উস্কোখুস্কো চুল, লতপতে প্যান্ট-হাফশার্ট— এই সব দেখে ভাবছেন তো, এই এলেবেলে লোকটার নিজেরই কোনও চালচুলো নেই, এ আবার করবে সাহায্য! ভাবতেই পারেন। ‘পহলে দর্শনধারী, পিছে গুণ বিচারি’— এই ট্র্যাডিশন তো অনন্তকাল থেকেই চলে আসছে। তবে কি না, মানুষের বাইরেটা দেখে হুট করে বিচার করাটা ঠিক কাজ নয়। রামের সেতুবন্ধনে কাঠবিড়ালীও তো কাজে এসেছিল… নয় কি?”
“আরে না না… ছিঃ-ছিঃ! আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ়! আসলে আমার স্ত্রীর শরীরটা ক’দিন থেকে ভাল যাচ্ছে না বুঝলেন, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর। বেশির ভাগ এ রকম কেসে যা হয়, প্যারাসিটামল, স্যালাইন গার্গল— এই সব দিয়ে তিন-চার দিন চালালাম। কিছু হল না। ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার পত্রপাঠ কোভিড টেস্ট করাল। পজ়িটিভ! আমাদের তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! এই রকম একটা ওলট-পালট সময়ে… না পাওয়া যায় ডাক্তার, না পাওয়া যায় ওষুধ… হাসপাতালে বেড নেই, শুনছি অক্সিজেনও নাকি পাওয়া যাচ্ছে না! আমি একা মানুষ, কী করি, কোথায় যে যাই, এই সব নিয়ে মনটা খুব উলোঝুলো হয়ে আছে।”
“কম্ম সেরেছে! তা হলে বিলক্ষণ ভজঘট কেস। তা ম্যাডাম আছেন কোথায় এখন?”
“বাড়িতেই। কাল তিন-তিনটে হাসপাতাল হন্যে হয়ে চষে বেড়ালাম। কোথাও কোনও বেড খালি নেই। হাসপাতালের ডাক্তাররাই বলছে বাড়ি নিয়ে যেতে। হাসপাতালে অক্সিজেনের সাপ্লাই নেই। ডাক্তার-নার্সদের অনেকেই কোভিড-পজ়িটিভ। ছুটি নিয়ে কোয়রান্টিনে আছে। ইমার্জেন্সি হলে সামলানোর উপায় নেই— কোথায় আছি আমরা! এই তো, মার্চ মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিয়ে একুশ দিনের লকডাউন হাঁকলেন, তার পর আর ওঠার নামটি নেই! বেড়েই চলেছে বেড়েই চলেছে... ডাক্তারখানা কিংবা হাসপাতালে গিয়ে গিয়ে খোঁজ নিতে তো ভয়ও করছে, কিন্তু উপায় কী!”
“ভাবুন তো কি পরিস্থিতি! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আপনি-আমি কেউই দেখিনি। কিন্তু বয়স তো আমাদেরও হল। এই রকম খ্যাঁচাকল বাপের জন্মে দেখেছি! এ যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!”
“কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের রাস্তাটা যে কী, ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছি না!”
“বেশি ভাববেন না। আপনি-আমি ভেবে কী করব বলুন দিকি? যাঁর ভাববার, তাঁকেই ভাবতে দিন। তবে তাঁরও তো বয়স হয়েছে! সারা পৃথিবীতে সাতশো আশি কোটির ওপর মানুষ, আরও কত শত কোটি না-মানুষ প্রাণী, তারা আবার এতগুলো মহাদেশ জুড়ে জঙ্গলে, মরুভূমিতে, পাহাড়ে, মহাসাগরে, নর্থ পোলে, সাউথ পোলে— সব্বার ভালমন্দর খোঁজ রাখা কি চাট্টিখানি কথা? ভগবানকে দোষ দিয়ে কি লাভ? একটা নাটকের গান মনে পড়ে যাচ্ছে, ‘ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন, গোলযোগ সইতে পারেন না’— ঘোর কলিতে এসে দেখছি যেন সত্যিই তাই!”
“হাঃ হাঃ… এটা মন্দ বলেননি। আপনার সেন্স অব হিউমার দারুণ!”
“এই সব বলে আর লজ্জা দেবেন না স্যর। আমাদের এই শুষ্কং-কাষ্ঠং জীবনে ডিপ্রেশন আর ফ্রাস্ট্রেশন তো ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের মতো যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এই টিউমারের থেরাপিই হল হিউমার। দেখুন না, আপনার চিন্তার মেঘে থমথমে মুখটায় দ্বিতীয়ার চাঁদের মতো এক চিলতে হাসি ফুটেছে। তার দাম কম কিসে?”
“কথাটা ঠিক। কিন্তু এই দ্বিতীয়ার চাঁদের আলোয় মনের অন্ধকার কাটবে কি?”
“আলো তো আলোই। অমাবস্যার রাতে তারার আলোও তো পথ দেখায়, বলুন স্যর?”
“নাঃ… আপনার সঙ্গে কথায় পেরে উঠব না!”
“যাকগে যাক, কিন্তু কথাটা হচ্ছে, আপনার সমস্যাটা বেশ গুরুচরণ আর সেটাই সাইডট্র্যাক হয়ে যাচ্ছে। কিছু যদি মনে না করেন, আপনারা হাজ়ব্যান্ড-ওয়াইফ কি একাই থাকেন? মানে... আপনাদের ছেলেমেয়ে?”
“আমার একটিই ছেলে, একমাত্র সন্তান। বিদেশে সেটলড। উঁচু পোস্টে চাকরি। দেশে বিশেষ আসতে-টাসতে পারে না।”
“এই হয়েছে এক খ্যাঁচাকল! বড় ঘরের ছেলেমেয়েরা বাপের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ভাল ভাল স্কুল-কলেজে লেখাপড়া শিখে, বিদেশি ডিগ্রি বাগিয়ে সটাসট এনআরআই হয়ে যাচ্ছে, মোটা টাকা মাইনে পাচ্ছে, তার পর বেমালুম ভুলে যাচ্ছে দেশে তাদের বাপ-মা আছে, তাঁদেরও বয়স হচ্ছে। একেই বলে ঘোর কলি!”
“না না, আমার ছেলে ও রকম নয়, দিনে দশ বার ভিডিয়ো কল করে হোয়াটসঅ্যাপে, ‘মা-মা বাবি-বাবি’ খুবই আছে। এই তো মা-র অসুখে একটা বড় অ্যামাউন্ট পাঠিয়েছে।”
“যাক… ভাল, খুব ভাল, তার মানে ছেলের মাথার ভিতর এখনও এনআরআই-টা চেপে বসেনি। এ রকম থাকলেই ভাল। ভাগ্যবানের বোঝা ভগবান বয়। আপনার কপাল তো আর আমার মতো ফাটা নয়।”
“আপনার কপালের আবার কী দোষ? দিব্যি তো তেল-চকচকে!”
“গরিবের কপাল স্যর! তেলে নয়, ঘামে চকচক করে!”
“কেন এ রকম বলছেন বলুন তো? আপনার কথাবার্তায় একটা ফ্রাস্ট্রেশনের সুর পাচ্ছি। কিছু যদি মনে না করেন, আপনার ছেলেমেয়ে?”
“আমারও ছেলে। একটিই। এনআরআই নয়, কিন্তু মাথার ভিতর এনআরআই চেপে বসে আছে। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভাল। আমি তো স্কুলমাস্টারি করে জীবন কাটিয়ে দিলাম। আমার বাবা ছিলেন পোস্টমাস্টার। সেই পরিবারের ছেলে সেকেন্ডারি, হায়ার-সেকেন্ডারি দুটোতেই স্টার পেল। দিল্লি থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করল। তার পর আমাদের সবাইকে অবাক করে জিআরই দিয়ে ক্যালিফর্নিয়ায় এমবিএ করার চান্সও পেয়ে গেল। কিন্তু ক্যালিফর্নিয়ায় এমবিএ করার খরচা কোত্থেকে জোগাড় করব? বাড়িঘরও তো নেই যে ব্যাঙ্কে মর্টগেজ রেখে লোন নেব। ফলে এমবিএ গেল মায়ের ভোগে। আর ছেলেও গেল বিগড়ে। তার ধারণায়, যে বাবা ছেলের হায়ার এডুকেশনে সাপোর্ট দিতে পারে না, সে রকম অপদার্থ লোক বাবা হওয়ারই যোগ্য নয়। কাজেই বাবা এখন তার কাছে সৎ-বাবারও অধম, অসৎ-বাবা। কোনও সম্পর্কই নেই প্রায়।”
“কিন্তু আমি যত দূর জানি, বিদেশে যাওয়ার জন্য তো ভাল ছাত্রদের স্কলারশিপের ব্যবস্থা...”
“চেষ্টাচরিত্র করেছিল। হয়নি। কথায় বলে না, অভাগা যে দিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়! খুব খাঁটি কথা।”
“ভেরি স্যাড! তা আপনার ছেলে এখন কী করছে? আছে কোথায়?”
“আছে দিব্যি। বেঙ্গালুরুর একটা বড় আইটি কোম্পানিতে ভাল পোস্টেই আছে। বাড়ি-গাড়ি করে রাজার হালেই আছে। উইকডেজ়-এ সারা দিনই নাকি মিটিংয়ে ব্যস্ত, তাই সপ্তাহান্তে মিনিট পাঁচেকের জন্যে ফোন করে, তা-ও শুধু মাকে।”
“বাড়ি আসে-টাসে না? বাবা-মার খোঁজখবর? আপনি তো তাকে ইঞ্জিনিয়ারিং অবধি সাপোর্ট দিয়েছেন, সেটাই বা কম কী? কত বাবা তো এই সাপোর্টটুকুও দিতে পারে না।”
“ওই যে বললাম— মাথার ভিতর এনআরআই গেড়ে বসে আছে! বাবার জন্যে ছেলে এনআরআই হতে পারেনি, কাজেই তার জীবন বৃথা! শেষ কবে তাকে দেখেছি, মনে করে বলতে হবে। হ্যাঁ, তা বছর আড়াই তো হবেই। এর মধ্যে আমার শরীর খারাপ হল, ওর মা অসুস্থ হল, ছেলের কোনও হেলদোল নেই, আসতে বললেই মিটিংয়ের অজুহাত। গত এক মাস ধরে ওর মা, আপনার স্ত্রীর মতোই, করোনায় শয্যাশায়ী ছিল। তখন অবিশ্যি হাসপাতালে বেডের এত আকাল ছিল না। হাসপাতালেই ট্রিটমেন্ট হচ্ছিল। একটু ভাল হতে বাড়ি নিয়ে এলাম। কিন্তু বেশি দিন নয়। কো-মর্বিডিটি ছিল, ডায়াবেটিস, প্রেশার। কিছু দিন বাদেই আবার হাসপাতাল। এ বার একেবারে আইসিইউ। দিন পনেরো চলল যমে-মানুষে টানাটানি। প্রচুর খরচার ব্যাপার। লজ্জার মাথা খেয়ে ছেলেকে বললাম কিছু টাকা পাঠাতে। জবাব এল সঙ্গে সঙ্গেই, ব্যাঙ্ক হঠাৎ তার হোম লোনের ইন্টারেস্ট অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। মাসের ইএমআই মেটাতে গিয়ে তার হাতে কিছুই থাকছে না। কাজেই ইচ্ছে থাকলেও এই মুহূর্তে তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, একটা মূল্যবান অ্যাডভাইস অবিশ্যি দিয়েছে, ব্যাঙ্ক থেকে পার্সোনাল লোন নিয়ে আপাতত ইমার্জেন্সিটা সামলে নেওয়ার অ্যাডভাইস।”
“কী আর বলি! সব শুনে খুব খারাপ লাগছে। তা আপনার স্ত্রী এখন আছেন কেমন?”
“দিব্যি! বিন্দাস! বেচারি আমার মতো একটা কাছাখোলা লোকের পাল্লায় পড়ে সারা জীবন খুব কষ্ট পেয়েছে। এখন আর কোনও অসুখ নেই। করোনার সঙ্গে সঙ্গে তার ডায়াবেটিস, প্রেশার সব একেবারে সেরে গেছে! এত ভাল বেচারি কোনও দিন থাকেনি।”
“বাঃ! শুনে খুব ভাল লাগল। সব ভাল যার শেষ ভাল। এখন আমার স্ত্রীর ব্যাপারটা যে কী করি সেটা নিয়েই চিন্তা।”
“বললাম যে, বেশি চিন্তা করবেন না। আপনার ইমিডিয়েট সমস্যাটা তো হাসপাতালে বেড নেই? তাই তো? তা নেই তো নেই। আপনি বরং বাড়িতেই ভাল এক জন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে চিকিৎসা করান।”
“এখনও পর্যন্ত তাই তো চলছে। কিন্তু দুশ্চিন্তাটা অন্য জায়গায়। হঠাৎ যদি ইমার্জেন্সি অক্সিজেন দরকার পড়ে তা হলেই তো চিত্তির!”
“তারও উপায় আছে। বাড়িতে একটা অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর নিয়ে রেখে দিন।”
“আপনার বাস্তব পরিস্থিতি সম্বন্ধে সম্যক ধারণা নেই মনে হচ্ছে। আমি সমস্ত অনলাইন শপ, পাড়া-বেপাড়ার সব মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট ডিলারদের কাছে হন্যে হয়ে খুঁজেছি, কোথাও অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর নেই। আউট অব মার্কেট!”
“ওহ! ভাববেন না স্যর। আমার স্ত্রীর জন্যে একটা অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর অনেক কষ্ট করে কিনেছিলাম। এখন তো আর কোনও কাজে লাগছে না। আপনি বরং এক কাজ করুন, আপনার অ্যাড্রেসটা আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিন। আজ বিকেলেই আপনার বাড়িতে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পৌঁছে যাবে। আপনার সেতুবন্ধনে এই কাঠবিড়ালীর একটা ছোট্ট ভূমিকা না হয় থাকলই!”
“সে কী করে হয়! আপনার স্ত্রীর জন্যে কেনা অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, আমাকে দিয়ে দেবেন, তার পর বলা তো যায় না, ভগবান না করুন, আপনার স্ত্রীর যদি মধ্যে আবার বাড়াবাড়ি হয়?”
“ওর আর কিস্যু হবে না। বললাম না, ওর সব অসুখ চিরদিনের মতো সেরে গেছে।”
“কিন্তু, এতটা নিশ্চিত হচ্ছেন কী করে? অতিমারির পরিস্থিতি তো পুরোপুরি শুধরোয়নি...”
“কারণ, আমার এই এক মুখ দাড়ি, উস্কোখুস্কো চুল, ময়লা জামাকাপড়, যা দেখে আপনি আমাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনছিলেন না— সেটা দেখেও বুঝতে পারছেন না? করোনা আমার স্ত্রীর সব অসুখ, সব জ্বালা-যন্ত্রণা, সব না-পাওয়া চিরদিনের মতো সারিয়ে দিয়েছে। পরশু রাত্তিরে আমি ওকে দাহ করে এসেছি নিমতলা শ্মশানঘাটে। সব জাগতিক দুঃখকষ্ট, শোক-অসুখের পরপারে অনন্ত শান্তির দেশে পৌঁছে দিয়ে এসেছি!”
ছবি: কুনাল বর্মণ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy