Woman adopted son of husband’s first wife after her death dgtl
Adoption
স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানকে দত্তক নিলেন চার সন্তানের জননী, কেন?
বিয়ের পর চার সন্তানকে নিয়ে এক বাড়িতে থাকতে শুরু করেন ওয়েসলি এবং ক্রিস্টি। এক ছাদের নীচে ছ’জনের সুখেই কাটছিল দিন। তার মাঝেই হঠাৎ বদল।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ওহায়োশেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ১৫:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
নিজে হোমে (ফস্টার কেয়ার) মানুষ হয়েছিলেন। তাই চাননি, আরও একটি শিশু হোমে মানুষ হোক। সে কারণে ৪৮ বছরের মহিলা যে পদক্ষেপ করলেন, তা অনেকেই চিন্তা করতে পারেন না। নিজের স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর সন্তানকে দত্তক নিয়েছেন তিনি।
০২১৯
সাহসী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিস্টি ওয়ার্টস। তিনি আমেরিকার ওহায়োর বাসিন্দা। ৪৮ বছরের এই মহিলা এখন স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর সন্তানকে লালনপালন করছেন। নিজের সন্তানের মতোই।
০৩১৯
পাঁচ বছর আগে ওয়েসলির সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। দু’জনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ওয়েসলির বয়স এখন ৪৫ বছর।
০৪১৯
প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে দুই সন্তান রয়েছে ক্রিস্টির। ২১ বছরের মেগান, ১৫ বছরের ভান্স। ওয়েসলিরও প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে দুই সন্তান রয়েছে। ১৪ বছরের অস্টিন, ১০ বছরের ডাকোটা।
০৫১৯
বিয়ের পর চার সন্তানকে নিয়ে এক বাড়িতে থাকতে শুরু করেন ওয়েসলি এবং ক্রিস্টি। এক ছাদের নীচে ছ’জনের সুখেই কাটছিল দিন। তার মাঝেই হঠাৎ বদল।
০৬১৯
২০১৫ সালে অস্টিন এবং ডাকোটার মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছিল ওয়েসলির। অভিযোগ, মাদকাসক্ত ছিলেন তিনি। মাদকাসক্তির কারণেই সন্তানের জন্ম দেওয়ার দিন কয়েক পর মৃত্যু হয় ওই মহিলার।
০৭১৯
এর পরেই ক্রিস্টি সিদ্ধান্ত নেন, স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর ছেলেকে দত্তক নেবেন তিনি। নাম দেন লেভি। শিশুটির বাবা ওয়েসলি নন। তাতে অবশ্য ক্রিস্টির সিদ্ধান্ত বদলায়নি।
০৮১৯
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে লেভিকে দত্তক নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়। এখন নিজের সন্তানের মতোই তাকে মানুষ করছেন ক্রিস্টি।
০৯১৯
ক্রিস্টি একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যখন লেভির কথা শুনি, তখনই ওয়েসলিকে বলি, ওকে আমাদের পরিবারের সদস্য করে নিতে হবে।’’
১০১৯
কেন এই সিদ্ধান্ত, তা-ও জানিয়েছেন ক্রিস্টি। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজেও বাবা-মায়ের হাতে মানুষ হইনি। নিজের পরিবার পাইনি। যদিও ছোটবেলা খারাপ কাটেনি। তা-ও চাইনি যে লেভি কোনও হোম বা পালক পরিবারের কাছে মানুষ হোক।’’
১১১৯
ক্রিস্টি জানিয়েছেন, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ ছিল না ওয়েসলির। একটা সোমবার লেভিকে জন্ম দেন তাঁর মা। পরের শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই লেভিকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ক্রিস্টি।
১২১৯
লেভির জন্ম টেক্সাসে। সে সময় ওয়েসলিরা থাকতেন ওহায়োতে। লেভিকে দত্তক নেবেন বলে ওহায়োর বাড়ি বিক্রি করে টেক্সাসে চলে আসেন তাঁরা। সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নেন। নয়তো সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দত্তক নেওয়া যেত না।
১৩১৯
ক্রিস্টি জানিয়েছেন, দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ ছিল না। ১৬ মাস সময় লেগেছে। নিজে ১৫ বছর বয়স থেকে হোমে ছিলেন বলেই দ্রুত এই সিদ্ধান্ত নেন ক্রিস্টি।
১৪১৯
নিজের দুই সন্তানের পাশাপাশি সৎসন্তানদেরও একই রকম ভালবাসেন ক্রিস্টি। সে কথা তিনি জানিয়েছেন নিজের মুখে। এখন সেই পরিবারে নতুন সদস্য লেভি। বাইরে থেকে দেখলে কেউ বুঝবেন না যে, লেভি ক্রিস্টির নিজের সন্তান নন। তাঁর সৎছেলেদের সৎভাই।
১৫১৯
লেভিকে দত্তক নেওয়ার আগে একটু ইতস্তত করেছিলেন, সে কথা নিজেই জানিয়েছেন ক্রিস্টি। তিনি জানান, নিজের দুই এবং স্বামীর দুই সন্তান থাকার পরেও অন্যের সন্তানকে দত্তক নেওয়ার বিষয়টি সহজ ছিল না। ভেবেছিলেন, আদৌ ভালবাসতে পারবেন তো ওই খুদেকে!
১৬১৯
ক্রিস্টির সেই কিন্তু কিন্তু ভাব কেটে যায় লেভিকে দেখে। প্রথম দেখাতেই মন চুরি করেছিল খুদে, জানিয়েছেন ক্রিস্টি। তাঁর মনে হয়েছিল, এই শিশুটিকে রক্ষা করতে হবে। প্রথম দেখায় তাকে নিজের সন্তান বলেই মনে হয়েছিল ক্রিস্টির।
১৭১৯
ক্রিস্টির কথায়, কোনও নাম, জন্মের শংসাপত্রও ছিল না লেভির। সেটাই বেশি খারাপ লেগেছিল। মানতে পারেননি তিনি। তাই দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শুরু করান। শেষ পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়ার পর যখন লেভি নাম পায় শিশুটি, চোখে জল এসেছিল ক্রিস্টির। সেই পথ ছিল অনেকটাই কঠিন। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তাঁদের।
১৮১৯
এখন ক্রিস্টি এবং ওয়েসলির পরিবারের সঙ্গে থাকে ছোট্ট লেভি। শীঘ্রই দু’বছরে পা দেবে সে। ক্রিস্টি জানিয়েছেন, ছোট্ট লেভি এখন বাড়ির ‘রাজা’। তাকে নিয়েই মেতে থাকে গোটা পরিবার। সে বড় হলে তাকে গোটা ঘটনা জানাবেন ক্রিস্টি। কতটা লড়াই করতে হয়েছে তাকে নিজের পরিবারের সদস্য করতে, সে কথাও বলবেন।
১৯১৯
নিজের গল্প জানিয়ে একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন ক্রিস্টি। সেই ভিডিয়ো প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেখেছেন ন’লক্ষ মানুষ। ৩০ হাজার মানুষ পছন্দ করেছেন। কেউ কুর্নিশ জানিয়েছেন ক্রিস্টিকে, কেউ আবার আশীর্বাদ করেছেন।