২০০৮ সালে চিনের প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছিলেন জিনপিং। তিনিই দেশের অর্থনীতিকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি করে তুলেছেন। কিন্তু মানুষ তাতে খুশি নয়।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। অথচ, চিনের সাধারণ মানুষ সরকারের কাজে খুশি নয়। ওয়াশিংটন পোস্টের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে চিনের কোনায় কোনায়।
০২১৫
২০০৮ সালে চিনের প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছিলেন জিনপিং। তিনিই দেশের অর্থনীতিকে বর্তমানের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। অর্থনীতিতে আমেরিকার সঙ্গে সমানে সমানে টেক্কা দিয়েছে চিন।
০৩১৫
কিন্তু চিনের মানুষ জিনপিং সরকারের উপর এখন যারপরনাই বিরক্ত। গত কয়েক বছরে তাঁর একাধিক নীতি জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে অর্থনীতির পরিসংখ্যানেও।
০৪১৫
মূলত, কোভিড অতিমারির পর থেকেই চিনের অর্থনীতিতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। লকডাউনের সময় সরকারের নানা নীতি জনবিরোধী ছিল বলে অভিযোগ। সেই থেকে ক্ষোভের আগুন ধিকিধিকি জ্বলতে শুরু করে।
০৫১৫
বর্তমানে চিনের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সমস্যা, মুদ্রাসঙ্কোচন। চিনা ইউয়ানের দাম আচমকাই বেড়ে গিয়েছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির পরিবর্তে ধীরে ধীরে সেখানে জিনিসপত্রের দাম কমছে।
০৬১৫
সরকারের উপর আস্থা হারিয়ে মানুষ নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চাইছেন। খরচ না করে বেশি করে টাকা জমাচ্ছেন। দেশে জোগানের তুলনায় কমে যাচ্ছে চাহিদা।
০৭১৫
চিনের আরও একটি বড় সমস্যা হল, নাগরিকদের বয়স এবং বেকারত্ব। বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যা সেখানে ক্রমেই বাড়ছে। আর তরুণ প্রজন্মকে গ্রাস করছে বেকারত্ব। তারা চাকরি পাচ্ছেন না।
০৮১৫
চিনের মানুষ সরকারের নীতিতে ভয় পেয়ে নতুন করে সংসার পাতার সাহস পাচ্ছেন না। বংশবৃদ্ধি করতে ভয় পাচ্ছেন। বিয়ের হারও কমে গিয়েছে। এর ফলে নতুন সন্তানের জন্মের হারও আগের চেয়ে কম।
০৯১৫
জন্মের হার কমার কারণেই বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ছে চিনে। নাগরিকদের গড় বয়স ৩৯ বছর। বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনে কর্মক্ষেত্রও হয়ে পড়েছে শ্লথ। কাজের গতি কমে গিয়েছে।
১০১৫
জিনপিং ক্ষমতায় আসার আগে যাঁরা চিনকে দেখেছেন, সেই নাগরিকেরা বর্তমানের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে অত্যন্ত হতাশ। সরকারকে একেবারেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে পারছেন না তাঁরা।
১১১৫
চিন সরকার সারা দেশে একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি চিনে গিয়েছিলেন আমেরিকার বাণিজ্যসচিব। তিনিও এ বিষয়ে চিনকে সতর্ক করেছেন।
১২১৫
আমেরিকান বাণিজ্যসচিবের মতে, চিনে সরকার যে অনিশ্চিত আবহ তৈরি করেছে, তা বিনিয়োগের পক্ষে অনুপযুক্ত। আমেরিকার বিনিয়োগকারীরা চিনে বিনিয়োগ করা থেকে পিছিয়ে আসতে পারেন।
১৩১৫
বিশেষজ্ঞদের দাবি, চিনের এই পরিস্থিতিতে সেখানকার সংস্থাগুলিও দেশ ছাড়তে চাইছেন। বাইরের দেশে ব্যবসা করা অধিক লাভজনক বলে ধারণা তৈরি হয়েছে চিনা বণিকদের মধ্যে।
১৪১৫
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও চিনের অবস্থান খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। প্রতিবেশী দেশগুলির উপর চিনা আগ্রাসন পশ্চিম ভাল চোখে দেখছে না। বিশ্বজনীন দৃষ্টিকোণ থেকেও চিনের আচরণ আশানুরূপ নয়। যে কারণে জিনপিংয়ের দেশকে রাষ্ট্রপুঞ্জে সমালোচিত হতে হয়।
১৫১৫
চিনের প্রতিবেশী শত্রু দেশগুলির সঙ্গে আমেরিকার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে। জিনপিং সরকারের জন্য যা নতুন শঙ্কার জন্ম দিতে পারে। নড়বড় অর্থনীতি নিয়ে সেই সঙ্কট কী ভাবে ঠেকাবেন জিনপিং?দেশের অভ্যন্তরে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।