What Titanic director James Cameron and ex oceangate employee said about Titan wreckage expedition dgtl
Missing Titanic Submersible
জেনেশুনেই কি পাঁচ যাত্রীকে ‘চরম বিপদে’ ফেলল ওশানগেট? অভিযান নিয়ে সতর্ক করেন ক্যামেরনও
১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল। ১১১ বছর আগে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে উত্তর অতলান্তিকে ডুবে যায় সে সময়ের অন্যতম বিলাসবহুল যাত্রিবাহী জাহাজ টাইটানিক। মৃত্যু হয় ১৫০০-রও বেশি মানুষের।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বস্টনশেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৬:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
তিন দিন পার হতে চলল। কিন্তু এখনও পাঁচ যাত্রী নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে যাওয়া টাইটানের খোঁজ মেলেনি। আর তা নিয়ে ক্রমেই ঘনাচ্ছে আশঙ্কার কালো মেঘ।
০২২২
১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল। ১১১ বছর আগে হিমশৈলে ধাক্কা মেরে উত্তর অতলান্তিকে ডুবে যায় সে সময়ের অন্যতম বিলাসবহুল যাত্রিবাহী জাহাজ টাইটানিক। মৃত্যু হয় ১৫০০-রও বেশি মানুষের।
০৩২২
প্রথম যাত্রাতেই ডুবে গিয়েছিল আরএমএস টাইটানিক। জাহাজটি সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের পথে পাড়ি দিয়েছিল প্রথম যাত্রায়। জাহাজের নির্মাতা সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই জাহাজের ডুবে যাওয়া ‘অসম্ভব’। কিন্তু তার পরেও হিমশৈলের চূড়ায় ধাক্কা মেরে ডুবে যায় জাহাজটি।
০৪২২
সেই গল্পকেই ১৯৯৭ সালে বড় পর্দায় তুলে ধরেছিলেন হলিউডের খ্যাতনামী পরিচালক জেমস ক্যামেরন।
০৫২২
অতলান্তিক মহাসাগরের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফুট নীচে এখনও রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। সেই ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুষ করে এসেছেন ক্যামেরন নিজেও। টাইটানিকের শুটিংয়ের সময় সমুদ্রের তলদেশে ৩৩ বার ডুব দিয়েছিলেন ক্যামেরন।
০৬২২
নিজে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এলেও টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন করার বিপদ সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন ক্যামেরন।
০৭২২
২০১২ সালে সংবাদমাধ্যম ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ক্যামেরন বলেছিলেন, ‘‘কেউ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাচ্ছেন মানে তিনি পৃথিবীর অন্যতম বিপদসঙ্কুল জায়গায় যাচ্ছেন।’’
০৮২২
ক্যামেরন আরও যোগ করেন, ‘‘ওখানে গিয়ে বিপদে পড়লে কেউ বাঁচাতে আসবে না। কোনও পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ফোন করে আপনি যে ডেকে পাঠাবেন, সেই উপায় নেই।’’
০৯২২
ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ক্যামেরন নিজে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ অন্বেষণ করতে অতলান্তিকের অতলে ডুব দিয়েছিলেন। আর তা নিয়ে তিনি একটি বইও লেখেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ওই দৃশ্য চাক্ষুষ করা পৃথিবীর সব জিনিসের থেকে ভাল।’’ তবে সমুদ্রের অত নীচে যাওয়া যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা নিয়েও তিনি সম্যক ধারণা দিয়েছিলেন নিজের বইয়ে।
১০২২
যদিও টাইটান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি অস্কারজয়ী পরিচালক।
১১২২
টাইটানে চেপে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে যাওয়া এই অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ‘ওশানগেট এক্সপিডিশন’-এর এক প্রাক্তন কর্তাও। এই ভ্রমণ সংস্থার তরফ থেকেই অভিযানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ডুবোযানটিও এই সংস্থার মালিকানাধীন।
১২২২
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ইঞ্জিনিয়াররা ওশানগেটের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই ডুবোযান তৈরি করেন।
১৩২২
কিন্তু ২০১৮ সালে সেই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ওশানগেট কর্তা ডেভিড লোচরিজ। তিনি একটি রিপোর্ট লিখেছিলেন, ‘‘টাইটান নৌযানটির আরও পরীক্ষার প্রয়োজন। এটি সমুদ্রের গভীরতায় পৌঁছলে যাত্রীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে।’’
১৪২২
ডেভিড আরও দাবি করেন, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ অতলান্তিকের যে গভীরতায় রয়েছে, সেখানে পৌঁছনো টাইটানের পক্ষে অসম্ভব। তিনি জানিয়েছিলেন, টাইটান অতলান্তিকের সাড়ে ১২ হাজার ফুট নীচে রয়েছে। কিন্তু টাইটানের সাড়ে চার হাজার ফুটের বেশি গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই।
১৫২২
ওশানগেটের অভিযান যাত্রীদের ‘চরম বিপদে’ ফেলবে বলেও ডেভিড মন্তব্য করেছিলেন।
১৬২২
ডেভিডের এই বিবৃতির পর সেই বছরই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে ওশানগেট। তাঁর বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘন এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি জনসমক্ষে আনার অভিযোগ আনা হয়।
১৭২২
টাইটানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য ডেভিডকে ওশানগেট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
১৮২২
পাল্টা ওশানগেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ডেভিড ইঞ্জিনিয়ার না হওয়া সত্ত্বেও এবং তাঁকে দায়িত্ব না দেওয়া সত্ত্বেও তিনি বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। ডেভিডের সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো বলেও দাবি করা হয়।
১৯২২
রবিবার পাঁচ কোটিপতি যাত্রী নিয়ে অতলান্তিকের অতলে নেমেছিল টাইটান। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জন’স থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ডুবোজাহাজটি।
২০২২
যাত্রা শুরু করার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর টাইটানের ‘মাদারশিপ’ পোলার প্রিন্সের সঙ্গে তার সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পর থেকে সেটি নিখোঁজ।
২১২২
পর্যটন সংস্থার দাবি, যানটির ভিতরে পাঁচ জন যাত্রীর চার দিন চলার মতো অক্সিজেন মজুত ছিল।
২২২২
পর্যটন সংস্থার তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনী ইতিমধ্যেই ডুবোযানটির সন্ধানে নেমেছে। নামানো হয়েছে রোবটও।