তদন্তকারীরা মনে করছেন, ভগৎ সিংহের সূত্রেই তাঁদের একে অপরের সঙ্গে আলাপ। তদন্তকারীদের বিশ্বাস, ফেসবুকে ‘ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাব’ নামে একটি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অভিযুক্তেরা। সেখানেই আলাপ এবং বন্ধুত্ব। অভিযুক্তদের সমাজমাধ্যম ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, নীলম, অমল, ললিত এবং সাগরের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাঁরা প্রায়ই সমাজমাধ্যমে একে অপরকে ছবিতে ট্যাগ করতেন। সেই সব ছবি এবং পোস্ট দেখেও অভিযুক্তদের সম্পর্কে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা।
সংসদে ‘রংবাজি’কাণ্ডে অভিযুক্ত একমাত্র মহিলা নীলমের ফেসবুকের পাতায় লেখা, তিনি এক জন সমাজকর্মী। নিজেকে বিআর অম্বেডকরের একনিষ্ঠ অনুরাগী বলেও পরিচয় দেন হরিয়ানার বাসিন্দা। সরকারি চাকরিপ্রার্থী নীলম ‘প্রগতিশীল আজাদ যুব সংগঠন (পিএওয়াইএস)’ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে সমাজমাধ্যমে লেখা। এ-ও লেখা যে, তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগৎ সিংহের ভক্ত।
বিভিন্ন পোস্টে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ফিদেল কাস্ত্রো এবং চন্দ্রশেখর আজাদ, স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনার প্রচার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ললিতের সমাজমাধ্যম ঘেঁটে জানা গিয়েছে, তিনি ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’ নামে এক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। যা ভারতীয় নোটে মহাত্মা গান্ধীর পরিবর্তে নেতাজির ছবি থাকার পক্ষে কথা বলে।
চতুর্থ অভিযুক্ত সাগরের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে লেখা ‘সাইলেন্ট ভলক্যানো’ অর্থাৎ, ‘সুপ্ত আগ্নেয়গিরি’। ইনস্টাগ্রামে নিজেকে ‘অন্তর্মুখী প্রকৃতি’র এবং ‘আগ্রাসী’ বলেও উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে লেখা যে, তিনি সরল জীবনযাপনে এবং উচ্চ চিন্তাভাবনায় বিশ্বাসী। সমাজমাধ্যমে নিজেকে লেখক, কবি, দার্শনিক, অভিনেতা, চিন্তাবিদ এবং শিল্পী হিসাবেও পরিচয় দিয়েছেন সাগর। মাঝেমধ্যেই মহাভারত থেকে কৃষ্ণের উক্তি নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতেন।
বুধবার সংসদে হানার আগেও সমাজমাধ্যমে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছিলেন সাগর। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিনি হিন্দিতে লেখেন, ‘‘জিতে ইয়া হারে, পর কোশিশ তো জ়রুরি হ্যায়। অব দেখনা ইয়ে হ্যায় সফর কিতনা হাসিন হোগা। উম্মিদ হ্যায় ফির মিলেঙ্গে’’ (জিতি বা হারি, চেষ্টা তো করতেই হবে। এ বার দেখতে হবে যে, এই যাত্রা কতটা সুন্দর হবে। আশা করছি আবার দেখা হবে)।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ বিজেপির মাইসুরু কেন্দ্রের সাংসদ প্রতাপ সিংহের দেওয়া প্রবেশপত্র নিয়ে, জুতোয় রংবোমা লুকিয়ে সংসদ ভবনে ঢুকে পড়েন সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি নামে দুই যুবক। অধিবেশন চলাকালীন দুপুর ১টার কিছু পরে লোকসভায় জ়িরো আওয়ারের সময় দর্শক আসন থেকে নীচে ঝাঁপ মেরে ছুড়তে থাকেন সেই রংবোমা। ঘন হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় লোকসভার মূল অধিবেশন কক্ষের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy