Two TMC Ministers including Jyotipriya Mallick arrested before 2024 Lok Sabha Elections dgtl
TMC Ministers Arrested
২২ জুলাই, ২০২২ থেকে ২৭ অক্টোবর, ২০২৩: ইডি-সিবিআই এবং তৃণমূলের নেতারা
বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূলের আরও এক মন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়ে সরগরম রাজনীতির ময়দান। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে বাংলার শাসকদল।
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১১:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের আরও এক মন্ত্রীকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা প্রায় ২০ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযানের শেষে গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার তিন বারের বিধায়ককে। গত বছর থেকে এই নিয়ে দুই মন্ত্রী-সহ চার বিধায়ককে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূলের কয়েক জন নেতাকেও। বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূলের আরও এক মন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়ে সরগরম রাজনীতির ময়দান। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে বাংলার শাসকদল। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
—ফাইল চিত্র।
০২২২
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর থেকে ধরপাকড় শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০২২ সালের ২২ জুলাই দিনভর তল্লাশি অভিযানের পর সে দিন গভীর রাতে (তারিখ অনুযায়ী ২৩ জুলাই) গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
—ফাইল চিত্র।
০৩২২
পার্থের গ্রেফতারি নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করে ইডি। তাঁর টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় সোনাদানাও। বর্তমানে জেলবন্দি বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা।
—ফাইল চিত্র।
০৪২২
এই গ্রেফতারির রেশ কাটতে না কাটতেই সে বছরের অগস্ট মাসে তৃণমূলের আরও এক ‘হেভিওয়েট’ নেতাকে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তিনি অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় গত বছরের ১১ অগস্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে।
—ফাইল চিত্র।
০৫২২
এই মামলায় তদন্তে নেমে চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয় অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে। দু’জনেই তাঁরা এই মুহূর্তে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি।
—ফাইল চিত্র।
০৬২২
পার্থের পর তৃণমূলের আরও এক বিধায়ককে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত বছরের ১১ অক্টোবর নদিয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। এই মুহূর্তে তিনিও জেলবন্দি।
—ফাইল চিত্র।
০৭২২
পার্থ, মানিকের পর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন তৃণমূলের আরও এক বিধায়ক। চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এখন তাঁরও ঠিকানা জেল।
—ফাইল চিত্র।
০৮২২
শিক্ষায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমে তৃণমূলের দুই যুবনেতাকে (বর্তমানে তৃণমূল থেকে তাঁরা বহিষ্কৃত) গ্রেফতার করে ইডি। তাঁরা হলেন কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রেফতার করা হয় শান্তনু-ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলকে।
—ফাইল চিত্র।
০৯২২
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয় হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলকে। তার তিন মাসের মধ্যেই মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয় আর এক যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
—ফাইল চিত্র।
১০২২
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তলের সূত্রেই উঠে আসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। চলতি বছরে ধর্মতলায় শহিদ মিনারে একটি সভা থেকে অভিষেক বলেছিলেন যে, হেফাজতে থাকাকালীন মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদের তাঁর (অভিষেক) নাম বলতে ‘চাপ’ দেওয়া হয়েছিল। এর পর পরই কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলানোর জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি-সিবিআই। এই নিয়ে কলকাতার হেস্টিংস থানা এবং নিম্ন আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান কুন্তল। যার জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে।
—ফাইল চিত্র।
১১২২
পরে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার করা হয় ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। তাঁকে গ্রেফতারের পরই তদন্তে উঠে আসে অভিষেকের সংস্থা ‘লিপস্ অ্যান্ড বাউন্ডসে’র নাম। ওই সংস্থায় এক সময় কাজ করতেন সুজয়।
—ফাইল চিত্র।
১২২২
সেই সূত্রে এই মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি এবং সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অভিষেক-পত্নী রুজিরাকেও। তলব করা হলেও হাজিরা দেননি অভিষেকের বাবা, মা।
—ফাইল চিত্র।
১৩২২
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে হইচইয়ের মধ্যেই রাজ্যে পুর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তল্লাশি অভিযান শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ-সহ একাধিক পৌর প্রতিনিধির বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা।
—ফাইল চিত্র।
১৪২২
এর মধ্যেই রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে সক্রিয়তা শুরু করে ইডি। পুজোর ঠিক আগে ব্যবসায়ী তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইডি।
—ফাইল চিত্র।
১৫২২
বাকিবুরের গ্রেফতারের পর পরই দুর্গাপুজোর শেষে বৃহস্পতিবার সল্টলেকে জ্যোতিপ্রিয়ের দু’টি বাড়ি এবং উত্তর কলকাতার বেনিয়াটোলা লেনে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে হানা দেয় ইডি।
—ফাইল চিত্র।
১৬২২
জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক অমিত দে’র নাগেরবাজারের দু’টি ফ্ল্যাটেও তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গভীর রাতে অমিতের বাড়ি থেকে বেরোয় ইডির দল। রাত ৩টে নাগাদ জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করে ইডি। ঘটনাচক্রে, সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজোর উদ্বোধনে এসে দুর্নীতি দূর করার বার্তা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
—নিজস্ব চিত্র।
১৭২২
গ্রেফতারির নেপথ্যে ‘চক্রান্ত’ রয়েছে বলে সরব হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারী চক্রান্তে জড়িত।’’
—ফাইল চিত্র।
১৮২২
বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে ইডির হানার মধ্যেই কালীঘাট থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপিকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা বিজেপির নোংরা খেলা।’’ পাশাপাশি, হুঁশিয়ারির সুরে তৃণমূলনেত্রী এ-ও বলেন, ‘‘বালুর (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) স্বাস্থ্য খারাপ। অনেক সুগার। ও যদি মারা যায়, তা হলে বিজেপি এবং ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’
—ফাইল চিত্র।
১৯২২
এর পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শুক্রবার এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘‘রেশন দুর্নীতির কিংপিনকে অবশেষে ধরা হল...। সত্য সামনে আসবেই।’’ জ্যোতিপ্রিয়ের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘কান এল, এ বার আসবে মাথা।’’
—ফাইল চিত্র।
২০২২
তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘এর পর হয়তো মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং বিধানসভার অধিবেশন জেলের মধ্যে ডাকতে হবে।’’
—ফাইল চিত্র।
২১২২
প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই গ্রেফতারি স্বাভাবিক। মুখ্যমন্ত্রী জানতেন। তাই বলেছেন, ওঁর (জ্যোতিপ্রিয়) কিছু হলে এফআইআর করব। উনি দিল্লি থেকে সব খবর পান। যদি মনে করেন অন্যায় হয়েছে, তা হলে সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করলেন না কেন? মন্ত্রিসভা এবং দলটা এমন ভাবে করা হয়েছে, যাতে লুটেরারাই প্রাধান্য পান।’’
—ফাইল চিত্র।
২২২২
রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার দুর্নীতির চেয়ে রেশন দুর্নীতি অনেক অনেক বড় মাপের। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পরিকল্পিত লুঠ হয়েছে। সাধারণ মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে শিশুদের বরাদ্দ খাবার চুরি করে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এফসিআই)-এর বরাদ্দ ভাল চাল বাজারে বিক্রি করে খারাপ চাল মানুষকে দেওয়া হয়েছে। তবে যে মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন, তিনি জড়িত না কি অন্য কেউ, তা বলার ক্ষমতা আমার নেই।’’