সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনের মর্গগুলি মৃতদেহে উপচে পড়ছে। রীতিমতো লাইন দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হচ্ছে। চিনে জ্বরের ওষুধ প্রায় অমিল। অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটও মিলছে না।
সংবাদ সংস্থা
বেজিংশেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
গণবিক্ষোভের মুখে শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে এসেছিল চিন। কিন্তু তারপরই সে দেশে করোনা সংক্রমণের রেখচিত্র ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে।
০২২০
কিছু দিন আগেই বেজিং প্রশাসন জানিয়েছিল, কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃদু উপসর্গ থাকলে কিংবা কোনও উপসর্গ না থাকলে, বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকা যাবে। বহুদিন পর কোভিড নীতি শিথিল হওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেছিলেন সে দেশের নাগরিকরা।
০৩২০
কিন্তু শক্তিশালী প্রতিষেধক না নেওয়ার কারণে এবং জনসমষ্টির মধ্যে কোভিডকে প্রতিরোধ করার মতো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি না হওয়ায় সে দেশে আবার চোখ রাঙাচ্ছে কোভিড।
০৪২০
কোভিডের যে উপরূপটি চিনের এই নয়া বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠেছে, সেটি হল বিএফ.৭। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই উপরূপটি আগের উপরূপগুলির তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক।
০৫২০
গত ৪ অক্টোবর মঙ্গোলিয়ায় প্রথম এই কোভিডের উপরূপটির সন্ধান মেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র তরফে জানানো হয়েছে, মূলত এই উপরূপটির দাপাদাপির কারণেই চিনের হাসপাতালগুলি প্রায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে।
০৬২০
হু-এর এক চিকিৎসক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “চিন প্রশাসন তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছে।” দাবি করা হচ্ছে, করোনা সংক্রমণের হার খুবই কম। কিন্তু বাস্তবে জরুরি বিভাগে মৃতপ্রায় রোগীদের বাঁচাতে কঠোর পরিশ্রম করছেন সে দেশের চিকিৎসকরা।
০৭২০
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনের মর্গগুলি মৃতদেহে উপচে পড়ছে। রীতিমতো লাইন দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হচ্ছে।
০৮২০
অতিমারি-বিশেষজ্ঞ এরিক ফাইল-ডিংয়ের মতে, চিনে জ্বরের ওষুধ প্রায় অমিল। তিনি জানিয়েছেন, দোকানে জ্বরের ওষুধ বাড়ন্ত হওয়ায় সরাসরি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার গুদামে গিয়ে ওষুধ কিনে আনছেন সে দেশের অনেক নাগরিক।
০৯২০
কোভিড পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটও অমিল চিনে। জ্বরে আক্রান্ত মানুষরা কোভিড পরীক্ষার জন্য দোকানে টেস্ট কিট কিনতে গিয়েও তা পাচ্ছেন না। দোকানগুলির সামনে লিখে দেওয়া হয়েছে, “সব অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে।”
১০২০
হু-এর প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, চিনের কোভিড পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে তিনি নিজেও উদ্বিগ্ন। সঠিক প্রতিষেধক ব্যবহার করার জন্য তিনি চিন প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
১১২০
এর পাশাপাশি তিনি চিন প্রশাসনের কাছে কোভিড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনার অনুরোধ জানিয়েছেন। চিন সংক্রমণের হার, সংক্রামিতের সংখ্যা কম করে দেখানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।
১২২০
চিন যে তথ্য লুকোচ্ছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ওয়াং গুইকিয়াংয়ের কথাতেই। চিনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ওয়াং জানিয়েছেন, কোভিডে যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁরা সত্যিই কোভিডের কারণে মারা যাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৩২০
চিনের জিনপিং প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাঁরা আগে থেকেই অন্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত, তাঁরা যদি কোভিডে মারা যান, তবে সেই মৃত্যুকে কোভিডের কারণে মৃত্যু বলে ধরা হবে না।
১৪২০
উহানে চিনের সরকারি পরীক্ষাগারে নোভেল করোনাভাইরাস তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠলেও চিন বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে। এ সংক্রান্ত তথ্যও তারা প্রকাশ্যে আনেনি বলে অভিযোগ পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের একাংশের।
১৫২০
ভাইরাস বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই শীতে তিনটি কোভিড-ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে চিনে। এতদিন লৌহশৃঙ্খলে থাকা চিনে কোভিডের নতুন উপরূপটি আরও অনেক নাগরিকের মৃত্যুর কারণ হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
১৬২০
হংকংয়ের স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, শহরে আসা কাউকেই পাব বা রেস্টুরেন্টে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এত দিন শহরে আসা ব্যক্তিরা ৩ দিন নিভৃতবাসে থাকলে তবে পাব বা রেস্টুরেন্টে যেতে পারতেন।
১৭২০
চিনে কোভিডের এই বাড়বাড়ন্তে চিন্তিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশও। ২০২০ সালে চিনের উহান শহর থেকেই সারা বিশ্বে কোভিড ছড়িয়ে পড়েছিল বলে মনে করেন কেউ কেউ। যদিও এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
১৮২০
এ বার আগে থেকেই সতর্ক হতে চাইছে বিভিন্ন দেশ। প্রতিবেশী ভারতও কোভিড নিয়ে একাধিক বৈঠক করে ফেলেছে। ভিড়ে মাস্ক পরার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৯২০
দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয় কোভিড পরীক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাপ্ত নমুনার ভিত্তিতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খেয়াল রাখা হচ্ছে চিন থেকে কোভিডের নতুন কোনও উপরূপ জনসমষ্টির মধ্য ছড়িয়ে পড়ছে কি না।
২০২০
দেশবাসীকে মাস্ক পরার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার করোনা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মাস্ক পরার বার্তা দিয়েছেন তিনি।